হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলতেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সাসপেন্ড হয়েছিলেন। সাত্তোর নির্যাতন-কাণ্ডে চার্জশিটে প্রথমে নাম থাকা সেই বীরভূম পুলিশের স্পেশাল অপারেশন গ্রুপের (এসওজি) প্রাক্তন ওসি কার্তিকমোহন ঘোষের সাসপেনশন তুলে নিলেন জেলার পুলিশ সুপার।
সোমবার সে কথা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন বিরোধীরা। তাঁদের প্রশ্ন, ওই অফিসারের বিরুদ্ধে পুলিশের বিভাগীয় তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। তার আগেই কী করে চুপিসাড়ে সাপেনশন তুলে তুলে নেওয়া হল? এ প্রশ্নের উত্তর দেননি বীরভূমের পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার। ফোন ধরেননি। রাতে এসএমএসের জবাবে শুধু জানিয়েছেন, সাসপেশন তোলা হয়েছে। মন্তব্য করতে চাননি কার্তিকমোহনবাবুও।
পাড়ুইয়ের সাত্তোর এলাকায় শ্বশুরবাড়ি বিজেপি সমর্থক ওই নির্যাতিতা বধূর। বোমাবাজির ঘটনায় অভিযুক্ত তাঁর এক ভাসুরপোকে ধরতে গত ১৭ জানুয়ারি রাতে বর্ধমানের বুদবুদ থানার কলমডাঙা গ্রামে বধূর বাপের বাড়িতে হানা দেয় বীরভূম জেলা পুলিশের বিশেষ দল। অভিযোগ, অভিযুক্তকে না পেয়ে কার্তিকমোহনের ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশবাহিনী পুলিশ ওই বধূকে তুলে নিয়ে গিয়ে রাতভর শারীরিক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন চালায়। আদালতের চাপের মুখে তৎকালীন পুলিশ সুপার সাসপেন্ড করেন কার্তিকবাবুকে। তাঁর এবং অভিযুক্ত অন্য পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে শুরু হয় বিভাগীয় তদন্ত।
গত ১৭ এপ্রিল সিআইডি-র দেওয়া চার্জশিটেও পুলিশ কর্মীদের যুক্ত থাকার কথা বলা হয়েছিল। চার্জশিটে কার্তিকমোহনবাবু ছাড়াও এসওজি-র দুই কনস্টেবল দীপক বাউড়ি, কাশীনাথ দাস এবং ইলামবাজার থানার মহিলা কনস্টেবল আল্পনা লোহারের নাম ছিল। পুলিশ সূত্রে র খবর, দিন চারেক আগেই জেলা পুলিশের ওই অফিসার পুলিশ লাইনে যোগ দিয়েছেন। তাই সাসপেনশন তোলা নিয়ে জল্পনা চলছিলই।
সেই কার্তিকমোহনের বিরুদ্ধে সত্যিই সাসপেনশন তোলা হয়েছে জেনে নির্যাতিতার প্রতিক্রিয়া, ‘‘বিভাগীয় তদন্ত চলার সময় আমি নিজে ওই পুলিশকর্মীকে চিহ্নিত করে , আমার উপর অত্যাচার চালানোর ঘটনায় কার্তিকমোহন ছিলেন। এত বড় অপরাধ করার পরও কী ভাবে তাঁকে ছাড় দেওয়া হল? এটা শাসকদল ও পুলিশের যৌথ খেলা।’’ আর বরাবর সাত্তোরের নির্যাতিতার পাশে থেকেছেন যিনি, সেই বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘কার্তিকমোহন ঘোষকে আমরা এমনি এমনি উর্দি পরতে দেব না! যে কেউ তো আর ওই উর্দি পরতে পারেন না। বীরভূম পুলিশে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলনে নামব।’’