প্রতীকী ছবি।
কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের স্বার্থেই ম্যানগ্রোভ-সম্পদে সমৃদ্ধ সুন্দরবনকে বাঁচাতে হবে। আবার সুন্দরবনকে বাঁচাতে হলে পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন গড়তে হবে বলে পরিবেশবিদদের অভিমত। সেই পরিবেশ-বান্ধব পর্যটন গড়তে চেয়েই এ বার জাতীয় পরিবেশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে সুন্দরবনের বেশ কিছু হোটেল।
আবেদনকারী হোটেলগুলির আইনজীবী পৌষালি বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, উপকূলীয় মানচিত্র নিয়ে দিল্লির জাতীয় পরিবেশ আদালতে মামলা চলছে। তাই এখানে সুন্দরবন এবং মন্দারমণির মামলার শুনানি অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত হয়ে গিয়েছে। মন্দারমণির হোটেলগুলির জন্য নির্দিষ্ট নির্দেশিকা জারি করেছে আদালত। “আমরা চাই, সুন্দরবনের হোটেলগুলির জন্যও একই ধরনের নীতি-নির্দেশিকা বেঁধে দেওয়া হোক,” বলছেন পৌষালি। আজ, বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে শুনানি হতে পারে কলকাতায় জাতীয় পরিবেশ আদালতের পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চে।
সুন্দরবনকে রক্ষা করার জন্য সম্প্রতি একটি সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছে অবজার্ভার রিসার্চ গ্রুপ-সহ ভারত ও বাংলাদেশের কয়েকটি সংস্থা। তাতে বলা হয়েছে, সুন্দরবনের পরিবেশ বাঁচাতে গেলে সেখানকার বাসিন্দাদের জীবিকা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এবং সেটা করতে হলে পরিবেশ-বান্ধব পর্যটনে জোর দেওয়া চাই। পরিবেশবিদদের মতে, জীবিকা নিশ্চিত না-হলে পেটের দায়েই গাছ কাটা বা চোরাশিকারের মতো অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িয়ে পড়বে সুন্দরবনের বাসিন্দারা।
সুন্দরবনে দূষণে অভিযুক্ত সব হোম-স্টে ও হোটেল বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল পরিবেশ আদালত। পাখিরালয়ের একটি হোম-স্টে এবং ছোট হোটেলের মালিক জয়দেব খাটুয়া বলছেন, ‘‘আদালত যে-ভাবে বলবে, আমরা সেই ভাবেই ব্যবসা করতে রাজি। পরিবেশ বাঁচানোর নির্দেশ মানবো।’’ ওখানকার হোটেল-মালিক সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রবীর সিংহরায়ের বক্তব্য, সুন্দরবনে পরিবেশ ও মানুষ যাতে পাশাপাশি বাঁচতে পারে, তা নিশ্চিত করা উচিত।
সুন্দরবনে দয়াপুরের একটি রিসর্টে সৌর বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। বর্জ্য পচিয়ে তৈরি করা হয় গ্যাস। ওই রিসর্টের মালিক সংস্থার সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার উদয়শঙ্কর রায় বলেন, ‘‘আদালতে হলফনামায় আমাদের রিসর্টের পরিবেশ-বান্ধব প্রযুক্তির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে।’’