প্রশ্ন এলেই জবাব দিত ‘খোকাবাবু’

মাধ্যমিকে রোজ রোজ প্রশ্নফাঁস হওয়ার ধাক্কায় তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। গোয়েন্দা কর্তারা তদন্তে নেমে এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের খোঁজ পান।

Advertisement

অভিজিৎ সাহা

শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:০৪
Share:

মাধ্যমিকে রোজ রোজ প্রশ্নফাঁস হওয়ার ধাক্কায় তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। ছবি: সংগৃহীত।

‘খোকাবাবু’ নামে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। গ্রুপের এক সদস্যের দাবি, তাতে সদস্য সংখ্যা কমবেশি দেড়শো। এ বারের মাধ্যমিকে পরীক্ষা শুরুর দশ মিনিটের মধ্যে সেই গ্রুপে চলে আসত সে দিনের প্রশ্নপত্র, দাবি ওই সদস্যের। তিনি আরও জানান, তার পরেই দ্রুত উত্তর লিখে পাঠিয়ে দিতে হত গ্রুপের মাধ্যমে।

Advertisement

মাধ্যমিকে রোজ রোজ প্রশ্নফাঁস হওয়ার ধাক্কায় তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। গোয়েন্দা কর্তারা তদন্তে নেমে এই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের খোঁজ পান। বুধবার ভোরে ‘খোকাবাবু’ গ্রুপের অন্যতম সদস্য মালদহের কালিয়াচক থানার নয়াগ্রামের বাসিন্দা এক উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করে সিআইডি। ফলে সিআইডির জালে প্রশ্নফাঁস কাণ্ডে ধৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ছয়।

এই সদস্যই এ দিন জানান ‘খোকাবাবুদের’ কীর্তিকাহিনি। গত বছর ময়নাগুড়ির এক স্কুলে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ ওঠে। এ বারে তাই সব দিক আঁটোসাঁটো করতে একাধিক পদক্ষেপ করে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। তার পরে রোজ রোজ প্রশ্নফাঁসের ধাক্কায় তাকে ‘ফস্কা গেরো’ই বলছেন অনেকে। এ বারে শিক্ষকদেরও মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাওয়ার নিয়ম ছিল না। । তার পরেও রোজ প্রশ্ন হোয়াটসঅ্যাপে চলে আসায় গোড়ায় গলদ ছিল বলেও অনেকে দাবি করেছেন।

Advertisement

গ্রুপের ধৃত সদস্য জানিয়েছেন কী ভাবে এই ফাঁসের কারবার চলত। তাঁর কথায়, পরীক্ষা শুরুর মোটে দশ মিনেটের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে মোবাইলের মাধ্যমে প্রশ্ন বেরিয়ে যেত। সেই প্রশ্ন পড়ে ওই গ্রুপেই জবাব লিখে দিতেন তাঁদের মতো অনেকে। ওই ধৃতের দাবি, তিনি নিজে বিজ্ঞানের ছাত্র। তাই বিজ্ঞানের প্রশ্নের জবাব লিখতেন। তবে বিনিময়ে কোনও টাকাপয়সা পাননি বলে দাবি তাঁর।

ওই ধৃতের আরও দাবি, খোকাবাবু গ্রুপে শিক্ষকদের থাকার সম্ভাবনাও রয়েছে। বস্তুত, গ্রুপে যে ভাবে প্রশ্নের জবাব লিখে দেওয়া হত, তা দেখে এই সন্দেহ করেছেন অনেকেই। তাঁদের প্রশ্ন, শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ না থাকলে পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল ক্লাসঘরে ঢোকে কী করে? সিআইডির কর্তাদেরও একই সন্দেহ। সিআইডির এক কর্তা বলেন, ‘‘প্রাথমিক তদন্তে দেখা গিয়েছে, একাংশ ছাত্র প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে। আর একাংশ উত্তর তৈরি করে গ্রুপে দিচ্ছে। তবে মোবাইল নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে স্কুলগুলির মদত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement