বাজেয়াপ্ত হওয়া সোনা। নিজস্ব চিত্র
সহজে রোজগারের লোভ দেখিয়ে পড়ুয়াদের ব্যবহার করা হচ্ছে সোনা পাচারের কাজে। কয়েক দিন আগে এক কলেজপড়ুয়াকে হাতেনাতে গ্রেফতারের পরে এমনই তথ্য উঠে এসেছে ডিরেক্টরেট অব রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্সের (ডিআরআই) তদন্তকারীদের সামনে।
ডিআরআই সূত্রের খবর, সোনা পাচারের খবর পেয়ে গত ২২ মে বুধবার ভোরে তদন্তকারীদের দল বসিরহাটের ইতিন্ডা ঘাটে যায়। দুপুর ১২টা নাগাদ এক কিশোরকে পিঠে ব্যাগ নিয়ে যেতে দেখে তাঁদের সন্দেহ হয়। ওই কিশোরকে আটকে জেরা শুরু করেন ডিআরআই-এর তদন্তকারীরা। এর পরে তল্লাশি চালিয়ে ওই কিশোরের ব্যাগের ভিতরে লুকনো কুঠরি থেকে ১১টি মুখ বন্ধ করা প্লাস্টিক উদ্ধার করা হয়। ওই প্লাস্টিকগুলিতে মোট ১১২টি সোনার বিস্কুট ছিল। ১২ কেজি ৮৬০ গ্রাম ওজনের ওই সোনার বাজার দর প্রায় ৪ কোটি ২০ লক্ষ টাকা।
ওই কিশোরকে গ্রেফতার করে কলকাতায় নিয়ে এসে দফায় দফায় জেরা শুরু করেন তদন্তকারীরা। তাতেই বসিরহাটের হরিশপুরের একটি বাড়ির খোঁজ মেলে। পাশাপাশি ওই কিশোর জানায়, নির্দিষ্ট লোকের হাতে সোনা পৌঁছে দিয়ে তার টিউশন পড়তে যাওয়ার কথা ছিল। গত ২৪ মে সেই বাড়িতে হানা দেন ডিআরআই-এর তদন্তকারীরা। বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে ৪৮টি সোনার বিস্কুট উদ্ধার হয়। গ্রেফতার করা হয় এক ব্যক্তিকেও। ৪ কেজি ৮০০ গ্রাম ওই সোনার বাজার দর ১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা বলে ডিআরআই সূত্রে খবর। তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, সোনার বিস্কুটগুলি বাংলাদেশ থেকে এ দেশে ঢুকলেও সেগুলি সিঙ্গাপুর, সুইৎজারল্যান্ড, দুবাইতে তৈরি হয়েছে। ইতিন্ডা ঘাট থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোর নাবালক হওয়ায় তাকে জুভেনাইল কোর্টে হাজির করানো হয়।
ডিআরআই সূত্রে খবর, মূলত পড়ুয়াদের পাচারের কাজে ব্যবহার করার কারণ হল, পিঠে ব্যাগ নিয়ে যাতায়াত করলে বিশেষ বোঝা যায় না সে কোথায় যাচ্ছে। অনেকেই ভাববেন, কলেজ বা স্কুলেই যাচ্ছে সে ছেলেটি। এই ফাঁদে পা দিয়ে পড়ুয়াদের একাংশও সহজে মোটা টাকা রোজগারের লোভে পড়ে পাচারের কাজে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।