সিঁথির কারখানার সামনে ধর্মঘটী কর্মীদের সঙ্গে তৃণমূল সমর্থকদের বচসা। —নিজস্ব চিত্র
শ্রমিক সংগঠনগুলির ডাকা ধর্মঘটের শরিক হয়ে দু’দিন কারখানার কাজে আসেননি ওঁরা। কিন্তু, বৃহস্পতিবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে বাধা পেলেন। কর্মস্থলে ঢুকতে দেওয়া হল না সিঁথি এলাকার একটি কারখানার কয়েক জন কর্মীকে।
ওই কর্মীদের অভিযোগ,এ দিন সকাল থেকেই তৃণমূল কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র বহিরাগত কয়েক জন কর্মী এবং নেতা ওই কারখানার গেটের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা ধর্মঘটীদের কারখানায় ঢুকতে দেননি।
এ দিন সকালে ঘটনাটি ঘটেছেকলকাতা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের সিঁথি এলাকায়। অ্যালবার্ট ডেভিড নামে ওই কারখানায় ওষুধ বানানোর রাসায়নিক তৈরি করা হয়। সেখানে প্রায় ৮০ জন কর্মী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৩৪ জন ধর্মঘটে সামিল হয়ে গত দু’দিন কারখানায় যাননি। অভিযোগ, এদিন তাঁরা কাজে যোগ দিতে গিয়ে দেখেন দলবল নিয়ে কারখানার গেটে দাঁড়িয়ে আছেন ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সৃজন বসু। কারখানার সিটু সমর্থক এক কর্মী তরুণ নাহা রায় বলেন,“আমরা সকাল ন’টায় কারখানায় পৌঁছই। গিয়ে দেখি, এলাকার কিছু তৃণমূল নেতা কর্মী গেটের সামনে দাঁড়িয়ে। ওঁরা ওই কারখানায় কাজও করেন না।কিন্তু, আমাদের কারখানায় ঢুকতে বাধা দেন।”
তিনি আরও জানান, বাধা পেয়ে তাঁরা কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনও সহায়তা করেননি। ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়েছিলেন সিঁথি থানার কয়েক জন পুলিশ কর্মী। তাঁদের সামনেই ওই কর্মীদের বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই কর্মীরা পুলিশের কাছে সহায়তা চাইলে তাঁরা ঘটনাস্থল থেকে চলে যান।সিটুর রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য দেবাশিস রায় বলেন, “ধর্মঘটে সামিল হওয়া ৩৪ জন কর্মী এ দিন কারখানায় ঢুকতে গেলে তাঁদের ঠেলে, ধাক্কা দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।তাঁদের মধ্যে কয়েকজন মহিলা কর্মীও ছিলেন।”
ধর্মঘটী কর্মীকে কারখানায় ঢুকতে বাধা দিচ্ছেন সিঁথির তৃণমূল নেতা সৃজন বসু। —নিজস্ব চিত্র
আরও পড়ুন: চিটফান্ড তদন্তে সক্রিয় হচ্ছে সিবিআই, তলব করা হতে পারে প্রভাবশালীদের
যে তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই সৃজন বসুকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে বলেন,“ ওঁরা গত কয়েকদিন ধরেই এই এলাকায় ধর্মঘটের নামে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছিলেন। এ দিন আমরা কয়েক জন কারখানার গেটের সামনে এমনিই দাঁড়িয়েছিলাম। ওঁরা এসেছিলেন। তার পর নিজেরাই চলে গিয়েছেন। হয়তো নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে অনুতপ্ত হয়ে চলে গিয়েছেন। আমরা কাউকে বাধা দিইনি।”যদিও কাজে যোগ দিতে না পারা কর্মীরা অভিযোগ করেছেন, আগামী দু’দিন তাঁদের কারখানায় না যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
আরও পডু়ন: কাজ না পেলেও সমস্ত নাগরিককে ন্যূনতম বেতন! চালু করার পথে সিকিম
এ দিনের ঘটনার পর দেবাশিস রায় বলেন, ‘‘আমরা সাংগঠনিক ভাবে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করব। কারণ আমাদের আশঙ্কা, ওই কর্মীরা থানায় গেলে ফের নিগ্রহের শিকার হতে পারেন।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, এই সৃজন বসুকে ২০১৭ সালে বিধাননগর কমিশনারেট এলাকায় এক বার গ্রেফতার করা হয়েছিল। আইন ভেঙে চালানোর দায়ে তাঁর গাড়ি আটক করেছিলেন কর্তব্যরত একসিভিক ভলান্টিয়ার। কিন্তু, সেই ভলান্টিয়ারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে সেই সময় সৃজনকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ।