Mamata Banerjee

Nabanna: দুই লক্ষ্যে বঙ্গে জন্ম-মৃত্যু নিয়ে অভিন্ন পোর্টাল

মূলত জোড়া লক্ষ্যে এ বার জন্ম-মৃত্যুর একটি অভিন্ন তথ্য ভান্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২২ ০৫:৫৪
Share:

ফাইল চিত্র।

পাখির চোখ একটি নয়, দু’টি। প্রথমত, জন্ম-মৃত্যুর যথাযথ খতিয়ান রাখা। দ্বিতীয়ত, যথার্থ প্রাপকদের কাছে কল্যাণ প্রকল্পের সাহায্য পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি ভুয়ো বা নকল উপভোক্তা যথাসম্ভব ছেঁটে ফেলা।

Advertisement

মূলত এই জোড়া লক্ষ্যে এ বার জন্ম-মৃত্যুর একটি অভিন্ন তথ্য ভান্ডার তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। পরের পর কল্যাণ প্রকল্পে সরকারের খরচের বোঝা বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে উপভোক্তার সংখ্যাও। আবার ভুয়ো বা নকল উপভোক্তারা আর্থিক বোঝা বাড়াচ্ছে সরকারের। অনেক মৃত ব্যক্তির নামেও বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা আত্মসাৎ করে চলেছে এক শ্রেণির সুযোগসন্ধানী। সেই সব ভুয়ো উপভোক্তা

চিহ্নিত করে কোষাগারের স্বাস্থ্যরক্ষাও জন্ম-মৃত্যুর তথ্য ভান্ডার তৈরির অন্যতম লক্ষ্য।

Advertisement

অনেক প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকের ধারণা, বৈদ্যুতিন পোর্টালে সঙ্কল্পিত তথ্য ভান্ডার গড়ে উঠলে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলির শংসাপত্র পেতে যেমন সুবিধা হবে, তেমনই সরকারের কাছে থাকবে জন্ম-মৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ হিসেব। সর্বোপরি এতে কল্যাণ প্রকল্পের উপভোক্তার তালিকা পরিমার্জনও হবে নিখুঁত ভাবে। হাওড়া ও মালদহে এই পোর্টালের পরীক্ষামূলক ব্যবহার শুরু হয়ে গিয়েছে। খুঁটিনাটি সব প্রস্তুতি চূড়ান্ত হয়ে গেলে পোর্টালটি সরকারি ভাবে প্রকাশ্যে আনা হবে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, জন্ম-মৃত্যু নথিভুক্ত করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পোর্টাল থাকলেও রাজ্যের তেমন নিজস্ব পোর্টাল ছিল না। তাই এই বিষয়ে নিখুঁত একটি তথ্য ভান্ডারের প্রয়োজন অনুভব করছে রাজ্য। জন্ম-মৃত্যুর দৈনিক সব তথ্য ঠিক সময়ে আপলোড করার সুবিধাযুক্ত সেই পোর্টাল পুরসভা-পঞ্চায়েতের মতো স্থানীয় প্রশাসন থেকে বেসরকারি হাসপাতাল স্তর পর্যন্ত ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এখন সরকারি হাসপাতালে জন্ম বা মৃত্যুদের তথ্য আপলোড হয় কেন্দ্রের পোর্টালে। নতুন ব্যবস্থায় সেই সুযোগ অপরিবর্তিত থাকবে। তবে এ বার বেসরকারি হাসপাতাল জন্ম-মৃত্যুর তথ্য আপলোড করতে পারবে রাজ্যের পোর্টালেও। সেখানে পুরসভা-পঞ্চায়েতের মতো স্থানীয় প্রশাসনকেও নিয়মিত এই তথ্য ‘আপডেট’ বা হালতামামি করার কাজ চালিয়ে যেতে হবে। বাড়িতে শিশু ভূমিষ্ঠ হলে বা কেউ মারা গেলে স্থানীয় আশাকর্মী-স্বাস্থ্যকর্মীরা তা পুরসভা-পঞ্চায়েতে জানালে সেই তথ্য পৌঁছে যাবে সংশ্লিষ্ট পোর্টালে। আবার সাধারণ মানুষও শংসাপত্রের জন্য বা তার সংশোধনের জন্য আবেদন করতে পারবেন সেই পোর্টালের মাধ্যমে। কোনও পুরসভা বা পঞ্চায়েত যদি জন্ম বা মৃত্যুর তথ্য আপলোড না-করে, উপভোক্তার সেই আবেদনের সূত্রে তা-ও ধরা পড়ে যাবে।

স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডারের মতো প্রকল্পের পাশাপাশি বয়স্ক, বিধবা বা জাতিগত পেনশনের পরিধি ক্রমশ বেড়েছে। উপভোক্তাদের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। এই সব সামাজিক খাতে বড় অঙ্কের অর্থ বরাদ্দ করতে হচ্ছে সরকারকে। কিন্তু ক’জন ওই সব প্রকল্পের উপভোক্তা হওয়ার যোগ্য দাবিদার, তা যাচাই করা জরুরি বলে মনে করছে সরকার। সেই জন্যই আধার যোগের মাধ্যমে ‘ভুয়ো’ উপভোক্তা খোঁজার কাজ চলছে সমান্তরালে। ইতিমধ্যে সক্রিয় ডিজিটাল রেশন কার্ড রয়েছে, এমন লক্ষাধিক মৃত ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, মৃত্যুর নিখুঁত তথ্য সরকারের অভিন্ন তথ্য ভান্ডারে সব সময় থাকে না বলে বিভিন্ন প্রকল্পে মৃত ব্যক্তিদেরও সহজেই উপভোক্তা হিসেবে দেখিয়ে তাঁর প্রাপ্য সুবিধা আত্মসাৎ করা হচ্ছে। প্রায় সব প্রকল্পের জন্যই আধার যোগ বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। সেই কাজ সম্পন্ন হয়ে গেলে ‘নকল’ উপভোক্তাদের উপস্থিতি এড়ানো সম্ভব। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, মৃতদের নাম আধার তালিকা থেকে বাদ যায় না। তাই সরকারের কাছে প্রতিনিয়ত সংশোধনের সুযোগ থাকার মতো তথ্য ভান্ডার থাকলে মৃত ব্যক্তিদের নাম উপভোক্তার তালিকা থেকে সহজেই বাদ দেওয়া সম্ভব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন