মারলে কে বাঁচাবে, আক্ষেপ সিপিএমে

দলের নিচু তলার কর্মীরা এত দিন বলছিলেন। এ বার একই আক্ষেপ উঠে এল জেলা সম্পাদকদের মুখেও!তলে তলে বাম শিবির ভেঙে ইদানীং লোক বাড়ছে রাম শিবিরে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০৩:০৮
Share:

দলের নিচু তলার কর্মীরা এত দিন বলছিলেন। এ বার একই আক্ষেপ উঠে এল জেলা সম্পাদকদের মুখেও!

Advertisement

তলে তলে বাম শিবির ভেঙে ইদানীং লোক বাড়ছে রাম শিবিরে। পুলিশ-প্রশাসনের মামলার চাপ এবং তৃণমূলের আক্রমণের মুখে রুখে দাঁড়াতে না পারার জন্যই এমন শিবির বদল বলে ব্যাখ্যা দিচ্ছিলেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। সিপিএমের সদ্যসমাপ্ত রাজ্য কমিটির বৈঠকে সেই তত্ত্বেই সিলমোহর দিলেন দলের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদকের মতও প্রায় এক। অজিতবাবু প্রশ্ন তুলেছেন, জেলা সম্পাদকের নিরাপত্তার দায়িত্বই যদি কেউ না নেয়, সাধারণ কর্মীরা কি আশ্রয় খুঁজবেন না?

সম্প্রতি বাঁকুড়ায় সিপিএম দফতরে দলের শিক্ষা শিবির চলাকালীন হামলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বোমাবাজির পরে শাসক দলের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন অজিতবাবুও। রাজ্য কমিটিতে সেই অভিজ্ঞতার বিবরণ দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, জেলা সম্পাদক আক্রান্ত শুনে বাকি কর্মীরা বেরিয়ে আসবেন বলে তাঁর ধারণা ছিল। কিন্তু হামলার মুখে সে ভাবে কেউ রুখেই দাঁড়ায়নি! পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বৈঠকে জানিয়েছেন, রামনবমী উপলক্ষে গেরুয়া সঙ্ঘ কাঁথিতে বিরাট মিছিল করেছিল। কিন্তু হইচইয়ের আগেই তমলুক লোকসভা উপনির্বাচনে বিজেপি এক লক্ষের বেশি ভোট পেয়েছিল। যা অভাবনীয়! তৃণমূলের হামলার মুখে জমি আগলাতে না পারার ব্যর্থতা যে বাম শিবিরে ভাঙন ধরাচ্ছে, সেই ব্যাপারে একমত জেলার নেতাদের একাংশ।

Advertisement

সিপিএমের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের একাংশ বুঝতে পারছেন, বিজেপি কেন্দ্রের শাসক দল হওয়ায় তাদের গায়ে হাত দেওয়া অত সহজ নয়! এই ভেবেই পতাকা বদলাচ্ছেন সাধারণ বাম সমর্থকেরা। তাঁদের আশঙ্কা আরও বাড়ছে অজিতবাবুর অভিজ্ঞতায়। আক্রান্ত জেলা সম্পাদকের পাশে দাঁড়াতেও কর্মীরা যদি এগিয়ে না আসেন, প্রতিপক্ষের সঙ্গে লড়ে জোরালো কর্মসূচি হবে কী ভাবে? জেলা নেতাদের বক্তব্য শুনে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র অবশ্য কড়া বার্তাই দিয়েছেন। দলীয় সূত্রের খবর, জবাবি ভাষণে সূর্যবাবু বলেছেন, হামলা ও মামলার ভয়ে যাঁরা গুটিয়ে, তাঁদের দিয়ে আর চলবে না! তাতে দল ছোট হয়ে গেলে যাক!

নিষ্ক্রিয়দের ঝেড়ে ফেলা নিয়েও নতুন তত্ত্ব দিয়েছেন জলপাইগুড়ির নেতা জিয়াউল আলম। তাঁর বক্তব্য, নিষ্ক্রিয় সদস্যদের দল থেকে বার করে দেওয়া হলে তাঁরা আরও নির্দ্বিধায় বিজেপি-তে যাবেন! সূর্যবাবু অবশ্য তাতেও দমতে নারাজ। তিনি বলছেন, ‘‘তৃণমূলের স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ঢিলে দিলে বিজেপির সুবিধা হবে। আবার বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই শিথিল হলে তৃণমূলের সুবিধা। একসঙ্গেই দু’টো লড়াই চালাতে হবে।’’ সত্যিই এখন অন্য উপায় নেই সিপিএমের সামনে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement