যুযুধান: সুকনায় খুকুরি নিয়ে মিছিল মোর্চার। নিয়ন্ত্রণে পুলিশ। শনিবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
‘যুদ্ধ’ নয়, শান্তি চান সুকনার একটি বড় অংশের বাসিন্দারা। শনিবার দুপুর থেকে প্রায় সাত ঘন্টার অগ্নিগর্ভ সুকনার ছবি দেখে আতঙ্কিত বাসিন্দারা দিনের শেষে এমনই বলছেন।
সন্ধের পরে অনেকে মালপত্র, পরিবার নিয়ে এলাকাও ছেড়েছেন। সুকনা মডেল স্কুলের সামনে থেকে সুকনা মোড় অবধি প্রায় ৩০০ মিটার রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। পুলিশের দাবি, সুকনা, শালবাড়ি বা মেথাবাড়ির বাসিন্দাদের তুলনায় পাহাড়ের বিভিন্ন অংশের লোকজন খুকরি নিয়ে আন্দোলনে নামেন। তাতে এলাকায় অশান্ত হতেই চিন্তিত হয়ে পড়েন বাসিন্দারা। স্থানীয় মোর্চা নেতৃত্বের একাংশকে মিছিলের কিছু সময় সামনে দেখা গেলেও পরে আর তাদের দেখা মেলেনি।
বাসিন্দাদের একাংশ জানান, সমতল শিলিগুড়ির সঙ্গে সুকনার নিবিড় সম্পর্ক। প্রতিদিনই আলাদা রাজ্যের দাবিতে মিছিল, মিটিং হচ্ছিল। কোনও গোলমাল হয়নি। পুলিশ কোনও সময় বাধাও দেয় না। কিন্তু যেভাবে লোকজন এসে এলাকাকে অশান্ত করে তুলল, তাতে পরিবেশ পুরোপুরি নষ্ট হওয়ার মুখে। আমরা চাই এলাকা শান্ত হোক। গণতান্ত্রিক পথেই আন্দোলন হোক। বাইরের লোক এসে সুকনাকে ‘খারাপ’ করা মেনে নেওয়া হবে না।
এ দিন কয়েকশো কাঁদানো গ্যাসের শেল ফেটেছে। স্মোক বম্ব, রবার ও প্লাস্টিক বুলেটের আওয়াজে বাতাস ঘনঘন গর্জে উঠেছে। খুকুরি দিয়ে হাতে কোপানো হয়েছে আইসি প্রধানগর সঞ্জয় ঘোষকে, এসিপি (পশ্চিম) প্রণব শিকদারকে ঢিল মেরে মাথায় ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে পুলিশের আহতের সংখ্যা অন্তত ১০। ৫০টির উপর পেট্রোল বোমা, তির পুলিশকে লক্ষ্য করে ছোঁডা হয়েছে। খুুকুরি দিয়ে কোপানো হয়েছে পুলিশের দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ গাড়ি বর্জ্যর চাকা। গাড়ির চাকা জ্বালিয়ে, গাছ ফেলে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক।
এ দিন গভীর রাত পর্যন্ত সুকনার বিভিন্ন অলিগলিতে পুলিশের তল্লাশি চলেছে। মোর্চা নেতৃত্বের দাবি, নিরীহদের হেনস্থা করেছে পুলিশ। দু’টি গাড়ি এবং একাধিক বাড়ি ভাঙচুর হয়েছে। অন্তত ১০ রাউন্ড গুলিও চালিয়েছে পুলিশ। বিকেলের পর অনেকে রাস্তায় বার হন। এক সিভিক পুলিশের কর্মী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে সুস্থ করতে সাহায্যও করেন বাসিন্দারা। পাহাড় থেকে সমতলে ঢোকার দরজা সুকনা, শালবাড়ি। পাহাড়ে আনাজপাতির গাড়ি নিয়মিত এখান থেকে যাচ্ছে। বহু পাহাড়ের বাসিন্দা সুকনায় এসে থাকছেন।
রাতে পুলিশ কমিশনার নীরজ কুমার সিংহ বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীরা পুলিশকে বোমা, আগুন, তির নিয়ে আক্রমণ করেছে। ঢিল ছোঁড়া হয়েছে। ওদের তাড়াতে হয়েছে। শান্তিপ্রিয় এলাকাবাসীর পাশে আমরা আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy