সুরক্ষায় বিশেষ নজর

অ্যাসিড-বোমা নিয়ে হামলার ছক বঙ্গে, ধৃত ২

গুলি বা আইইডি বিস্ফোরণ নয়, জেলবন্দি জেএমবি জঙ্গি কওসরকে ছিনিয়ে নিতে অ্যাসিড-বোমাকে হাতিয়ার করার ষড়যন্ত্র করেছিল জেএমবি জঙ্গিরা। সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগেই রঘুনাথগঞ্জ থেকে মসিবুর ও রুহুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৩৭
Share:

রুহুল আমিন ও মসিবুর রহমান।

কাশ্মীরকে ঘিরে সাম্প্রতিক যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষাও বিপন্ন হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দাকর্তারা। কেননা কয়েকটি জঙ্গি গোষ্ঠী এ রাজ্যেও তৎপর। বুধবারেই মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জে মসিবুর রহমান ও রুহুল আমিন নামে জামাত-উল-মুজাহিদিন (বাংলাদেশ) জঙ্গি গোষ্ঠীর দুই সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)।

Advertisement

গুলি বা আইইডি বিস্ফোরণ নয়, জেলবন্দি জেএমবি জঙ্গি কওসরকে ছিনিয়ে নিতে অ্যাসিড-বোমাকে হাতিয়ার করার ষড়যন্ত্র করেছিল জেএমবি জঙ্গিরা। সেই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকার অভিযোগেই রঘুনাথগঞ্জ থেকে মসিবুর ও রুহুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, রাজ্যে অ্যাসিড-বোমা নিয়ে হামলা চালানোর কথা আগে কখনও শোনা যায়নি। ধৃতদের কাছ থেকে অ্যাসিড-বোমা তৈরির জিনিসপত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। কওসরকে জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্ত করার অভিযোগে সম্প্রতি আরিফুল ইসলাম নামে এক জঙ্গিকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তখনই অ্যাসিড-বোমা নিয়ে হামলার ষড়যন্ত্রের কথা জানা যায়।

জঙ্গিদের তৎপরতার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের অতিরিক্ত ডিরেক্টর জেনারেল নীরজ সিংহ কয়েকটি মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম উল্লেখ করে রাজ্যের সব জেলার পুলিশ সুপার ও কমিশনারের কাছে বিশেষ সতর্কতার চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই গোয়েন্দাকর্তার কথায়, ‘‘বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীর পান্ডারা নানা ভাবে হামলা ও নাশকতা চালাতে পারে।’’

Advertisement

এসটিএফ-কর্তারা জানাচ্ছেন, মসিবুর ও রুহুল খাগড়াগড়ের বিস্ফোরণ-কাণ্ডের মূল চক্রী কওসরের ঘনিষ্ঠ। কওসর এখন এ রাজ্যেই জেল হেফাজতে রয়েছে। গোয়েন্দা দফতরের এডিজি জানান, রাজ্যে বেশ কয়েকটি মৌলবাদী জঙ্গি গোষ্ঠী সক্রিয়। কলকাতা পুলিশের এসটিএফ সম্প্রতি জামাত-উল-মুজাহিদিন (বাংলাদেশ) গোষ্ঠীর দুই পান্ডাকে গ্রেফতার করেছে। এসটিএফের খবর, শহর এলাকায় নাশকতা ও বোমা বিস্ফোরণের ছক কষেছিল ওই দুই জঙ্গি। কওসরকে জেল থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যেতেও সক্রিয় হয়েছিল তারা।

বিভিন্ন মৌলবাদী সংগঠনের সদস্যেরা অস্থিরতা সৃষ্টির জন্য রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দা অফিসারেরা। নীরজ বলেন, ‘‘এই অবস্থায় সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশেষ নজরদারির সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতির উপরে তীক্ষ্ণ নজরদারি প্রয়োজন। তাই পুলিশের বড় কর্তাদের বিশেষ ভাবে সজাগ করা হয়েছে।’’ শুধু নিচু তলার কর্মীদের পরিচালনা করলেই হবে না। বড় কর্তাদের সরাসরি মাঠে নেমে পরিস্থিতির উপরে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন গোয়েন্দাকর্তারা। গত কয়েক বছরে যে-সব এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বড় ধরনের অবনতি হয়েছিল বা যে-সব এলাকায় গোষ্ঠী-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল, সেখানে অতন্দ্র নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। ওই সব জায়গার খুঁটিনাটি খবর রাজ্য গোয়েন্দা দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ সুপার ও কমিশনারদের। তা ছাড়া সীমান্তবর্তী এলাকায় বিএসএফ বা সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাশাপাশি পুলিশ-থানার মাধ্যমে কড়া নজরদারি চালানোর সুপারিশ করা হয়েছে ওই চিঠিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন