ছাত্র-মৃত্যুতে ২৫ লক্ষের ক্ষতিপূরণ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে জলে ডুবে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। তাদের নির্দেশ, ৬০ দিনের মধ্যে ওই টাকা মৃতের বাবার হাতে তুলে দিতে হবে। সময়ে টাকা না মেটালে মাসে ৮% হারে সুদ দিতে হবে।

Advertisement

অনুপ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৯
Share:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে জলে ডুবে এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ২৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিল রাজ্য ক্রেতা সুরক্ষা আদালত। তাদের নির্দেশ, ৬০ দিনের মধ্যে ওই টাকা মৃতের বাবার হাতে তুলে দিতে হবে। সময়ে টাকা না মেটালে মাসে ৮% হারে সুদ দিতে হবে। ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে জানান, রাজ্যে কিছু বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যথাযথ পরিকাঠামো তৈরি না করেই মোটা টাকা নিয়ে নানা ধরনের কোর্স চালু করছে। যেখানে পড়াশুনো করতে গিয়ে ছাত্রেরা ঠকছে। দফতরে এমন অনেক অভিযোগ জমা পড়ছে। কিন্তু এ সব ছাপিয়ে গিয়েছে হলদিয়ার ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ঘটনা।

Advertisement

কী সেই ঘটনা?

দফতর সূত্রের খবর, বছর একুশের শিভম রাজ বিহারের চম্পারনের বাসিন্দা। ২০১০ সালে হলদিয়ার ‘ইন্সটিটিউট অফ মেরিটাইম স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ’ সংস্থায় নটিক্যাল সায়েন্সের সাম্মানিক শাখায় ভর্তি হয়েছিলেন শিবম। ভর্তির সময় প্রথম সেমেস্টারের জন্য তাঁকে দিতে হয়েছিল ১ লক্ষ ২ হাজার টাকা। দ্বিতীয় সেমেস্টারে আরও ১ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। ওই সেমেস্টারে সাঁতার কাটার কোর্স ছিল। ছাত্রের বাবা রাজেশ্বর প্রসাদের অভিযোগ, ছেলে যে সাঁতার জানত না, তা সে জানিয়েছিল সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে। তা সত্ত্বেও জোর করে তাকে জলে নামানো হয়। দিনটা ছিল ২০১১ সালের ৭ মে। ছেলেকে ৪ ফুট থেকে ১২ ফুট গভীরতায় যেতে বাধ্য করা হয়। সেখানে জলে হাবুডবু খেতে থাকে শিভম। তার পর এক সময় ডুবে যায় সে। যদিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবি, প্রশিক্ষকের কথা না শুনে স্বেচ্ছায় গভীর জলে চলে যাওয়াতেই ওই বিপত্তি ঘটেছে।

Advertisement

রাজেশ্বরবাবু অবশ্য ওই দাবি মানতে নারাজ।। ক্রেতাসুরক্ষা আদালতে তিনি বলেছেন, ‘‘ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হয়, ‘কাম সুন’। হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই মারা যায় শিভম।’’ ক্রেতাসুরক্ষা আদালতও তাদের রায়ে জানিয়েছে, এমন একটি কোর্সের প্রধান শর্ত ছিল, সাঁতার জানতে হবে। তা সত্ত্বেও ভর্তির সময় তা দেখা হয়নি কেন?

ওই ঘটনার পরেই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে হলদিয়া থানায় এফআইআর দায়ের করেন রাজেশ্বরবাবু। তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষক-সহ প্রতিষ্ঠানের চার জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় পুলিশ। মামলা ওঠে হলদিয়া এবং আলিপুর আদালতে। ২০১৩ সালে ৮৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে ক্রেতাসুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন রাজেশ্বরবাবু। গত মঙ্গলবার আদালতের সদস্য সমরেশ প্রসাদ চৌধুরী জানিয়ে দেন,

কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতেই মৃত্যু হয়েছে ওই ছাত্রের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন