পাচার নিয়ে দায় এড়ালেন শশী

শিশু বিক্রির ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় যখন তোলপাড় চলছে গোটা রাজ্যে, তখন দায় এড়ালেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা। মঙ্গলবার কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘পূর্বাশা হোম আমাদের দফতরের অধীনে পড়ে না। ফলে ওখানে কে বা কারা কত বাচ্চা এনে রাখছে, তা আমার দফতরের জানার কথা নয়।’’

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ৩০ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:১১
Share:

সাংবাদিক বৈঠকে শশী পাঁজা। মঙ্গলবার প্রেস ক্লাবে নিজস্ব চিত্র।

শিশু বিক্রির ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় যখন তোলপাড় চলছে গোটা রাজ্যে, তখন দায় এড়ালেন সংশ্লিষ্ট দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা।

Advertisement

মঙ্গলবার কলকাতায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে নারী, শিশু ও সমাজকল্যাণ দফতরের মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, ‘‘পূর্বাশা হোম আমাদের দফতরের অধীনে পড়ে না। ফলে ওখানে কে বা কারা কত বাচ্চা এনে রাখছে, তা আমার দফতরের জানার কথা নয়।’’

ঠাকুরপুকুরের এই হোম থেকে সিআইডি সম্প্রতি উদ্ধার করেছে দশটি শিশুকে। এর মধ্যে একটি শিশু অযত্নে সেরিব্রাল পালসিতে আক্রান্ত। একজনের থ্যালাসেমিয়া ধরা পড়েছে। অন্যেরা ভুগছে অপুষ্টিতে। একটি শিশুকে ওষুধ প্রয়োগ করে আকারে বড় করার চেষ্টা চলছিল বলে মনে করছেন শিশু বিশেষজ্ঞেরা। পাচারের জন্য ‘পূর্বাশা’ হোমে শিশু রেখে যাওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছে বিমল অধিকারী। শশীদেবী এ দিন বিমল সম্পর্কে বলেন, ‘‘উনি যে ওখানে বাচ্চা এনে রাখতেন এবং পাচার করতেন— সে খবর আমাদের কাছে ছিল না।’’

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ফলতার দোস্তপুরের বিমলের ‘জোকা মিলেনিয়াম ওল্ড এজ হোম অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে’ সরকারের পক্ষ থেকেই কুড়িটি বাচ্চাকে রাখা হয়েছিল। বিমল গ্রেফতার হওয়ার পরে বাচ্চাগুলিকে তড়িঘড়ি সরকারি হোমে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

দফতরের একাধিক আধিকারিক জানান, বিমলের হাবভাব যথেষ্ট সন্দেহজনক ছিল। সরকারি আধিকারিকেরা দোস্তপুরের হোম পরিদর্শনে গেলে সে নথিপত্রও সরিয়ে ফেলত। এই কথা দফতরের কর্তাদেরও জানিয়েছিলেন ওই আধিকারিকেরা। কিন্তু তারপরেও ‘অনাথ’ বাচ্চাদের বিমলের হেফাজতে রাখার অনুমতি কেন দেওয়া হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।

এ ব্যাপারে মন্ত্রীর সাফাই, বিমল অন্য কোনও হোম থেকে বাচ্চা এনে বিক্রি করলে, তা জানার কথা নয় তাঁর দফতরের। মন্ত্রীর আরও দাবি, শিশু কল্যাণ সমিতির নির্দেশেই ওই বাচ্চাগুলি দোস্তপুরের হোমে ছিল।

শশীদেবী যা-ই দাবি করুন না কেন, তাঁর দফতর এত দিন জেগে ঘুমিয়ে ছিল বলে অভিযোগ তুলছেন বিরোধীরা। শশীদেবীর পদত্যাগ দাবি করে আজ, বুধবার সল্টলেকে তাঁর দফতরের সামনে ধর্নায় বসবে বলে জানিয়েছে বিজেপি। শিশু পাচারে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার ‘পূর্বাশা’র সামনে অবস্থান-বিক্ষোভ করে তারা। দোষীদের শাস্তির দাবিতে সুবোধ মল্লিক স্কোয়্যার থেকে বুধবার লালবাজার অভিযান করবে সিপিএমের শাখা সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি।’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন