ফাইল চিত্র
ভোটের ঢাক বাজল বলে!
তাই গত ২৪ ঘণ্টায় তিনশোর বেশি প্রকল্পের প্রশাসনিক ও আর্থিক অনুমোদন দিল রাজ্যের বিভিন্ন দফতর। প্রশাসন সূত্রের খবর, এখনও প্রায় ১০০টি প্রকল্পের অনুমোদন বাকি। শুক্রবারের মধ্যে সেই প্রকল্পগুলিরও ওয়ার্ক অর্ডার দিতে নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। বিধানসভা ভোটের আগে কাজ শেষ করার এমন তৎপরতা নজরকাড়া বলে মানছেন নবান্নের কর্তাদের একাংশ। গত এক মাসে সরকার যে দ্রুততায় প্রকল্প নির্বাচন এবং তাতে ছাড়পত্র দিয়েছে তা বেসরকারি সংস্থাকেও হার মানাবে বলে ওই কর্তাদের দাবি।
নবান্ন সূত্রের খবর, মহল্লায় মহল্লায় ছোট ছোট প্রকল্পের দ্রুত সমাধানের জন্য সরকার পাড়ায় সমাধান বলে অভিযান শুরু করেছে। সেই অভিযান থেকেই ১০ হাজার ১৮০টি প্রকল্পের আবেদন জমা পড়ে! প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, আজ, শুক্রবারের মধ্যে সমস্ত প্রকল্পের ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হবে। যার আর্থিক মূল্য ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে জানা গিয়েছে। কর্তাদের দাবি, এর পরে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে ভোট ঘোষণা হয়ে গেলেও কাজের কোনও অসুবিধা হবে না। ভোটের প্রচারও চলবে আর পাড়ায় পাড়ায় ‘উন্নয়ন’ও চলবে।
সরকারি সূত্রের দাবি, পাড়ায় সমাধান অভিযানে এখন ৩৮০২টি প্রকল্পের কাজ চলছে। ২৩৬২টি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০ হাজার ১৮০টি প্রকল্পের কাজ হওয়ার কথা। সরকারি কর্তারা গ্রামে-শহরে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ এসেছে পঞ্চায়েত ও পুরসভাগুলির বিরুদ্ধে। প্রায় ৩৫ ভাগ প্রকল্প করতে হয়েছে পঞ্চায়েত ও পুর এলাকাতেই। এছাড়া স্কুল শিক্ষা, জনস্বাস্থ্য কারিগরী, বিদ্যুৎ দফতরের কাজ নিয়েও নানা চাহিদা ছিল।
কর্তারা জানাচ্ছেন, শেষ পর্যায়ে ৪০৬টি প্রকল্পের কাজ আটকে ছিল। দু’দিন আগে স্বরাষ্ট্র সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী বিভিন্ন দফতরের সচিবদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত প্রকল্পের প্রশাসনিক ও আর্থিক অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দেন। তার পরেই এক দিনে তিনশোর বেশি প্রকল্পে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। যে ১০০টি প্রকল্প এখনও আটকে রয়েছে সেগুলি ঠিক কোন দফতরের তা নিয়ে সংশয় ছিল। সে সব মিটিয়ে আজ-কালের মধ্যে তারও অনুমোদন দেওয়া হবে বলে কর্তারা জানাচ্ছেন।
প্রশ্ন উঠেছে, সরকার এক মাসে ৯০০ কোটি টাকার কাজের বরাত দিল কী ভাবে? দরপত্র ডেকে সব কাজের বরাত দেওয়া কি হয়েছে? কর্তারা জানাচ্ছেন, অধিকাংশ প্রকল্পই ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। বেশিরভাগ প্রকল্পের মূল্যমান ৫ লক্ষ টাকার কম। ফলে দরপত্রের কড়াকড়ি ততটা নেই। কিন্তু এত টাকা কোথা থেকে আসবে? কর্তাদের দাবি, করোনার কারণে চলতি বছরে রোজগার যেমন কম হয়েছে তেমনই দীর্ঘ লকডাউনের ফলে খরচও কম হয়েছে। এখন রোজগার বেড়েছে। ফলে ১০ হাজার প্রকল্পের জন্য ৯০০ কোটি টাকা জোগাড়ে সমস্যা হবে না। এই খরচের একাংশ কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা থেকেও খরচ করা হবে।