আদালতের পথে: জমির কারবারে ধৃত হিম্মত সিংহ চৌহান। নিজস্ব চিত্র
জমির কারবারে ধৃত তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ সিংহ চৌহান ওরফে হিম্মত সিংহকে নিয়ে শিলিগুড়িতে চলল শনিবার রাত থেকে উত্তেজনা। সরকারি জমি দখলের অভিযোগে গ্রেফতার হিম্মতকে রবিবার শিলিগুড়ি আদালতে তোলা হয়েছিল। তার ৮ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর করেন বিচারক। শনিবার রাতে হিম্মত সিংকে গ্রেফতার করে প্রধাননগর থানা। তারপর রাতে থানায় বিক্ষোভ দেখান তার শতাধিক অনুগামী। আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে শুরু করলে তাকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় এনজেপি থানায়। কিন্তু তার পিছনে পিছনে সেখানেও গিয়ে ঝামেলা শুরু করে তার অনুগামীরা। তবে পুলিশ প্রথম থেকেই কাউকে সেখানে টিকতে দেয়নি। এনজেপি থানা থেকে দেখা মাত্র তাড়াতে শুরু করে। পুলিশের তাড়া খেয়ে যেদিক সেদিক পালাতে শুরু করে তার অনুগামীরা। এদিন সকালে তাদের ফেলে যাওয়া এ রকম ৬টি বাইক এবং ২টি গাড়ি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, গাড়ির মালিকদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা ছিল, রবিবার সকালে আদালতে তোলা হলে ঝামেলা হতে পারে। তাই এদিন নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছিল শিলিগুড়ি আদালত চত্বর। হিম্মত সিংহের পরিবার এবং প্রতিবেশীরা এসে জমা হতে শুরু করতেই তাদের একটি জায়গায় ক্লোজ করে দেওয়া হয়। ঝামেলা করতে পারে এই আশঙ্কায় এদিন তাদের সবাইকে আলাদতকক্ষের মুখ পর্যন্ত যেতে দেয়নি পুলিশ। বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ হিম্মতকে কড়া পাহাড়ায় আনা হয় এসিজেএম আদালত চত্বরে। থানায় থেকে আদালত এবং কোর্ট লকআপে তোলার সময় হিম্মত বলেন, ‘‘আমাকে ফাঁসানো হয়েছে। আদালতে সবার নাম বলব।’’ আদালতে ভারপ্রাপ্ত সরকারি আইনজীবী সৌমিত্র সিংহ সরকার বলেন, ‘‘চম্পাসারিতে সরকারি জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ হিম্মতের জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে। তাই তাকে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত দেওয়া হোক।’’ যদিও হিম্মতের আইনজীবী সঞ্জয় সাহা দাবি করেন, পূর্ত দফতরের দায়ের করা জমি দখলের অভিযোগে সরাসরি হিম্মতের নাম নেই। তিনি অসুস্থও। তাই তাঁকে জামিন দেওয়া হোক।
ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম কিংশুক সাধুখাঁ হিম্মতের ৮ দিনের পুলিশ হেফাজত মঞ্জুর করেন। আদালতের বাইরে হিম্মতের আইনজীবী সঞ্জয়বাবু বলেন, ‘‘কলকাতা হাইকোর্টে একটি আবেদনে বিশ্বনাথ সিংহ গত মে মাসে দাবি করেছেন, জমিটি ১৯৬৫ সাল থেকেই তার বাবা ভূচাল সিংহের নামে রয়েছে।’’ সরকারি সূত্রে যদিও দাবি, জমিটি ১৯৬৮ সালে ভূচাল সিংহের কাছ থেকে কিনে নেয় সরকার।