স্কুল সার্ভিসের পরীক্ষা দিচ্ছেন চাকরিপার্থীরা। —ফাইল চিত্র
কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির স্তরে শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিংয়ের আগেই, সোমবার মেধা-তালিকা প্রকাশ করবে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। তবে পূর্ব ঘোষণা অনুসারে ১৬ জুলাই কাউন্সেলিং শুরু হচ্ছে না। কাউন্সেলিংয়ের সংশোধিত দিনক্ষণ শীঘ্রই ঘোষণা করা হবে বলে শুক্রবার জানান কমিশনের নতুন চেয়ারপার্সন শর্মিলা মিত্র।
কমিশন সূত্রের খবর, একাদশ-কাউন্সেলিং ১৬ জুলাই শুরু করার কথা ছিল। কিন্তু মেধা-তালিকা প্রকাশ না-করেই কী ভাবে কাউন্সেলিং শুরু হতে পারে, সেই প্রশ্ন তুলে মামলা করেন কয়েক জন প্রার্থী। বৃহস্পতিবার বিচারপতি শেখর ববি শরাফ নির্দেশ দেন, আগে মেধা-তালিকা প্রকাশ করতে হবে। পরে কাউন্সেলিং। সেই অনুযায়ী সোমবার তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে এ দিন ওয়েবসাইটে জানায় কমিশন।
এসএসসি সূত্রের খবর, বিধি অনুযায়ী মেধা-তালিকা তৈরি করা শ্রমসাধ্য কাজ। ওই তালিকা তৈরি হয় মূলত চারটি বিষয় মাথায় রেখে। প্রথমত, কোন বিষয়ে কত পদ ফাঁকা। দ্বিতীয়ত, শ্রেণিভিত্তিক শূন্য পদ কত (পুরুষ, মহিলা, সাধারণ, অনগ্রসর, তফসিলি জাতি-উপজাতি প্রভৃতি)। তৃতীয়ত, মোট শূন্য পদ কত। চতুর্থত, ‘ওয়েটিং লিস্ট’-এর প্রার্থী কত। এই চারটি হিসেব কষার পরে ১:১.৪ অনুপাতে (একটি পদ-পিছু ১.৪ জন প্রার্থী) নাম তালিকাভুক্ত করতে হবে।
মেধা-তালিকা প্রকাশ না-করে কাউন্সেলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল কেন? কমিশনের এক কর্তা জানান, মেধা-তালিকায় যাঁদের নাম থাকবে, সেই সব প্রার্থীই চাকরির আশা করে বসবেন, সেই আশঙ্কাতেই ওই তালিকা প্রকাশ করা হয়নি।
এ দিকে, এসএসসি-রই ২০১২ সালের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে শুক্রবার রাজ্য সরকারকে ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। আদালত অবমাননার একটি মামলায় বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ওই নির্দেশ দেন।
আইনজীবী সব্যসাচী ভট্টাচার্য জানান, ২০১২-র ২৯ জুলাই পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়। ওই নিয়োগ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থের মামলা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট ২০১৪-র মার্চে নির্দেশ দেয়, ফলপ্রকাশ স্থগিত থাকবে। তারা মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে ফেরত পাঠায়। হাইকোর্টে মামলার নিষ্পত্তির আগেই আঞ্চলিক ভিত্তিতে মেধা-তালিকা প্রকাশ করে রাজ্য। ২০১৩-য় নিয়োগও শুরু হয়। আইনজীবী জানান, রাজ্যের যুক্তি ছিল, অন্য একটি মামলায় বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের নির্দেশের ভিত্তিতে নিয়োগ শুরু হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের ফেরত পাঠানো মামলা যায় বিচারপতি মুখোপাধ্যায়ের আদালতে। সেখানে আদালত অবমাননার মামলা করেন মেধা-তালিকাভুক্ত বেশ কিছু প্রার্থী।