Partha Chatterjee

WBSSC Scam: হেফাজত বনাম জামিন! পার্থ-অর্পিতার শুনানিতে যুক্তি, পাল্টা যুক্তি, কী কী উঠে এল

বুধবার দুপুরে বিশেষ ইডি আদালতে তোলা হয় পার্থ-অর্পিতাকে। পার্থকে হেফজতে রাখা নিয়ে রীতিমতো বাদানুবাদ হয় দু’পক্ষের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২২ ২০:০১
Share:

পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।

সওয়াল জবাবে জোরদার ছিল দু’পক্ষেরই যুক্তি। এসএসসি দুর্নীতিতে অভিযুক্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আইনজীবীরা চেয়েছিলেন, বুধবারই জামিন দেওয়া হোক প্রাক্তন মন্ত্রীকে। কারণ তাঁর বাড়ি থেকে ‘তেমন কিছুই পাওয়া যায়নি’। তাঁর বিরুদ্ধে তেমন প্রমাণও নেই। উল্টো দিকে ইডির বক্তব্য ছিল, পার্থকে জিজ্ঞাসাবাদের যথেষ্ট সুযোগ কোথায় পেলেন ইডির আধিকারিকরা। তিনি তো গ্রেফতার হওয়ার পরের ক’দিন হাসপাতালেই ছিলেন!

Advertisement

শেষ পর্যন্ত অবশ্য আদালত পার্থকে তিন দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু দু’পক্ষের যুক্তি এবং তর্কে উঠে আসে একাধিক তথ্য। কী কী জানা গেল তা থেকে?

আদালতে পার্থের চার দিনের হেফাজত চেয়েছিল ইডি। পার্থের আইনজীবীরা বলেন, পার্থের বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ না পেয়েও ইডি গত ১০ দিন ধরে টানা জেরা করে গিয়েছে প্রাক্তনমন্ত্রীকে। এর পরও তাঁকে হেফাজতে চাওয়া হচ্ছে কেন?

Advertisement

ইডির জবাব— তদন্তে অর্পিতা সহযোগিতা করলেও পার্থ সে ভাবে করেননি। তাই ওঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।

পার্থের আইনজীবী— যদি নজরদারি করতে হয়, তবে তা প্যান কার্ডের মাধ্যমেও করা যায়। অ্যাকাউন্টেও নজর রাখা যায়। ইডি যদি একান্তই হেফাজত চায় এবং আদালত অনুমতি দেয় তবে বড় জোর দু’দিন হেফাজতে রাখা যেতে পারে পার্থকে তাঁর বেশি নয়।

ইডি— অর্পিতা তদন্তে প্রথম থেকেই সহযোগিতা করছেন কিন্তু পার্থ করছেন না।

পার্থের আইনজীবী— সহযোগিতা করছেন না মানে কি? ওঁরা কি চাইছেন উনি স্বীকার করে নিন, উনিই ভুল করেছেন? ওঁর বয়স ৭২। ওঁর নিজের পদের উপরেই নিয়ন্ত্রণ নেই। ওঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। উনি একজন সাধারণ মানুষ। উনি কী ভাবে এই ধরনের অপরাধ করতে পারেন?

ইডি— অনেক বড় কেলেঙ্কারি এটা। রোজই কিছু না কিছু উদ্ধার হচ্ছে। তা ছাড়া ওঁকে তো প্রথম কয়েকদিন জিজ্ঞাসাবাদ করাই যায়নি। উনি তো গ্রেফতার হওয়ার পরই হাসপাতালে চলে গিয়েছিলেন।

পার্থের হেফাজত চেয়ে এর পর ইডি জানায়, দু’জনের নামে একাধিক সম্পত্তি পাওয়া গিয়েছে। দু’জনের মধ্যে ৫০ শতাংশ অংশীদারিত্বে থাকা সংস্থার নথিও পাওয়া গিয়েছে তল্লাশিতে। ৯টা ফ্ল্যাট রয়েছে। অর্পিতার নামে ৩১ টি বিমার নমিনি হিসেবে নাম রয়েছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। ওঁকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।

এর পরই আদালত তার নির্দেশে জানায়। পার্থ এবং অর্পিতা দু’জনকেই আরও তিন দিন হেফাজতে রাখতে পারবে ইডি। বুধবার দুপুর তিনটের সময় এজলাসে আনা হয়েছিল পার্থ-অর্পিতাকে। সওয়াল জবাব চলে সাড়ে ৫টা অবধি। পৌনে ৭টা নাগাদ রায় ঘোষণা করে আদালত। তার পরই অর্পিতা এব‌ং পার্থকে নিয়ে সিজিও কমপ্লেক্সের দিকে রওনা হন ইডির আধিকারিকরা। ৫ অগস্ট ফের আদালতে তোলা হবে দু’জনকেই।

উল্লেখ্য, রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ এবং তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতাকে যথাক্রমে গত ২৩ জুলাই এবং ২৪ জুলাই রাতে গ্রেফতার করেন ইডির তদন্তকারীরা। তার আগে পার্থের বাড়িতে টানা ২৭ ঘণ্টা ধরে চলে ইডির তল্লাশি অভিযান। সেখান থেকে অর্পিতার নামে বেশ কিছু সম্পত্তির নথি পেয়েউ ইডির আধিকারিকরা যান অর্পিতার ফ্ল্যাটে এবং উদ্ধার করেন কোটি কোটি টাকা। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের বেশ কিছু খামও উদ্ধার হয় অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে। এর পরই ইডি জানায়, অর্পিতা পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ এবং এসএসসি দুর্নীতিতেও জড়িত। পার্থ এবং অর্পিতাকে গ্রেফতার করে ১০দিনের জন্য হেফাজত নেয় ইডি। যার মেয়াদ বুধবার শেষ হয়। তবে ইডি সূত্রে খবর এই দশদিনে পার্থকে অনেক প্রশ্ন করা হলেও কোনও সন্তোষজনক উত্তর মেলেনি। বরং পার্থ নাকি ইডিকে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি সময় এলেই সব বলবেন। কিন্তু গত ১০দিনে সেই ‘সময়’ আসেনি বলেই ইডি সূত্রে খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন