SSC Recruitment Case Verdict

ওএমআর নম্বর কে পাল্টাল, কেন গাজ়িয়াবাদ

এসএসসি-র কাছে কোনও স্ক্যান কপি বা ‘মিরর ইমেজ’ না-থাকাটা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে, একদা ওই দফতরের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন আধিকারিকের মত।

আর্যভট্ট খান

শেষ আপডেট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:০৭
Share:

— প্রতীকী চিত্র।

তাদের যা পরিকাঠামো, চাইলে ওএমআর শিট স্ক্যান করে অনায়াসে একাধিক প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মূল্যায়ন করতে পারত স্কুল সার্ভিস কমিশন। তবু এসএসসি পরীক্ষার ওএমআর মূল্যায়নের দায়িত্ব গাজ়িয়াবাদের একটি সংস্থার উপরে চাপিয়ে দেয় তারা। কিন্তু সত্যিই ওই সব স্ক্যান করা উত্তরপত্র এসএসসি কর্তৃপক্ষের কাছে ছিল কি ছিল না কিংবা তা নষ্ট করে ফেলা হয়েছে কি না — তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।

এসএসসি-র কাছে কোনও স্ক্যান কপি বা ‘মিরর ইমেজ’ না-থাকাটা বিশ্বাসযোগ্য নয় বলে, একদা ওই দফতরের সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন আধিকারিকের মত। তাঁদের দাবি, এসএসসি-র পরীক্ষার মূল্যায়নের জন্য বাম আমলেই কোটি টাকার একটি বিপুল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন কম্পিউটার কেনা হয়েছিল। ওই কম্পিউটারের সাহায্যে ওএমআর মূল্যায়ন এবং সংরক্ষণ দুটোই করা সম্ভব। ওএমআর শিট স্ক্যান করার জন্য লক্ষাধিক টাকার এক ডজন স্ক্যানারও কেনা হয়। ২০১২ সালের এসএসসি পরীক্ষার পদ্ধতি একটু আলাদা ছিল। কিন্তু কয়েক লক্ষ ওএমআর শিটের স্ক্যান এবং মূল্যায়ন— এসএসসি তার নিজের পরিকাঠামোয় করেছিল বলে সূত্রের খবর।

সূত্রটির মতে, কম্পিউটার, স্ক্যানার রক্ষণাবেক্ষণে হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারও নিযুক্ত করেছেএসএসসি। আছে ডেটা বা তথ্য কম্পিউটার-বন্দি করার আধিকারিকও। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে ২০১৬ সালের ২২ লক্ষ পরীক্ষার্থীর মূল্যায়নে কি কিছুই করেনি এসএসসি। কয়েক জন প্রাক্তন আধিকারিকের মতে, এমনিতেই এসএসসি পরীক্ষা বছর, বছর হয় না। তা হলে কি অত আধুনিক যন্ত্রপাতি শুধু শুধু পড়ে থাকে? এসএসসি কর্তৃপক্ষের পরিকাঠামো তৈরির পিছনে অন্য পরীক্ষার প্রতিযোগিতামূলক ওএমআর শিট স্ক্যান বা মূল্যায়ন করে অর্থ উপার্জনের পরিকল্পনা ছিল বলে সূত্রের খবর। তা হলে কী করে সেই এসএসসি-ই ২০১৬ সালে সব পরীক্ষার্থীর উত্তরের ওএমআর শিট গাজিয়াবাদে পাঠাল?

এ সব নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটলেও এসএসসি-র বিশাল পরিকাঠামোর বিষয়টি কার্যত মেনে নেন এখনকার আধিকারিকেরা। সিবিআই তদন্তে প্রকাশ, গাজিয়াবাদে ওএমআর মূল্যায়নকারী সংস্থার প্রাক্তন আধিকারিকের বাড়ি থেকে ওএমআর-এর যে ‘মিরর ইমেজ’ (স্ক্যান করা উত্তরপত্র) উদ্ধার হয়েছিল, তাতে কিছু ক্ষেত্রে ৫ পাওয়ার যোগ্য পরীক্ষার্থীকেও ৫৫ নম্বর দেওয়া হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, ওই ওএমআরে ৫-কে ৫৫ করল কে? এসএসসির নিজের দফতরেই নম্বরে কারচুপি করে তা ওই মূল্যায়নকারী সংস্থার কাছে পাঠানো হয়নি তো? কারণ, ওএমআর স্ক্যান করে সেই স্ক্যান করা কপি পিডিএফ আঙ্গিকে নিয়ে গিয়ে তা সম্পাদনা করা যায় বলে দাবি।

দিন কয়েক আগে চাকরিহারা শিক্ষকদের সঙ্গে এসএসসি-র বৈঠক হয়। বৈঠকের পরে বেরিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুদাবি করেন, “আগের আমলে পরীক্ষার নথি হারিয়ে ফেলার দায়িত্ব এসএসসি-র এখনকার চেয়ারম্যান নেবেন না। কারণ, তিনি ২০২২ সালে এসেছেন।” কিন্তু এসএসসি-র প্রাক্তন আধিকারিকদের একাংশ মনে করেন, পুরনো পাপের দায়িত্ব না-নিলেও কেন তা ঘটেছিল, তা শিক্ষা দফতরের এখনকার কর্তাদের জানা উচিত। তা হলে প্রশ্ন, কেন তাঁরা কিছু বলছেন না?

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন

এটি একটি প্রিমিয়াম খবর…

  • প্রতিদিন ২০০’রও বেশি এমন প্রিমিয়াম খবর

  • সঙ্গে আনন্দবাজার পত্রিকার ই -পেপার পড়ার সুযোগ

  • সময়মতো পড়ুন, ‘সেভ আর্টিকল-এ ক্লিক করে

সাবস্ক্রাইব করুন