লড়াই: ইসলামপুর বাইপাসের কা়জকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ। ছবি: অভিজিৎ পাল
বর্তমান বাজারদরে ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে বেশ কয়েক দিন ধরেই চাষিরা বাধা দিচ্ছিলেন বাইপাসের কাজে। এ দিন সেই নিয়েই গোয়ালপোখরের বিধায়ক তথা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ইমরান আলি রমজের নেতৃত্বে পুলিশের সঙ্গে তুমুল সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন স্থানীয় মানুষেরা। রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থানার শিয়ালতোড় মৌজা। সংঘর্ষে জখম হন ইসলামপুর থানার আইসি রাজেন ছেত্রী-সহ দু’জন পুলিশ। আটক করা হয় বিধায়ককে।
আন্দোলনের ধাক্কা কলকাতাতেও পৌঁছয়। ইমরানকে কেন আটক করা হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ অবরোধ করেন দলের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায় ও ফব কর্মীরা। তাঁদেরও গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। চাষিদের উপরে পুলিশের লাঠিচার্জের নিন্দা করেছে সব মহল।
এ দিন সকালে শ’খানেক চাষি তাঁদের পরিবারের লোকজন নিয়ে বাইপাসের জমিতে জড়ো হন। তাঁদের দাবি, ২০০৪ সালে অধিগৃহীত হলেও যে হেতু এখন ক্ষতিপূরণ বিলি হচ্ছে, তাই বর্তমান হারেই টাকা দিতে হবে। জমিদাতাদের পরিবারের এক জন যাতে সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার পান, সে ব্যবস্থাও করতে হবে। কিন্তু তাঁদের দাবিতে আমল না দিয়ে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কাজে হাত লাগায় প্রশাসন। তখনই গোলমাল শুরু হয়। চাষিরা বাধা দেওয়ায় পুলিশ পুরুষ-মহিলা নির্বিশেষে নির্বিচারে লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ। চাষি ও তাঁদের বাড়ির লোকেরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়েন। পরে ইসলামপুরের এসডিপিও কুমারভূষণ সিংহ বলেন, ‘‘সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও পুলিশের উপর হামলা করার দায়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়নি।’’
আন্দোলনকারীদের পাশে আছেন তৃণমূলত্যাগী প্রাক্তন মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরীও। লাঠিচার্জের ঘটনার নিন্দা করে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পেয়েই এই লাঠিচার্জ হয়েছে। তিনি সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে কৃষকদরদী ছিলেন। আর এখন তাঁর সরকার চাষিদের উপরে অত্যাচার করছে।’’ করিমের সুরেই সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘কৃষক স্বার্থের কথা বলে যারা ক্ষমতায় এসেছিল, এখন তারাই কৃষকদের অত্যাচার করছে।’’
উত্তর দিনাজপুর জেলা তৃণমূল সভাপতি অমল আচার্যের দাবি, ‘‘এর আগে পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জট খুলতে বৈঠক করেছেন। কিন্তু ফব, সিপিএম-সহ কয়েকটি বিরোধী দল নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে উন্নয়নবিরোধী আন্দোলন করছে।’’