Shibthakur Mondal

শো-কজ়ের চিঠি পাননি শিবঠাকুর

বিরোধীদের দাবি, অনুব্রতের দিল্লি যাওয়া পিছিয়ে দিতে যে সাজানো মামলা করা হয়েছিল, এ থেকে তা আরও স্পষ্ট হচ্ছে।

Advertisement

দয়াল সেনগুপ্ত 

দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৮
Share:

শিবঠাকুর মণ্ডল। ফাইল চিত্র।

তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার মামলা করেছিলেন শিবঠাকুর মণ্ডল। তার পরই ‘শৃঙ্খলাভঙ্গে’র শাস্তি হিসেবে তাঁকে শো-কজ় করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল। ২৩ ডিসেম্বর তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে সেই সিদ্ধান্তের পরে ওই মামলায় অনুব্রত মণ্ডল (কেষ্ট) জামিন পেয়ে গিয়েছেন। কিন্তু, এক সপ্তাহ পেরোলেও শো-কজ়ের নোটিস পাননি শিবঠাকুর! বিরোধীদের দাবি, অনুব্রতের দিল্লি যাওয়া পিছিয়ে দিতে যে সাজানো মামলা করা হয়েছিল, এ থেকে তা আরও স্পষ্ট হচ্ছে।

Advertisement

তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘বেশিরভাগ সময় শিবঠাকুরের মোবাইল বন্ধ। তিনি কোথায় তা জানা নেই। তাই হয়তো নোটিস পাননি।’’ শিবঠাকুর অবশ্য দাবি করছেন, তিনি বাড়িতেই আছেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিচার চেয়ে মামলা করেছিলাম। আদালতে ভরসা রেখেছি। এখনও দলের তরফে কোনও নোটিস পাইনি। পেলে উত্তর দেব।’’

এই মামলাতেই শনিবার দুবরাজপুর আদালতে গোপন জবানবন্দি দেওয়ার জন্য পুলিশ হাজির করিয়েছিল শিবঠাকুরের মা সুভদ্রা মণ্ডল ও বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অর্জুন সাহাকে। শিবঠাকুরের গোপন জবানবন্দি আগেই রেকর্ড হয়েছে।

Advertisement

গত ১৯ তারিখ গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রতকে দিল্লি এনে জেরা করতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটকে (ইডি) অনুমতি দেয় দিল্লির একটি আদালত। তার পরই অনুব্রতের বিরুদ্ধে দুবরাজপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধান শিবঠাকুর। পরের দিনই আদালতে হাজির করিয়ে কেষ্টকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দেড় বছরের পুরনো ঘটনার প্রসঙ্গ তুলে দায়ের হওয়া অভিযোগের বয়ান নিয়েও বহু প্রশ্ন ওঠে। শিবঠাকুর দাবি করেছিলেন, ভয়ে তিনি এতদিন অভিযোগ করেননি।

এর মধ্যেই ২৫ ডিসেম্বর শিবঠাকুর লক্ষাধিক টাকা দিয়ে নতুন বাইক কেনায় বিরোধীরা অনেকে প্রশ্ন তোলেন, হঠাৎ তাঁর এমন বৈভবের রহস্য কী? শিবঠাকুরের দাবি, ‘‘পুরনো মোটরবাইকটি জীর্ণ হয়ে গিয়েছিল। ঋণ নিয়ে নতুন মোটরবাইক কিনেছি।’’ ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁর যুক্তি, ‘‘আমার স্ত্রী শিক্ষকতা করেন। কৃষিজমি, বাড়ি আছে। কীর্তনও করি। বাইক না কেনার কী আছে!’’

দুবরাজপুরের বিজেপি বিধায়ক অনুপ সাহা অবশ্য বলছেন, ‘‘অনুব্রত মণ্ডলের তিহাড় যাত্রা আটকাতে পুলিশ-প্রশাসন ও তৃণমূলের সাজানো নাটক এটা। শিবঠাকুর মণ্ডল শিখণ্ডী মাত্র।’’ একই সুরে সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘শিবঠাকুরের অভিযোগ নিয়ে চোখে ধুলো দেওয়া হচ্ছে। জেলার একজন মানুষও বিশ্বাস করেন না, এর সত্যতা আছে।’’

ইতিমধ্যে অনুব্রতের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করার অভিযোগ তুলে ঘটনার সিবিআই তদন্ত দাবি করে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। দলের শো-কজ় নোটিস না পেলেও সেই মামলার নোটিস পাওয়ার কথা মেনেছেন শিবঠাকুর। শাসক দলের এক নেতা বলছেন, ‘‘আদালত মামলাটি গ্রহণ করে কি না, সেটাই দেখার।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন