শোভন চট্টোপাধ্যায়।
গুঞ্জন ছিল ধিকি ধিকি। শনিবার তা প্রায় দাবানলের আকার নিল। পুরভবন থেকে রাজনৈতিক মহল সবর্ত্র আলোচনা— কী হয়েছে মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের? তিনি কি দায়িত্ব ছাড়ছেন? দলের কাছে ইস্তফা দিতে চেয়ে চিঠি দিয়েছেন? এ সব প্রশ্নে তাঁর একটাই উত্তর, ‘‘যার যা মনে হয় লিখতে পারেন।’’
জল্পনা বাড়ে এ দিন পুর বাজেটে মেয়রের দেরি করে আসায়। শুক্রবার দলের কোর কমিটির বৈঠকে তিনি যাননি। বলা হয়েছিল তাঁর শরীর খারাপ। কিন্তু ওই দিনই দুপুরের পরে পুরভবনে যান তিনি। সন্ধ্যায় শহরের অন্যত্রও তাঁকে দেখা যায়। শনিবার প্রায় ১৫ মিনিট দেরিতে সভাকক্ষে ঢোকেন মেয়র। নজিরবিহীন এই ঘটনা নিয়ে চিৎকার শুরু করেন বিরোধীরা। বাজেট বক্তৃতা সংক্ষেপে সেরে শোভন চলে যান নিজের ঘরে। বাজেট অধিবেশনে দলীয় কাউন্সিলরদের করণীয় স্থির করতে ডাকা বৈঠকও তিনি ঢোকেন একেবারে শেষ মুহূর্তে।
সন্ধ্যায় হঠাৎ লালবাজারে পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যান শোভন। সিপি তখন ছিলেন না। কিছু ক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় মেয়রকে। কী কারণে তিনি লালবাজার গেলেন, তা অবশ্য জানা যায়নি। তবে সিপিকে ডেকে না পাঠিয়ে শোভন নিজেই তাঁর কাছে যাওয়ায় প্রশ্ন দানা বাঁধছে।
দলীয় সূত্রে খবর, ‘ব্যক্তিগত’ নানা কারণে কিছু দিন ধরে মেয়র বিতর্কিত। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর নিরন্তর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগও আর আগের মতো নেই। শোভন আবাসন, পরিবেশ ও দমকল মন্ত্রীও বটে। এতগুলি দফতরের কাজে ধরনের সময় ও মনোযোগ দেওয়া দরকার শোভন তা দিচ্ছেন না বলেও খবর।
আরও পড়ুন: ধন্যবাদ দিলেন সিঙ্ঘভি, আশ্বাস মমতার
সম্প্রতি মেয়রের নিরাপত্তা জেড প্লাস থেকে কমিয়ে জেড করা হয়েছে। দিন দুয়েক আগে তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপার রাজ্য কমিটি ভেঙে দেওয়া দেওয়া হয়েছে। যাতে বাদ পড়েছেন শোভন-ঘনিষ্ঠ এক কলেজ শিক্ষিকা। দলের অন্দরে খবর, ঘনিষ্ঠের পদ চলে যাওয়া মেয়র ভাল চোখে দেখেননি। এর পরেই তিনি দলীয় নেতৃত্বের কাছে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতির প্রস্তাব দেন। তা এখনও গ্রহণ করা হয়নি। দলের শীর্ষমহলের বক্তব্য, শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে আগাম ইস্তফা গ্রহণের প্রশ্ন ওঠে না। তাঁকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়াই রীতি। শোভনের ক্ষেত্রে কী হবে? দলের উত্তর এখনও অজানা।