Partha Chatterjee

‘আমি খুব অসুস্থ... আপনি বিচার করুন’, আবার কাঁদো কাঁদো মুখে জামিনের কাতর আর্তি প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের

শুক্রবার আলিপুর আদালতে দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর উঠে দাঁড়ান এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া পার্থ। বলেন, ‘‘আমার ভূমিকা কী? প্রাথমিক বোর্ড কিংবা এসএসসি স্বয়ংশাসিত দফতর।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:০৭
Share:

ফাইল চিত্র।

আবার আদালতে কেঁদে ফেললেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। আবারও করুণ মুখে জামিন চাইলেন তিনি। তাঁর অবস্থা বিবেচনা করতে বললেন বিচারককে।

Advertisement

শুক্রবার আলিপুর আদালতে দু’পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর উঠে দাঁড়ান এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া পার্থ। তিনি বলেন, ‘‘আমার ভূমিকা কী? প্রাথমিক বোর্ড কিংবা এসএসসি স্বয়ংশাসিত দফতর। তারা প্রার্থীদের চয়ন করত। আমি অর্থনীতিতে স্নাতক।’’ এর পর তাঁর পরিবারের অন্যান্যদের পরিচয় তুলে ধরেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তার পর বিচারকের উদ্দেশে বলেন, ‘‘স্যার আমি খুব অসুস্থ। কে আমাকে সাহায্য করবে? সারা দিন অনেক ওষুধ খাই।’’ করুণ মুখে পার্থ বলেন, ‘‘বিচারের প্রতি আস্থা রাখছি। আপনি আপনার মতো বিচার করবেন। আপনার কাছে বিচারের আশায় আছি।’’

শুক্রবার পার্থকে নিজেদের হেফাজতে চায় সিবিআই। তাদের দাবি, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতিতে মূল অভিযুক্ত আসলে পার্থ চট্টোপাধ্যায়। রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীকে নিজেদের হেফাজতে চেয়ে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করতে চায় তারা। আদালতে পার্থের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ আনেন তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। অন্য দিকে, পার্থের আইনজীবীর দাবি, তাঁর মক্কেল তো জেল হেফাজতেই রয়েছেন। আবার আলাদা করে তাঁকে গ্রেফতারি কেন?

Advertisement

দীর্ঘ সওয়াল-জবাবের সময় সিবিআই জানায়, এসএসসি দুর্নীতি মামলায় যে পাঁচ জনের নামে এফআইআর হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে তিন জনই গ্রেফতার হয়েছেন। তার পর পার্থের আইনজীবী দাবি করেন, সিবিআই একাধিক বার তাঁর মক্কেলকে হাজিরার জন্য ডেকেছে। কিন্তু এই মামলায় এক বারও ডাকেনি। তিনি দাবি করেন, পার্থ এখন জেল হেফাজতেই রয়েছেন। তাই আলাদা করে কেন তাঁকে গ্রেফতার করতে চাইছে সিবিআই! প্রাক্তন মন্ত্রীকে জেলে গিয়েই জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়। ওই সময় দেখা যায়, পার্থ উঠে এসে তাঁর আইনজীবীকে কিছু একটা বলছেন।

পার্থের সঙ্গে কথা বলার পর তাঁর আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেলকে জামিন দিলেও সিবিআই নিজেদের কাজ করতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যে এই একই মামলায় তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এখন তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। দু’পক্ষের সওয়াল জবাবের মধ্যে বিচারক প্রশ্ন করেন, পুরো দুর্নীতির ঘটনায় কি পার্থের কোনও হাত নেই বলে বলতে চাইছেন তাঁর আইনজীবী? এর প্রেক্ষিতে পার্থের আইনজীবী জবাব দেন, ‘‘ওঁর পিছনে কিছু হলে উনি কী করবেন? সমাজের প্রতি পার্থের দায়বদ্ধতা প্রমাণিত। সমাজের প্রতি ওঁর অবদান রয়েছে। তা ছাড়া অভিযোগও এখনও প্রমাণিত নয়। উনি কোথাও পালিয়েও যাচ্ছেন না। তা হলে গ্রেফতারের কী প্রয়োজন?’’

সওয়াল-জবাবের শেষ পর্যায়ে পার্থের আইনজীবী জানান, তাঁর মক্কেল কিছু বলতে চান। বিচারক অনুমতি দেন। ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ান পার্থ। তার পর বলেন, ‘‘আমার ভূমিকা কী (দুর্নীতি মামলায়)? প্রাথমিক বোর্ড কিংবা এসএসসি স্বয়ংশাসিত দফতর। তারা প্রার্থীদের চয়ন করত... আমি অর্থনীতিতে স্নাতক।’’ পরিবারের অন্যান্যদের পরিচয় তুলে ধরেন প্রাক্তন মন্ত্রী। তার পর বিচারকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘স্যার, আমি খুব অসুস্থ। কে আমাকে সাহায্য করবে? সারা দিন অনেক ওষুধ খাই।’’ তার পর করুণ মুখে তিনি বলেন, ‘‘বিচারের প্রতি আস্থা রাখছি। আপনি আপনার মতো বিচার করবেন। আপনার কাছে বিচারের আশায় আছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন