শাসক-বেঞ্চ ফাঁকা, বিরক্ত স্পিকার

কর্মসূচি না থাকায় ও প্রশ্নোত্তর পর্ব কমে আসায় বিধানসভার এ বারের অধিবেশন নিয়ে গুঞ্জন চলছিলই। কিন্তু তাতে একেবারে অন্য মাত্রা যোগ হল এ দিন দ্বিতীয়ার্ধের অধিবেশনে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:০৮
Share:

স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।—ফাইল চিত্র।

না মন্ত্রী সংখ্যা, না তৃণমূলের বিধায়ক সংখ্যা—সোমবার ‘কোরাম’ ছাড়াই চালাতে হল বিধানসভার অধিবেশন। দ্বিতীয়ার্ধের বেশ কিছুক্ষণ এই পরিস্থিতি হওয়ায় আলোড়ন তৈরি হয়েছে শাসক শিবিরে। খোঁজাখুঁজি ও ডাকাডাকির পরে সংখ্যা বাড়লেও সরকারপক্ষের এই চেহারায় বিরক্তি প্রকাশ করে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘চূড়ান্ত অবাঞ্ছিত ঘটনা। সংশ্লিষ্ট সকলের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।’’

Advertisement

কর্মসূচি না থাকায় ও প্রশ্নোত্তর পর্ব কমে আসায় বিধানসভার এ বারের অধিবেশন নিয়ে গুঞ্জন চলছিলই। কিন্তু তাতে একেবারে অন্য মাত্রা যোগ হল এ দিন দ্বিতীয়ার্ধের অধিবেশনে। প্রথমার্ধের অধিবেশন শেষে এ দিন দেড়টায় ফের কাজ শুরু হয় বিধানসভায়। কিন্তু সভার কাজ যখন শুরু হচ্ছে, তখন সভাকক্ষে সরকারপক্ষের আসন কার্যত ফাঁকা। এ রাজ্যে বিধানসভার বিধি ও বিন্যাস অনুযায়ী অধিবেশনের জন্য ‘কোরাম’ বা শাসক দলের ন্যূনতম বিধায়কের সংখ্যা হওয়া উচিত এক দশমাংশ অর্থাৎ ৩০। কিন্তু সে সময় শাসক দলের বিধায়কের সংখ্যা ছিল ১৩। আর মন্ত্রীদের আসনে ন্যূনতম ৬ জনের থাকার কথা থাকলেও সেখানে তখন একা বসে পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায়। পঞ্চায়েত দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা শুরু করেও তাপসবাবুকে ডেকে ট্রেজারি বেঞ্চের চেহারা দেখান স্পিকার। পরিস্থিতি বুঝে তাপসবাবু ছুটে যান। একই ভাবে ছোটাছুটি করে তৃণমূলের মন্ত্রী ও বিধায়কদের ডাকতে থাকেন মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ। কয়েক জন এলেও প্রায় ১৫ মিনিট পর্যন্ত বিধায়কের সংখ্যা ছিল ৬।

বিধানসভায় এ দিনের অধিবেশনের প্রথমার্ধে মূল্যবৃদ্ধি, মালদহ এবং কালীঘাটের ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা না হওয়ার প্রতিবাদে ওয়াক আউট করে কংগ্রেস ও বামেরা। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আগেই জমা দিয়েছিল কংগ্রেস এবং বাম। কিন্তু স্পিকার এ দিন যখন ওই প্রস্তাব পড়তে বলেন, তখন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী সেখানে ছিলেন না। সিপিএম বিধায়ক মানস মুখোপাধ্যায় জানান, তাঁরা পরের দিন এই বিষয়ে আলোচনা চান। বিরোধী দলের সচেতক মনোজ চক্রবর্তী জানান, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় পঞ্চায়েত আইন তৈরি করেছিলেন। এখন তাঁকে দিয়ে বিবৃতি দেওয়ানো তাঁর, সভার এবং বিরোধী পক্ষের অপমান। আর তা ছাড়া, মূল্যবৃদ্ধি, নারীর মর্যাদাহানি, মালদহ এবং কালীঘাটের ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা না করে পঞ্চায়েত মন্ত্রীর ওই বিবৃতি নিয়ে আলোচনা অর্থহীন। একই কথা বলেন সিপিএম বিধায়ক মানসবাবুও। এর পরেই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়ে ওয়াক আউট করে বাম এবং কংগ্রেস।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন