কালিয়াগঞ্জের কর্মিসভায়।—নিজস্ব চিত্র।
রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সির খাসতালুক বলে পরিচিত কালিয়াগঞ্জে কংগ্রেসে ভাঙন ধরালেন তৃণমূল সাংসদ তথা দলের উত্তর দিনাজপুর জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর উপস্থিতিতে কংগ্রেসের দখলে থাকা রায়গঞ্জ ব্লকের জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে নিল তৃণমূল। কালিয়াগঞ্জ পুরসভার একমাত্র বিজেপি কাউন্সিলরও যোগ দিলেন তৃণমূলে। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কংগ্রেসের দুর্গ হিসেবে পরিচিত রায়গঞ্জ-কালিয়াগঞ্জে এমন দৃশ্য দেখা গেল। দু’টি জায়গায় কর্মিসভার পরে শুভেন্দুবাবু দাবি করেন, ‘‘সবাই বলেন রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ নাকি কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটি। ওসব ভুলে যান।’’ তাঁর কথায়, ‘‘বিরোধী দলের জন প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় আমরা যেভাবে জেলা পরিষদ ও জেলার একাধিক পঞ্চায়েত দখল করেছি, তেমনি আগামী ছ’মাসের মধ্যে কালিয়াগঞ্জ পুরসভাও দখল করব।’’
এর পরেই কাটোয়া ও সুজাপুরের কংগ্রেস বিধায়কদের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে শুভেন্দুবাবু জানান, যাঁরা প্রকৃত কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি বা অন্য দলের জনপ্রতিনিধি, নেতা বা কর্মী রয়েছেন, তাঁরা উন্নয়নের স্বার্থে তৃণমূলে যোগ দিন। যোগ্য মর্যাদা পাবেন।
এ প্রসঙ্গে জেলা কংগ্রেস সভাপতি তথা রায়গঞ্জের বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘শুভেন্দুবাবুরা যতই সন্ত্রাস, অপপ্রচার, কুত্সা ও ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের দলে টানুক না কেন, আগামী বিধানসভা নির্বাচনেই এর উপযুক্ত জবাব পেয়ে যাবেন।’’ বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর চক্রবর্তীর দাবি, প্রলোভন দেখিয়ে বিরোধী দলের জন প্রতিনিধি ও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের দলে টানা হয়েছে। তবে দীপাদেবীকে ফোন করা হলে তা বেজে গিয়েছে।
এ দিন কর্মিসভা থেকে আসন্ন বিধানসভা ভোটের প্রচারের সূচনাও যেন করে দেন তমলুকের সাংসদ। তিনি জানান, চোপড়া, গোয়ালপোখর ও ইসলামপুর বিধানসভা তৃণমূলের দখলে থাকায় গত চার বছরে ভাল উন্নয়ন হয়েছে। রায়গঞ্জ, হেমতাবাদ, করণদিঘি, চাকুলিয়া ও কালিয়াগঞ্জ বিধানসভার কংগ্রেস ও বামেদের বিধায়করা তৃণমূলকে বদনাম করতে উন্নয়নের স্বার্থে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রাখেননি। তাঁর আর্জি, ‘‘আগামী বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ন’টি বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের জয়ী করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে উন্নয়ন আদায় করে নিন।’’
মহারাজা হাট এলাকার ওই কর্মিসভায় জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের কংগ্রেসের প্রধান সুশীল বর্মন সহ কংগ্রেসের ১১ জন সদস্য তৃণমূলে যোগ দেন। এরপর কালিয়াগঞ্জের কর্মিসভায় কালিয়াগঞ্জ পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কংগ্রেস কাউন্সিলর তথা পুরসভার প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান বসন্ত রায়ের নেতৃত্বে দেড়শো জনেরও বেশি কংগ্রেসের কর্মী সমর্থক তৃণমূলে যোগ দেন। ওই পুরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের একমাত্র বিজেপি কাউন্সিলর অমিত দেবগুপ্তও বিজেপির শতাধিক কর্মী সমর্থককে নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।