সাতসকালে গামছা গায়ে দিয়ে এলাকায় টহল দিতে বেরনো, তাঁর বরাবরের অভ্যাস। অসুস্থতার পরে সেটা অনিয়মিত হলেও পুরোপুরি ছেদ পড়েনি।
মন্ত্রিত্ব পাওয়ার পর আরও একটি ব্যবস্থা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছিলেন নবদ্বীপের চার বারের বিধায়ক পুণ্ডরীকাক্ষ সাহা। নিজের গাড়ি নেই। কিন্তু মন্ত্রী হিসেবে পাওয়া গাড়ির সামনের আসনে সওয়ার হননি কখনও। সেখানে রাখা থাকত দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রমাণ মাপের ফ্রেম বন্দি ছবি। কিন্তু শেষপর্যন্ত এই ‘আনুগত্য’ কাজে এল না। তৃণমূলের দ্বিতীয় দফার সরকারে মন্ত্রী থাকছেন না নবদ্বীপের নন্দ সাহা। তাঁর অনুগামীরা হতাশ হলেও তিনি নিজের মুখে হতাশা প্রকাশ করেনি।
আশঙ্কাটা অবশ্য অনেক দিন ধরেই ছিলই। তিনি যে এ বার মন্ত্রী হবেন না, তা জেলা তৃণমূলের অলিন্দে ঘোরাফেরা করছিল দীর্ঘদিন ধরেই। কারণ, বেশ কিছুদিন ধরেই তিনি অসুস্থ। ফলে, তিনি যে মন্ত্রী হবেন না, তা ছিল জেলা রাজনীতির
প্রকাশ্য গোপন খবর। তাঁর অনুগামীরা মনে করছেন, অসুস্থতার কারণে পিছিয়ে পড়লেন তাঁদের দাদা। এক সময় খোয়াতে হয়েছিল জেলা সভাপতির পদ। কিন্তু বদলে পেয়েছিলেন মন্ত্রিত্ব। এ বারে তিনি শুধুই বিধায়ক।
গাড়ির সামনের আসনে নেত্রীর ছবি বসানো নিয়ে দলে কম হাসাহাসি হয়নি। কিন্তু তাঁকে দমানো যায়নি। তাঁর অনুগামীদের শেষ আশা ছিল সেটাই। গত বারও তিনি প্রথমে মন্ত্রী হননি। পরে তাঁকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তাঁর অনুগামীরা এখনও আশায়। বলছেন, ‘‘পরে কিন্তু শিকে ছিঁড়তেই পারে।’’
পুণ্ডরীকাক্ষবাবু বলছেন, ‘‘এ বার নতুন এবং পুরনো মুখ মিশিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করছেন আমাদের নেত্রী। সবটাই করছেন বাংলার উন্নয়নের জন্য। আমার মন্ত্রী হওয়াটা বড় কথা নয়।’’ যদিও জেলার বিভিন্ন প্রান্তে থাকা তাঁর অনুগামীদের আশঙ্কা, গোষ্ঠী রাজনীতিতে এ বার তাঁরা কোনঠাসা হয়ে পড়বেন।