State News

‘টিম টিম’ করলেও বন্ধ হবে না কার্শিয়াঙের শতাব্দীপ্রাচীন পুজো

পুজোর মাত্র আর হপ্তাখানেক বাকি। কিন্তু এখনও পোড়া স্মৃতি বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কার্শিয়াঙের শতাব্দীপ্রাচীন রাজরাজেশ্বরী হল। গত ১৮ জুলাই গভীর রাতে কেউ বা কারা পুড়িয়ে দিয়েছিল এই হল। অভিযোগের তির মোর্চা সমর্থকদের দিকেই।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৬:০০
Share:

পোড়া ঘরেই পুজোর আয়োজন করছে কার্শিয়াং। নিজস্ব চিত্র।

বাঙালিরা আছেন, আছে বাঙালির দুর্গাপুজোও। মহালয়াও পেরিয়ে গেল দেখতে দেখতে। পুজোর মাত্র আর হপ্তাখানেক বাকি। কিন্তু এখনও পোড়া স্মৃতি বুকে নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে কার্শিয়াঙের শতাব্দীপ্রাচীন রাজরাজেশ্বরী হল। গত ১৮ জুলাই গভীর রাতে কেউ বা কারা পুড়িয়ে দিয়েছিল এই হল। অভিযোগের তির মোর্চা সমর্থকদের দিকেই।

Advertisement

কার্শিয়াঙের ডাউহিল রোডের বহু প্রাচীন এই হলের এখন ছাদ নেই, পুড়ে গিয়েছে অধিকাংশ অংশই, খসে গিয়েছে পলেস্তারাও। কিন্তু সেই হলেই আবার নতুন করে ম্যারাপ বাঁধছেন এলাকার গুটিকয়েক বাঙালি। চোয়াল শক্ত করে তাঁদের পণ, শত ঝড়েও বন্ধ হতে দেওয়া যাবে না ১০০ বছরের পুরনো এই পুজো। এই প্রসঙ্গেই রাজ্যের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘পুজো কেন হবে না? অবশ্যই হবে। পাহাড়ের পরিস্থিতি এখন অনেকটাই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে প্রশাসন সব রকমের সাহায্য করবে।’’

আরও পড়ুন: সমালোচনায় ভীত নই, রোহিঙ্গা সংকটে মুখ খুললেন সু চি

Advertisement

বহু বছর ধরেই রাজরাজেশ্বরী হলের এই পুজোটির আয়োজন করেন কার্শিয়াঙের বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশন। বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য শোভন দে জানালেন, এ বছরের অবস্থা ছিল একেবারেই আলাদা। টানা বন্‌ধ, টালমাটাল রাজনৈতিক পরিবেশ— সব মিলিয়েই পরিস্থিতি এখনও থমথমে। কিন্তু তারপরেও দমে যাননি তাঁরা।
কিন্তু এখনও স্বাভাবিক হয়নি পাহাড়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একের পর এক বৈঠকের পরেও মেলেনি সমাধানসূত্র। চলছে ধর্মঘটও। তার মধ্যেও পুজো হবে কী করে?

শোভনবাবু জানালেন, পাহাড়ের এই দোলাচলে অনেক সদস্যই একটু পাশ কাটিয়েছেন। পুজোর জোগাড় করছেন সর্বসাকুল্যে ১০-১২ জন। তবে শোভনবাবু জানালেন, শুধু বাঙালিরাই নন, পুজোতে যোগ দিয়েছেন আশপাশের সমস্ত সম্প্রদায়ের মানুষই। আর সে জন্যই এ বার এই পুজোর থিম রাখা হয়েছে ‘ইউনিটি ইন ডাইভার্সিটি’। বাজেট খুব কম হলেও দুর্গাপুজোটা যাতে বন্ধ না হয় সকলে মিলে এখন কোমর বেঁধে সেই চেষ্টাতেই নেমেছেন, জানালেন শোভনবাবু। শোভনবাবুদের এই প্রয়াসকে সমর্থন জানিয়েই গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার কার্শিয়াং শাখার আলোচনাপন্থী নেতা অনিত থাপা বলেন, ‘‘এই পুজো অবশ্যই হবে। পাহাড়ের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক হচ্ছে।’’

আরও পড়ুন: ট্র্যাক না ছুঁয়ে এই ভাবেই উড়ে যায় বুলেট ট্রেন

প্রায় ৯০ বছর আগে রাজরাজেশ্বরী হলের কাজ শুরু হয়েছিল। তৈরি করিয়েছিলেন রায়বাহাদুর শশীভূষণ দে। হলটির নামকরণ হয় তাঁরই স্ত্রীর নামে। সেই ১৯৩০ সাল থেকে কার্শিয়াঙের এই হলটিতেই হয়ে আসছে দুর্গাপুজো। এই হলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সংস্কৃতি জগতের অনেকের স্মৃতি। বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠানে কখনও এসেছেন জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষ, কখনও দিলীপকুমার রায়। কখনও শোনা গিয়েছে অতুলপ্রসাদ সেন, শচীনদেব বর্মণ থেকে সলিল চৌধুরী, নির্মলেন্দু চৌধুরীর গান, কখনও সরোদ বাজিয়েছেন রাধিকামোহন মৈত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন