নরবুজি লামা
তিনি তাকদা-র ‘বেতাজ বাদশা’। মোর্চার মুখপাত্র এবং বিমল গুরুঙ্গের ‘কোর টিমের’ সদস্যও। গত ৮ জুন মন্ত্রিসভার বৈঠক চলাকালীন ভানুভবনের সামনে গোলমাল পাকানোর অভিযোগে সেই নরবুজি লামাকে শিলিগুড়ি লাগোয়া ভক্তিনগর থেকে শুক্রবার রাতে গ্রেফতার করল সিআইডি। যদিও আদালতে যাওয়ার পথে সব ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন তিনি। তাঁকে সাত দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
এর মধ্যে আন্দোলনের রাশ নিয়ে গোর্খা নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে। তার পরে নরবুজি গ্রেফতার হলেন। এই গ্রেফতারির প্রতিবাদ করে মোর্চা নেতা ত্রিলোকচন্দ্র রোকা বলেন, ‘‘৫১ দিন ধরে বন্ধ চলছে। আমরা আরও ৫১ বছর অপেক্ষা করতে রাজি। কিন্তু এক দিন বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ) থেকে পাহাড়-ডুয়ার্স-তরাইকে মুক্ত করতে পারব।’’
তিন দিন আগেই গুরুঙ্গ হুমকি দেন, ৮ অগস্ট থেকে আরও তীব্র হবে আন্দোলন। তার পরে ‘আরও ৫১ বছর অপেক্ষা’র কথা শুনে পাহাড়ের একটি দলের নেতার দাবি, ‘‘মোর্চার অন্দরে হতাশা তৈরি হয়েছে। তাই ওঁরা অপেক্ষার কথা বলছেন।’’ মোর্চা সূত্র বলছে, আন্দোলনের রাশ হাতে রাখতে জেনেবুঝেই সুর নরম করা হয়েছে। কারণ, আন্দোলন তীব্র হলেই পুলিশ ধরপাকড় শুরু করবে। সমন্বয় কমিটিতে গুরুত্ব বাড়াতে উঠেপড়ে লেগেছে অন্য দলগুলি। মোর্চার চিন্তা বাড়িয়ে জিএনএলএফের সভাপতি মন ঘিসিঙ্গ আবার দিল্লি গিয়েছেন।
আন্দোলনের রাশ হাতে রাখতে তাই সমন্বয় কমিটিকে এড়িয়ে আলাদা কর্মসূচিতে জোর দিচ্ছে মোর্চা। ৯ অগস্ট থেকে তারা পাহাড়-ডুয়ার্স-তরাই জুড়ে ‘বাংলা মুক্ত’ আন্দোলন চালাবে। দ্বিতীয়ত, শিলিগুড়িতে বেশি করে জিএলপি সদস্য ঢুকিয়ে দিতে চায় তারা। পুলিশ বলছে, এমনই একটি ছেলের সঙ্গে দেখা করতে ভক্তিনগরে এসেছিলেন নরবুজি। তৃতীয়ত, নরবুজির গ্রেফতারির প্রতিবাদ করতে গিয়ে আবার নিজেদের গোর্খাল্যান্ডে আন্দোলনের পুরোধা বলে প্রচার করেন মোর্চা নেতা জ্যোতিকুমার রাই। তিনি বলেন, ‘‘বেছে বেছে মোর্চা নেতাদেরই নিশানা করা হচ্ছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, গোর্খাল্যান্ড নিয়ে কারা সঠিক পথে চলেছে!’’