Schools

পড়ুয়াদের পাওনা আজ শংসাপত্রও, প্রশ্ন টাকার

শিক্ষক শিবিরের একাংশ জানান, বেসরকারি স্কুলের অনুকরণে এমন উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন। কিন্তু এই উদ্যোগ সফল করার জন্য প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়নি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:১২
Share:

ছাত্রছাত্রীদের সামনে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কথা তুলে ধরার মতো নানান কাজে ব্যস্ত থাকতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। প্রতীকী ছবি।

শুধু ‘বুক ডে’ বা বই দিবস নয়, সঙ্গে ‘স্টুডেন্ট উইক’ বা শিক্ষার্থী সপ্তাহ। এবং আজ, সোমবার বই দিবসে শুধু বই-ই নয়, সেই সঙ্গে প্রত্যেক পড়ুয়ার বাড়তি পাওনা পরের শ্রেণিতে ওঠার ‘গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট’। তার পাশাপাশি শিক্ষার্থী সপ্তাহে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান থেকে শুরু করে রয়েছে নানা কর্মসূচি। বিভিন্ন শ্রেণির পড়ুয়াদের ‘হাউস’ তৈরি, অভিভাবকদের সঙ্গে কথোপকথন, ছাত্রছাত্রীদের সামনে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের কথা তুলে ধরার মতো নানান কাজে ব্যস্ত থাকতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।

Advertisement

শিক্ষক শিবিরের একাংশ জানান, বেসরকারি স্কুলের অনুকরণে এমন উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন। কিন্তু এই উদ্যোগ সফল করার জন্য প্রস্তুতির যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়নি। এই উদ্যোগ সফল করতে যে-তহবিল লাগে, তা-ও পর্যাপ্ত নয় বলে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকার অভিযোগ।

উত্তর কলকাতার এলাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, রবিবার, ছুটির দিনেও বাড়িতে বসে নিজের কম্পিউটারে বাংলা শিক্ষা পোর্টাল থেকে স্কুলের পড়ুয়াদের গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করেছেন। ওই প্রধান শিক্ষক বলেন, “বছরের শেষে কয়েক দিন ছুটি ছিল। সোমবার স্কুল খুলেই এই সার্টিফিকেট দিতে হবে সব পড়ুয়াকে। সময় নেই। তাই বাড়িতে বসেই কাজ করছি।” অন্য একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, “এত প্রিন্ট-আউটের খরচ বহন করার ক্ষমতা স্কুলের নেই। তাই আপাতত কিছু পড়ুয়াকে ডাউনলোড করে হার্ড কপি দিয়ে দেব। বাকিদের সফট কপি দেওয়া হবে হোয়াটসঅ্যাপে।”

Advertisement

এই সেই শংসাপত্র।

শিক্ষার্থী সপ্তাহের যাবতীয় খরচ ‘কম্পোজ়িট গ্র্যান্ট’ থেকে চালাতে বলেছে শিক্ষা দফতর। অল পোস্ট গ্র্যাজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক চন্দন গড়াইয়ের প্রশ্ন, “সারা বছর ধরে স্কুলশিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী বিভিন্ন কর্মসূচি কি এই সামান্য টাকার কম্পোজ়িট গ্ৰ্যান্ট থেকে চালানো সম্ভব? সাত দিনের এই কর্মসূচিতে পড়ুয়াদের পেন, গোলাপফুলের মতো উপহারও দিতে বলা হয়েছে।”

পূর্ব মেদিনীপুরের একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তথা বঙ্গীয় প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ হান্ডা জানান, প্রাথমিক স্কুলে কম্পিউটার না-থাকায় এত দিন শিক্ষক-শিক্ষিকারা সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে মার্কশিট ডাউনলোড করছিলেন। এখন তাঁদের সেখানে গিয়েই গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে হচ্ছে। আনন্দ বলেন, “বলা হয়েছে, গ্র্যাজুয়েশন সার্টিফিকেট দেবেন ক্লাস টিচার। অনেক প্রাথমিক স্কুলেই শিক্ষক মাত্র দু’জন। তাঁদেরই এক জনকে শংসাপত্র ডাউনলোড থেকে শুরু করে সব কাজ করতে হচ্ছে।” কলেজিয়াম অব অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার্স অ্যান্ড অ্যাসিস্ট্যান্ট হেডমিস্ট্রেসেসের সম্পাদক সৌদীপ্ত দাস বলেন, “স্কুলের শিক্ষক নিয়োগ করে এবং স্কুলের পরিকাঠামোর উন্নতি ঘটিয়ে এই ধরনের কর্মসূচি নিলে সেটা অনেক বেশি সফল হতে পারে।”

এ দিকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানাচ্ছেন, স্কুলে পাঠ্যবই চলে এসেছে। এ গিয়েছে ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশে পাঠানো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছা বার্তাও। আজ যারা স্কুল থেকে পাঠ্যপুস্তক নেবে, তারা সেই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা বার্তাওসংগ্রহ করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন