বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের উল্লাস

ইতি পড়ল সৌমিকে

নিজে সরে গেলেও ডোমকল জুড়ে অজস্র প্রশ্ন রেখে গেলেন সৌমিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ডোমকল শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৯ ০৫:০০
Share:

জল্পনার ইতি টেনে শেষতক ডোমকল পুর প্রধানের পদ খোয়ালেন সৌমিক হোসেন।

Advertisement

আর অনাস্থা ভোটে অনুপস্থিত থেকে কার্যত পরাজয় মেনে নেওয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই পুরকক্ষ থেকে সরে গেল সোনালি ফ্রেমে বাঁধানো তাঁর ছবি, মুছে গেল আহেদ সৌমিক হোসেন লেখা নাম-ফলকও।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টা নাগাদ অনাস্থা পর্ব ভোটাভুটি ছাড়াই মিটে যাওয়ার পরে ছবি-নেম প্লেট- টেবিলের উপরে রাখা নামের ফলক সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শোনা গেল ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলরদের সমস্বরে সোল্লাশ ‘ডোমকল থেকে ইংরেজের বিদায়!’

Advertisement

যা শুনে পরে সৌমিক অবশ্য বলছেন, ‘‘মনে রাখবেন, ইংরেজ বিদায় নিলেও মীরজাফরেরা পুরসভার দখল নিল কিন্তু!’’

অতঃপর জয় ধরে নিয়ে পথে নামলেন ‘বিদ্রোহী’রা। ছবি: সাফিউল্লা ইসলাম

বুধবারও সৌমিক বলেছিলেন, ‘পিকচার আভি বাকি হ্যায়’, তাঁর অনুগামীদের মধ্যে কিঞ্চিৎ আশার সঞ্চার হয়েছিল হয়ত কিছু বা শঙ্কা জমেছিল বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর মনে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে আস্থা ভোটের জন্য আর পুরসভাতেই আসেননি সৌমিক হোসেন। আসেননি তাঁর ছয় অনুগামী কাউন্সিলরও।

নিজে সরে গেলেও ডোমকল জুড়ে অজস্র প্রশ্ন রেখে গেলেন সৌমিক। এ দিন জেলা তৃণমূল কার্যালয় থেকে পাড়ার চায়ের দোকান, সর্বত্র কান পাতলে একটাই আলোচ্য বিষয়— সৌমিকের এমন হাল হল কেন?

জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশ মনে করছেন, রাজনীতির সমীকরণেই সরে যেতে হল সৌমিককে।

বছর চারেক আগে তৈরি হয়েছিল ডোমকল পুরসভা, যদিও প্রায় বছর দেড়েক প্রশাসকের হাতে থাকার পরে শেষতক পুরসভার দায়িত্ব পেয়েছিল তৃণমূল। পুরপ্রধান হয়েছিলেন সৌমিক।

কিন্তু বছর গড়াতে না গড়াতেই তাঁর সঙ্গে দলের কাউন্সিলরদের বড় একটা অংশের বিরোধ বাধে। প্রথম ধাক্কায় কিছুটা সামাল দিলেও পরবর্তী সময়ে সে বিরোধিতার আঘাত আর সামাল দিতে পারেননি তিনি। শেষ পর্যন্ত জুলাই মাসের প্রথম দিনে ১৩ জন কাউন্সিলর সৌমিকের বিরুদ্ধে অনাস্থার ডাক দেয়। ভোটাভুটি না হলেও এ দিন সেই অনাস্থায় পনেরো জন কাউন্সিলর অংশ নেন সৌমিকের বিপক্ষে।

উল্টো দিকে জেলা জুড়ে নানা গুঞ্জন থাকলেও শেষ পর্যন্ত তলবি সভায় উপস্থিত হননি সৌমিক হোসেন ও তাঁর পক্ষের কোনও কাউন্সিলর।

এ দিন সৌমিকের পরাজয়ের পরে ডোমকল জুড়ে বিভিন্ন এলাকায় বাজি ফাটতেও শোনা যায়। জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র অশোক দাস এ দিনের অনাস্থার পরে বলছেন, ‘‘আমাদের ভাবার কিছুই নেই, দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বেশ কিছু দলীয় কাউন্সিলর অনাস্থা এনেছিল। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতেই সেই অনাস্থা হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ জেলার পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী করবেন। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক হবে পরবর্তী পদক্ষেপ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন