প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে প্রায় দু’বছর স্কুল তালাবন্দি থাকায় যে সব পড়ুয়ার লেখাপড়াতেই তালা পড়ে গিয়েছে, তাদের আবার শিক্ষাঙ্গনে ফেরাতে উদ্যোগী হল এসএফআই।
অতিমারি পর্বে দীর্ঘ লকডাউনে অনেক পড়ুয়ার অভিভাবক কাজ হারিয়েছেন। এই অবস্থায় রুজির জন্য অনেক ছাত্রছাত্রীকেই পড়া ছেড়ে ঢুকে পড়তে হয়েছে সামান্য মজুরির কাজে। অনেকে আবার একটু বেশি রোজগারের আশায় অন্য রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে চলে গিয়েছে। ছাত্রীদের একাংশের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। ফলে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস শুরু হলেও অনেক স্কুলেই সব পড়ুয়া ফেরেনি। এই সব স্কুলছুটদের ‘স্কুলে ফেরাও’ আন্দোলন শুরু করেছে এসএফআই।
সূত্রের খবর, এসএফআইয়ের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্ব প্রথম এই আন্দোলনের প্রস্তাব দেন। সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব তাতে সম্মত হলে সিদ্ধান্ত হয়, প্রতিটি জেলায় ‘অ্যান্টি ড্রপ আউট স্কোয়াড’ তৈরি হবে। তারা সমীক্ষার ফর্ম নিয়ে জেলাওয়াড়ি স্কুলছুটদের তথ্য সংগ্রহ করবে। পরে ওই তথ্যপঞ্জি নিয়ে দরবার করা হবে রাজ্য সরকারের কাছে, যাতে তারা স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরানোর ব্যবস্থা করে।
এসএফআইয়ের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক আকাশ কর জানান, করোনা আবহে লেখাপড়া বন্ধ করে কাজে চলে গিয়েছে কি না, গেলে কেন এবং কোথায় গিয়েছে, পরে স্কুলে ফিরবে কি না, যারা স্কুলে ফিরল, তাদের পড়াশোনায় কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না, এই সব প্রশ্ন নিয়ে তৈরি হয়েছে তাঁদের সমীক্ষার ফর্ম। ডিসেম্বর মাস জুড়ে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলবে। তার পর তা নিয়ে ধাপে ধাপে স্থানীয়, মহকুমা, জেলা এবং রাজ্য প্রশাসনের দফতরে অভিযান করা হবে। আকাশের কথায়, “আমরা ছাত্র সংগঠন হিসাবে আমাদের মতো করে তথ্য সংগ্রহ করছি। কিন্তু সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে সার্বিক তথ্য প্রকাশ করতে হবে। তার পর সরকারকেই দায়িত্ব নিয়ে স্কুলছুটদের স্কুলে ফেরাতে হবে।” পাশাপাশি, ওই ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকেও স্কুল ছেড়ে কাজে ঢুকে পড়া ছেলেমেয়েদের জন্য নৈশ বিদ্যালয় এবং বই ব্যাঙ্ক গড়ে তোলা হচ্ছে।
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, “রাজ্যের শাসক দল বিজেপি থেকে ড্রপ আউটদের পুনর্বাসন দিতে আগ্রহী। কিন্তু স্কুল থেকে ড্রপ আউটদের নিয়ে তাদের চিন্তা নেই। শিক্ষামন্ত্রীর মন পড়ে আছে ত্রিপুরায়, দেহ পড়ে আছে এ রাজ্যে। আমাদের স্থানীয় এবং জেলা স্তরের আন্দোলনে সরকারের ঘুম না ভাঙলে আমরা স্কুলছুটদের তথ্য নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বসে পড়ব।”