উত্তপ্ত: খুকুরি মিছিল চলাকালীন পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়লেন মোর্চা কর্মী-সমর্থকেরা। শনিবার সুকনায়। ছবি: পিটিআই।
বিচ্ছিন্ন অশান্তি জারি থাকলেও তাত অনেকটাই কমেছে পাহাড়ে। কিন্তু মোর্চার খুকুরি মিছিল ঘিরে এ বার উত্তপ্ত সমতল।
শনিবার সকাল থেকে দফায় দফায় অগ্নিগর্ভ হয় সুকনা ও লাগোয়া এলাকা। গোড়ায় ধস্তাধস্তি, ব্যারিকেড ভেঙে নদীতে ফেলা হলেও পরে পুলিশকে তাক করে ঢিল, গুলতি থেকে লোহার টুকরো, তির, পেট্রোল বোমা ছোড়া হয় বলে অভিযোগ। দুই আধিকারিক-সহ জখম হন কিছু পুলিশ কর্মী। পুলিশও পাল্টা কাঁদানে গ্যাস, রবার বুলেট ছোড়ে। মোর্চার দাবি, তাদের ২০ জন কর্মী জখম হন। এক জনের মাথায় গুলি লেগেছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ নয় শান্তি চাইছে সুকনা
এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ সুকনা মোড় থেকে মোর্চার খুকুরি মিছিল শুরু হয়। শিলিগুড়ির দিকে মিছিল এগোতেই বাধা দেয় পুলিশ। শুরু হয় ধস্তাধস্তি। মোর্চা সমর্থকরা ইট-পাথর নিয়ে পুলিশের উপর হামলা করে বলে অভিযোগ। খুকুরির কোপ দেওয়া হয় প্রধানগরের আইসি সঞ্জয় ঘোষের হাতে। ভাঙচুর হয় পুলিশের জিপ। এর পরে পুলিশ লাঠি চালিয়ে হটায় তাদের। ফাটানো হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। কিন্তু তার পরেও চলে অশান্তি। বিকেল নাগাদ পেট্রোল বোমা পড়ে। মোর্চা সমর্থকদের ছোড়া ইটের ঘায়ে মাথা ফাটে শিলিগুড়ির সহকারী পুলিশ কমিশনার প্রণব শিকদারের।
মোর্চার অভিযোগ, পুলিশের গুলিতে জখম হয়েছেন তাঁদের সমর্থক অজয় ছেত্রী। পুলিশের যদিও দাবি, গুলি চলেনি এ দিন। হাসপাতালের খবর, অজয়ের মাথায় ‘শেল’ লেগেছে। মোর্চার সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ দার্জিলিঙে বলেন, ‘‘পাহাড়ি প্রথা মেনে খুকুরি মিছিল করতে গেলে বাধা পাচ্ছি। এ ভাবে চলতে পারে না। ৮ অগস্ট পর্যন্ত আলোচনায় ডাক পাওয়ার অপেক্ষা করব। না হলে ৯ অগস্ট থেকে সমতলেও আন্দোলন তীব্র হবে।’’ আজ, রবিবার থেকে পাহাড়ে নারী মোর্চার সদস্যরা প্রতিটি বেসরকারি যানবাহন পরীক্ষা করবেন বলে তিনি জানান। গুরুঙ্গের বক্তব্য, ‘‘বন্ধ সত্ত্বেও অনেকে রাতে গাড়ি বা দিনে বাইক নিয়ে বেরোচ্ছেন। জরুরি কাজে বাইক নিয়ে বেরোতে হলেও মোর্চার লিখিত অনুমতি লাগবে।’’
মোর্চা যে সমতলেও অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করবে তা আগেই আঁচ করেছে রাজ্য। সে জন্য তরাই-ডুয়ার্সে বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে। এ দিন সন্ধেয় উত্তরবঙ্গের এডিজি সিদ্ধিনাথ গুপ্ত, দুই সিনিয়র আইপিএস অজয় নন্দা ও জাভেদ শামিম বিশাল বাহিনী নিয়ে গিয়ে তল্লাশি চালান। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার নীরজ সিংহ বলেন, ‘‘আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।’’