লাজুক ছেলেটা করল কী করে এমন কাজ!

অন্য পক্ষের দাবি, ‘‘ছেলেটা কি এক বার নিজেকে সংশোধনের সুযোগ পাবে না!’’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য দু’পক্ষই আদালতের রায়ের উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন।

Advertisement

সেবাব্রত মুখোপাধ্যায়

রেজিনগর শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:৪৬
Share:

ম্লান মুখে আদালত থেকে বাড়ির পথে। বহরমপুরে। নিজস্ব চিত্র

আশা-নিরাশায় দুলছে রেজিনগরের মাঙ্গনপাড়া গ্রাম! বহরমপুরের আশাবরী আবাসন হত্যাকাণ্ডের মামলায় বৃহস্পতিবার বিচারক দোষী সাব্যস্ত ঘোষণার পর থেকেই নিত্যানন্দ দাসের পৈতৃক ভিটে মাঙ্গনপাড়াও আড়াআড়ি দু’ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছে। এক পক্ষ বলছেন, ‘‘কঠোরতম সাজা হওয়া উচিত।’’

Advertisement

অন্য পক্ষের দাবি, ‘‘ছেলেটা কি এক বার নিজেকে সংশোধনের সুযোগ পাবে না!’’ শেষ পর্যন্ত অবশ্য দু’পক্ষই আদালতের রায়ের উপরে ভরসা রাখতে চাইছেন।

মাঙ্গনপাড়া নিম্ন বুনিয়াদি প্রাথমিক স্কুল লাগোয়া এলাকায় নিত্যানন্দের পৈতৃক ভিটে। বাড়ির চত্বরে নিত্যানন্দের বাবা নিমাই দাস বৈরাগ্যের আশ্রম রয়েছে।

Advertisement

নিত্যানন্দের ঠাকুমা ভগবতী দাস সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। সেই উপলক্ষে বাড়িতে বসেছে সংকীর্তনের আসর। সেখানে টানা বেজে চলেছে মাইক। কান্নাভেজা গলায় নিত্যানন্দের বাবা নিমাই দাস বৈরাগ্য বলছেন, ‘‘গত পৌষে মা মারা গিয়েছেন। এ দিন ছেলের এই সংবাদ শুনেছি। কোনও কিছু ভাবতে পারছি না। আমি ঈশ্বরে বিশ্বাস করি। প্রার্থনা করব, ছেলের তিনি মঙ্গল করুন।’’

নিত্যানন্দের জামাইবাবু শ্যামল বিশ্বাস বলছেন, ‘‘নিত্যানন্দ চারটে বিষয়ে লেটার মার্কস-সহ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাশ করেছিল। পরে কেন্দ্রীয় সামরিক বাহিনীর (সিআরপিএফ) চাকরি নিয়ে চলে গিয়েছিল।” কিন্তু বেশি দিন থাকতে পারেনি। চাকরি ছেড়ে চলে এসেছিল। তার পরে ভাকুড়িতে ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করে।

তবে গ্রামবাসীদের কথা আলাদা। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘বছর দশেক আগে এক রাতে নিত্যানন্দ গ্রামের বাড়িতে আসে। সেখানে তার ঠাকুমাকে খুন করার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু রাতের অন্ধকারে বাড়িতে থাকা অন্য বৃদ্ধাকে ধারাল অস্ত্রে আঘাত করে। তিনি চিৎকার করলে নিত্যানন্দ তার ভুল বুঝতে পারে। তখন পালিয়ে যায়।’’ গ্রামের এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘নিত্যানন্দ তার বাবার উপরে অর্থ চেয়ে চাপ সৃষ্টি করত। জেলে থাকাকালীনও টাকা দাবি করে তার বাবাকে ফোন করত। এমনকি নিজের বাবাকেও খুনের হুমকি দিত ওই নিত্যানন্দ। গ্রামের দীনবন্ধু হালদার বলেন, ‘‘নিত্যানন্দ ছোট থেকেই শান্ত ও লাজুক প্রকৃতির ছিল। সে তিন জনকে খুন করেছে শুনে বিশ্বাস করতে মন সায় দেয়নি কোনও দিন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন