Government Allowance

Government Allowance: মিলছে শুধু অর্ধেক বরাদ্দ, অথচ খরচ বেড়েছে অনেক, বহু স্কুল সমস্যায়

উপরন্তু করোনার জেরে স্কুলে জীবাণুনাশ-সহ নানা খাতে খরচ বেড়েছে অনেক। পিন্টুবাবু বলেন, “আগামী শিক্ষাবর্ষে কম্পোজিট গ্র্যান্টে বরাদ্দ পুরো অর্থ না-পেলে স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যা দেখা দেবে।”

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২২ ০৬:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

নিয়ম অনুযায়ী ফি-বছর যত টাকা পাওয়ার কথা, চলতি অর্থবর্ষে বিভিন্ন স্কুল পেয়েছে তার অর্ধেক। অথচ করোনার জেরে নিত্য জীবাণুমুক্তি-সহ নানান কাজ যেমন বেড়েছে, তার জন্য বেড়েছে অর্থের প্রয়োজনও। অথচ স্কুলের দৈনন্দিন কাজ পরিচালনার জন্য শিক্ষা দফতর যে-অর্থ স্কুলকে দেয়, সেই কম্পোজিট গ্র্যান্টের টাকা স্কুল পুরো পাচ্ছে না বলে অভিযোগ প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের।

Advertisement

স্কুলপ্রধানেরা জানান, অতিমারির জন্য প্রায় দু’বছর স্কুল বন্ধ থাকলেও স্কুল পরিচালনার ক্ষেত্রে তাঁদের খরচ কিছুমাত্র কমেনি, বরং বেশ কিছু ক্ষেত্রে তা বেড়ে গিয়েছে। কম্পোজিট গ্র্যান্টের টাকা তাই কোনও ভাবেই কমানো যায় না। আবার কিছু প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকার অভিযোগ, ২০২১-২২ আর্থিক বছরে কম্পোজিট গ্র্যান্টের যত টাকা পাওয়ার কথা ছিল, মিলেছে তার অর্ধেক। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারাও এই অভিযোগ করছেন।

উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের কিছু স্কুলের প্রধান শিক্ষকেরা জানান, যে-সব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা এক হাজারের বেশি, কম্পোজিট গ্র্যান্টে প্রতি বছর তাদের এক লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা। পাঁচশো থেকে এক হাজার পড়ুয়ার স্কুলের বছরে পাওয়ার কথা ৫০ হাজার টাকা। অভিযোগ, চলতি অর্থবর্ষে (২০২১-২২) এই ধরনের স্কুলে কম্পোজিট গ্র্যান্টে টাকার পরিমাণ অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, গত বছর করোনার জন্য স্কুল বন্ধ থাকলেও ‘অ্যাক্টিভিটি টাস্ক’ বা গৃহপাঠের প্রশ্ন ফোটোকপি করা থেকে শুরু করে স্যানিটাইজ়েশন বা জীবাণুনাশ-সহ অন্যান্য খরচ বেড়ে গিয়েছে। এখনও স্কুল চালাতে হচ্ছে করোনার স্বাস্থ্যবিধি মেনেই।

Advertisement

দক্ষিণ চাতরা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কৃষ্ণাংশু মিশ্র জানান, তাঁর স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ১৮০০। তাঁদের বছরে এক লক্ষ টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু পেয়েছেন তার অর্ধেক। কৃষ্ণাংশুবাবু জানান, প্রতি মাসে গৃহপাঠের প্রশ্ন ফোটোকপি করা, জীবাণুমুক্তি তো রয়েছেই। এ ছাড়াও স্কুলে একটি শিক্ষা সংক্রান্ত সরকারি অনুষ্ঠানে ২৮টি ফ্লেক্স বানাতে হয়েছে তাঁদের।

ওই প্রধান শিক্ষক বলেন, “শিক্ষা দফতর থেকে কোনও নির্দেশ এলেই বলে দেওয়া হয়, কম্পোজিট গ্র্যান্ট থেকে টাকা খরচ করুন।” বেশ কিছু শিক্ষক-শিক্ষিকা জানাচ্ছেন, স্কুলে ভর্তি বাবদ পড়ুয়া-পিছু ২৪০ টাকা পাওয়া যায়। স্কুল পরিচালনের ক্ষেত্রে সেই টাকাও যথেষ্ট নয়। অনেক পড়ুয়ার সেই টাকা দেওয়ারও সামর্থ্য থাকে না। কিন্তু টাকা দিতে অপারগ হলেও কোনও ছেলে বা মেয়ে যদি স্কুলে ভর্তি হতে চায়, তাকে ভর্তি নিতেই হয়। এবং সেই পড়ুয়ার ভর্তির টাকা দিতে হয় স্কুলের তহবিল থেকে।

একটি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক তথা ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেন্ড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সভাপতি পিন্টু পাড়ুই জানান, যে-সব স্কুলে একশো জনের মতো পড়ুয়া আছে, কম্পোজিট গ্র্যান্ট বাবদ তাদের সেখানে ২৫ হাজার টাকা পাওয়ার কথা। কিন্তু চলতি অর্থিক বছরে মিলেছে সেই টাকার অর্ধেক। স্কুল বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের খরচ ও চক-ডাস্টার কেনার খরচ শুধু কিছুটা বেঁচেছে ছিকই। কিন্তু বাকি সব খরচ প্রায় একই রয়েছে।

উপরন্তু করোনার জেরে স্কুলে জীবাণুনাশ-সহ নানা খাতে খরচ বেড়েছে অনেক। পিন্টুবাবু বলেন, “আগামী শিক্ষাবর্ষে কম্পোজিট গ্র্যান্টে বরাদ্দ পুরো অর্থ না-পেলে স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যা দেখা দেবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন