মাস দুয়েক আগে ভয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্স থেকে পিছু হটেছিলেন তাঁরা। এ বার পাকিস্তানের ইসলামাবাদের যৌন সংখ্যালঘু সমাজের প্রতিনিধিরাই সরাসরি ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, মায়ানমারের বন্ধুদের কাছে পরামর্শ চাইলেন।
সায়ন বা সাউথ এশিয়ান ইয়ুথ ক্যুয়ার অ্যাক্টিভিস্টস নেটওয়ার্ক-নামের সম্মিলিত মঞ্চের দ্বিতীয় বৈঠকটি বসেছিল বুধবার। সেখানে ইসলামাবাদ-করাচির সমকামীরা অনেকেই তাঁদের অবস্থাটা সে-দেশের প্রান্তিক জনজাতি গোষ্ঠীর মতোই কোণঠাসা বলে দাবি করলেন। পাকিস্তানে রূপান্তরকামী বা ট্রান্সজেন্ডাররা সদ্য আইনি স্বীকৃতি পেয়েছেন, কিন্তু গে, লেসবিয়ানদের মতো সমকামীদের ন্যূনতম সামাজিক স্বীকৃতি নেই। কী করে পাল্টাতে পারে এই অবস্থাটা? শুনে তখনই কলকাতায় যৌন অধিকার সংক্রান্ত আন্দোলনের সমাজকর্মী বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায়ের পরামর্শ, ‘‘কলকাতায় সমকামীরা এড্স সচেতনতার মতো সামাজিক আন্দোলনের শরিক হয়ে মূলস্রোতের কাছে আসেন! পাকিস্তানেও এটা করা সম্ভব।’’ ঢাকার যৌন সংখ্যালঘুরা বলছিলেন, পদে-পদে জীবনের ঝুঁকির কথা! কাঠমান্ডুর প্রশ্ন, রূপান্তরকামী, হিজড়েদের সামাজিক অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া নিয়ে। দিল্লিতে বসেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে এ দেশের তৃতীয় লিঙ্গের অধিকার-সংক্রান্ত যুগান্তকারী রায়ের এক আবেদনকারীও। নালসা রায়ে কী ভাবে তৃতীয় লিঙ্গভুক্তদের পিছিয়ে-পড়া শ্রেণি বা ওবিসি-র মর্যাদা দেওয়ার কথা বলেছে, তা মনে করিয়ে দেন তিনি।
মায়ানমারের রূপান্তরকামী মেয়েরা আবার বলছিলেন, সে-দেশে লিঙ্গান্তরের অস্ত্রোপচারের ঝক্কি কী ভয়ানক! হাসপাতালে গেলে পুলিশ ধরবে। অগত্যা হাতুড়েরাই ভরসা। চেন্নাইয়ের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্তারা তাঁদের আশ্বাস দিলেন, ‘‘তামিলনাডুতে ওই শল্যচিকিৎসা নিখরচার ও নিরাপদ। এলে সাহায্য করব।’’ এক সঙ্গে চলার এই ডাক কিন্তু এসেছে কলকাতার তরফেই। মুখোমুখি বসার সুযোগ হল বিভিন্ন শহরের আমেরিকান কনস্যুলেটের মাধ্যমে। তবে কলম্বো এ বারও আসতে পারেনি। কলকাতার মার্কিন কনসাল জেনারেল ক্রেগ হল বললেন, ‘‘যন্ত্রণার গল্পগুলো এ ভাবে ভাগ করা গেলেই এগিয়ে চলার রাস্তাটাও শিগগির বেরিয়ে আসবে!’’