বারবার ভুল ঘোষণা, ধুন্ধুমার সোদপুর স্টেশনে

সমস্যাটা ট্রেন আসার ভুল ঘোষণা নিয়ে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ডাউন রানাঘাট-শিয়ালদহ লোকাল আসছে বলে ঘোষণা হয়। স্টেশনে ঢুকে প্রথমে গতি কমিয়েও থামেনি ট্রেন। শুরু হয় হইচই। যাত্রীদের একাংশ অবরোধ শুরু করেন। কন্ট্রোল রুমে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালান অনেকে। ইটের ঘায়ে মাথা ফাটে স্টেশন ম্যানেজারের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৫:০৬
Share:

তাণ্ডব: সোদপুর স্টেশনে ভাঙচুরের পর। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

বারবার একই ভুল। প্রতি বারই যার জেরে হুলস্থুল বাধছে সোদপুর স্টেশনে।

Advertisement

সমস্যাটা ট্রেন আসার ভুল ঘোষণা নিয়ে। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ ডাউন রানাঘাট-শিয়ালদহ লোকাল আসছে বলে ঘোষণা হয়। স্টেশনে ঢুকে প্রথমে গতি কমিয়েও থামেনি ট্রেন। শুরু হয় হইচই। যাত্রীদের একাংশ অবরোধ শুরু করেন। কন্ট্রোল রুমে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালান অনেকে। ইটের ঘায়ে মাথা ফাটে স্টেশন ম্যানেজারের। আগুন লাগানোর চেষ্টা হয় কামরায়। দীর্ঘক্ষণ আটকে পড়ে ট্রেন। শেষে আটকে পড়া ট্রেনের যাত্রীরা তাড়া করে অবরোধকারীদের হটিয়ে দেন।

ততক্ষণে কেটে গিয়েছে ঘণ্টা তিনেক। শিয়ালদহ মেন লাইনে ট্রেন চলাচল বিপর্যস্ত। বাতিল হয় বহু ট্রেন। তিনটি আপ এবং ২১টি ডাউন ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকে পড়ে। একটি এক্সপ্রেস ও তিনটি প্যাসেঞ্জার ট্রেনও দাঁড়িয়ে পড়ে। নাকাল হন হাজার হাজার মানুষ।

Advertisement

বারবার কেন ভুল ঘোষণা? তদন্ত করে তা দেখা হচ্ছে বলে দায় সেরেছেন রেল কর্তারা।

কী ঘটেছিল এ দিন?

রেলের সিগন্যালিং ব্যবস্থার মেরামতির জন্য শুক্রবার থেকেই প্রচুর ট্রেন বাতিল হচ্ছে। দেরিতে চলছে প্রায় সব ট্রেন। যাত্রীদের অভিযোগ, সাড়ে ৯টা নাগাদ ঘোষণা হয়, ডাউন লাইনে রানাঘাট-শিয়ালদহ লোকাল আসছে। গতি কমালেও সেটি দাঁড়ায়নি। রেলের এক আধিকারিকের যুক্তি, যান্ত্রিক ত্রুটির জন্য সিগন্যাল লাল হয়ে গিয়েছিল। ফলে ট্রেন থামেনি।

দীর্ঘক্ষণ ট্রেনের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে বিরক্ত ছিলেন যাত্রীরা। তার উপরে চোখের সামনে দিয়ে ট্রেন বেরিয়ে যেতে দেখে আগুনে ঘি পড়ে। গত এক বছরে সোদপুরে দু’বার এবং টিটাগড়ে এক বার ভুল ঘোষণায় অশান্তি ছড়িয়েছে। এ দিন ট্রেন বেরিয়ে যেতেই কিছু যাত্রী লাইনে নেমে অবরোধ শুরু করেন। এক দল চড়াও হন টিকিট কাউন্টারে। লাইন থেকে পাথর তুলে ছোড়া হয়। টিকিট কাউন্টারের কাচ ভাঙে। কাউন্টার থেকে টাকা লুটের চেষ্টা হয় বলেও অভিযোগ। আপ ও ডাউন লাইনে দু’টি ট্রেন আটকে পড়ে। অবরোধকারীদের একাংশ একটি ট্রেনের ভেন্ডার কামরা থেকে ঝুড়ি নামিয়ে তাতে আগুন ধরিয়ে দেন। লাইনে গাড়ির টায়ার ফেলে আগুন লাগিয়ে দেন কিছু যাত্রী। স্টেশন মাস্টারের ঘরের কন্ট্রোল প্যানেলে ভাঙচুর চলে। রেলকর্মীরা বাধা দিতে গেলে ইট-পাটকেল উড়ে আসে। মাথা ফাটে স্টেশন ম্যানেজার এস মারান্ডির।

রেল পুলিশ এবং খড়দহ থানার পুলিশ এসেও বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। পরিস্থিতি সামলাতে র‌্যাফ নামানো হয়। রেল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের বারবার মাইকে অবরোধ তুলে নিতে অনুরোধ করেন।

ঘণ্টা তিনেক আটকে থেকে অন্য দুই ট্রেনের যাত্রীদের তখন গলদঘর্ম অবস্থা। তাঁদের সঙ্গে অবরোধকারীদের বচসা বাধে। তাড়া খেয়ে পিছু হটেন অবরোধকারীরা। লাঠি উঁচিয়ে তেড়ে যায় রেলপুলিশও। শেষমেশ অবরোধ ওঠে। শিয়ালদহের রেলপুলিশ সুপার অশেষ বিশ্বাস জানান, অবরোধকারীদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন