পার্থ চট্টোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
কোনও মন্ত্রী বা দলের নেতা সুপারিশ করলেও অনলাইন ছাড়া কলেজে ছাত্র ভর্তির তদ্বির করা যাবে না বলে তৃণমূল ছাত্র পরিষদকে কড়া নির্দেশ দিলেন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
কলেজে টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তিতে হামেশাই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) নাম জড়িয়েছে। এ বছর আর যাতে দলের সংগঠনের বিরুদ্ধে এ ধরনের কোনও অভিযোগ না ওঠে, সে জন্য টিএমসিপি নেতৃত্বকে আগাম সতর্ক করে দিলেন পার্থবাবু। কলেজে ভর্তির মরসুম শুরু হতেই টিএমসিপির রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্তকে ডেকে পার্থবাবুর কড়া হুঁশিয়ারি, কোনও নেতা-মন্ত্রী বা ‘ওজনদার’ ব্যক্তি কোনও ছাত্রকে কলেজে ভর্তির জন্য মৌখিক ভাবে সুপারিশ করলে বা ‘চাপ’ দিলেও কোনও ভাবে নতিস্বীকার করা যাবে না। কোনও নেতা তাঁর নাম-পদ লেখা প্যাডে লিখিত ভাবে কাউকে ভর্তির সুপারিশ করলে তা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়ে দিতে পার্থবাবু টিএমসিপিকে নির্দেশ দিয়েছেন।
দলীয় সংগঠনকে কড়া হুঁশিয়ারির পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী বুধবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন, ‘‘কোনও কলেজেই অনলাইনের বাইরে বা আসনের থেকে বেশি ছাত্র ভর্তি করা যাবে না। এ ব্যাপারে কেউ যাতে কোনও ভাবে হস্তক্ষেপ না করে, সে জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকেই সতর্ক করা হয়েছে।’’ প্রতিদিন অনলাইনে কতজন পড়ুয়া ভর্তি হল, তার তালিকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চ শিক্ষা দফতরকে জানাতেও পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
পার্থবাবুর কড়া হুঁশিয়ারির পরে টিএমসিপি সভানেত্রী জয়া বলেন, ‘‘মেধার ভিত্তিতে একমাত্র অনলাইনেই ছাত্র ভর্তি হবে, সকলকে এটা বোঝানো হয়েছে। কোনও সুপারিশও আমরা গ্রহণ করছি না।’’ টাকার বিনিময়ে যাতে কোনও পড়ুয়া কলেজে ভর্তি না হয়, সে ব্যাপারে ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি টিএমসিপি সদস্যদেরও দু’দিন আগেই ফেসবুকে সতর্ক করেছিলেন জয়া নিজেও।
ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার পরেও অনেক সময়ে সুপারিশের ভিত্তিতে ফাঁকা আসনে ছাত্র ভর্তির অভিযোগ ওঠে। ফাঁকা থাকা সেই সব আসনেও অনলাইনেই মেধার ভিত্তিতে ভর্তির নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। সে ক্ষেত্রেও কোনও ভাবেই যেন টিএমসিপি হস্তক্ষেপের চেষ্টা না করে, সে ব্যাপারেও তিনি হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
প্রশাসন এবং দলীয় স্তরে সংশ্লিষ্টদের বারবার সতর্ক করলেও টাকার বিনিময়ে ছাত্র ভর্তির অভিযোগ ইতিমধ্যেই তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে আসতে শুরু করেছে। নির্দিষ্ট ফোন নম্বরে বা ফেসবুকে যোগাযোগ করলে কলেজে ভর্তি করে দেওয়ার ‘টোপ’ দেওয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। এ ধরনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কলকাতার আশুতোষ কলেজ, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলেজ, অ্যান্ড্রুজ, সুরেন্দ্রনাথ কলেজের মতো বেশ কিছু কলেজে টিএমসিপিকে বিশেষ ‘নজর’ রাখতেও পরামর্শ দিয়েছেন পার্থবাবু। আর দলের কারও বিরুদ্ধে ছাত্র ভর্তিতে দুর্নীতি করার অভিযোগ উঠলে সঙ্গে সঙ্গে সাসপেন্ড করার নির্দেশও দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব।