—প্রতীকী ছবি।
পড়শি ওড়িশা পেরেছে। গড়িমসি করেই চলেছে পশ্চিমবঙ্গ!
অর্থ লগ্নি সংস্থার আর্থিক কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত মামলার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত চালানোর জন্য বিশেষ আদালত চায় সিবিআই। কিন্তু তাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তেমন আগ্রহ নেই। অথচ সিবিআইয়ের অনুরোধ মেনে ওড়িশা সরকার ইতিমধ্যেই বিশেষ আদালত গঠন করেছে। ওই রাজ্যে লগ্নি সংস্থার কিছু মামলার বিচার পর্ব সেই আদালতেই চলছে বলে জানিয়েছে সিবিআই।
সিবিআইয়ের দাবি, ওড়িশায় সি-শোর, অর্থতত্ত্ব প্রভৃতি সংস্থার বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের পরে বিচার পর্ব দ্রুত গতিতে চলছে। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের আদেশ মেনে নবান্নও যদি বিশেষ আদালত গড়ে, তা হলে লক্ষ লক্ষ আমানতকারীর দায়ের করা অভিযোগের দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। অভিযুক্তেরা শাস্তি পাবেন। সেই সঙ্গে গতি পাবে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া।
রাজ্যের আইন ও বিচার মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, ‘‘বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিতে হবে। সরকার সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।’’ আইন ও বিচার দফতরের কর্তাদের মতে, হাইকোর্ট বিশেষ আদালত তৈরির বিষয়টি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দিলেই রাজ্য তা মানতে বাধ্য হবে। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে এখনও তা বলা হয়নি।
সিবিআই জানাচ্ছে, হাইকোর্ট লগ্নি সংস্থার বিরুদ্ধে তদন্তের জন্য ‘সিট’ বা বিশেষ আদালত গঠন, কমিশন তৈরির পাশাপাশি বিশেষ আদালত গড়ে দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শেষ করার নির্দেশ দিয়েছিল ২০১৩-র ১৯ জুন। বিচারপতি অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৃণালকান্তি চৌধুরীর ডিভিশন বেঞ্চ সেই নির্দেশে বলেছিল, হাইকোর্টের সঙ্গে পরামর্শ করে বিশেষ আদালতেই সারদা মামলার শুনানি পর্ব দ্রুত শেষ করতে হবে। তার পরেই বিচারপতি শ্যামল সেন কমিশন এবং সিট গড়া হয়েছিল। কিন্তু বিশেষ আদালত হয়নি। প্রায় চার বছর তদন্তের পরে এ বার সিবিআই একে একে বড় লগ্নি সংস্থাগুলির তদন্ত শেষ করে চূড়ান্ত চার্জশিট দিতে চলেছে।
সিবিআই সূত্রের খবর, গত অগস্টে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির কাছে বিশেষ আদালতের বিষয়ে আর্জি জানানো হয়েছিল। প্রধান বিচারপতি নবান্নকে বলেন, সিবিআইয়ের প্রস্তাব খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কলকাতায় একটি নির্দিষ্ট আদালতে লগ্নি সংক্রান্ত মামলাগুলির বিচার প্রক্রিয়া চালু হলে সিবিআই এবং অভিযুক্ত, উভয় পক্ষেরই সুবিধা। একই আদালতে বিচার হলে নিষ্পত্তিও হতে পারে দ্রুত। পাশাপাশি এই আদালত থেকেই সরাসরি উচ্চ আদালতে চলে যেতে পারবেন বিচারপ্রার্থীরা। শুধু লগ্নি সংস্থার মামলা শোনা হলে সেখানে অন্য মামলার চাপ থাকবে না।
রাজ্যের গড়া সিট লগ্নি সংস্থার তছরুপ নিয়ে ৫৩১টি মামলা রুজু করেছিল। সিবিআই এ বছরেও নতুন ১২টি মামলার তদন্ত শুরু করেছে। এখনও অন্তত ১০০ মামলা বাকি রয়েছে। তাই এখন তারা বিচার প্রক্রিয়া শুরু করার উপরে জোর দিচ্ছে। রাজ্য সরকার অবশ্য বলেছে, হাইকোর্ট নির্দেশ দিক এবং বিচারপতি নিয়োগ করুক। পরিকাঠামো ও কর্মী দেওয়া হবে। কিন্তু আদালত গঠন তো হাইকোর্টকেই করতে হবে।