ডিন বাছতে মারজিত ফের বিশ্ববিদ্যালয়ে

দু’দফায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। প্রথম বার অস্থায়ী উপাচার্যের পদ পেয়েই সুগত মারজিত বলেছিলেন, তিনি ‘সরকারের লোক’। এ বার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখার ডিন বাছাই কমিটিতে সরকার মনোনীত প্রার্থী হচ্ছেন সেই সুগতবাবুই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৪৮
Share:

দু’দফায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। প্রথম বার অস্থায়ী উপাচার্যের পদ পেয়েই সুগত মারজিত বলেছিলেন, তিনি ‘সরকারের লোক’। এ বার ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন শাখার ডিন বাছাই কমিটিতে সরকার মনোনীত প্রার্থী হচ্ছেন সেই সুগতবাবুই।

Advertisement

শীর্ষ স্তরের বহু গুরুত্বপূর্ণ পদ ফাঁকা থাকায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন থেকে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বাণিজ্য শাখার ডিনের পদ বেশ কয়েক মাস ধরে খালি পড়ে রয়েছে। কলা শাখার ডিনের মেয়াদও কয়েক মাসের মধ্যে শেষ হবে। আর গ্রন্থাগার বিজ্ঞান বিভাগে কখনওই স্থায়ী ডিন নিয়োগ করা হয়নি।

এই অবস্থায় খুব তাড়াতাড়ি ওই সব শাখার ডিন বাছাই জরুরি হয়ে পড়েছে। সাধারণ ভাবে ডিন নিয়োগ কমিটিতে থাকেন তিন জন। নিয়ম অনুযায়ী ওই কমিটির এক সদস্যকে বেছে নেন আচার্য-রাজ্যপাল। দ্বিতীয় সদস্যকে মনোনীত করেন উপাচার্য। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, এ বারের ডিন বাছাই কমিটির জন্য উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ তাঁর মনোনীত প্রার্থীর নাম পাঠানোর তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। তৃতীয় সদস্য মনোনয়নের ভার সরকারের। সেই পদের জন্যই শিক্ষা দফতর থেকে পাঠানো হয়েছে সুগতবাবুর নাম।

Advertisement

নিজেই নিজেকে সরকারের লোক তকমা দেওয়ার পরে অস্থায়ী উপাচার্যের পদে সুগতবাবুর মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছিল মসৃণ ভাবেই। শিক্ষা শিবিরের অন্দরে গুঞ্জন ছিল, ওই

পদে তাঁর আরও এক দফা মেয়াদ বৃদ্ধিটাও নিছক সময়ের অপেক্ষা। কিন্তু গত মে মাসে খোদ সুগতবাবুই জানিয়ে দেন, অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্বে তিনি আর থাকতে চান না।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পদে থাকার ব্যাপারে ‘সরকারের লোক’ সুগতবাবুর আকস্মিক অনীহা নিয়ে আরও এক দফা জল্পনা শুরু হয়ে যায়। প্রশ্ন ওঠে, ফের মেয়াদ বৃদ্ধির উজ্জ্বল সম্ভাবনা সত্ত্বেও তিনি কেন বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দিতে চাইছেন? সুগতবাবুর নিজের বক্তব্য ছিল, কেন্দ্রীয় সংস্থা সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেসে ‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া চেয়ার প্রফেসর’-এর পদ থেকে লিয়েন নিয়ে তিনি উপাচার্য হয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় চাকরিটা বাঁচানোর জন্যই তাঁকে নির্দিষ্ট সময়ে ওই সংস্থায় ফিরে যেতে হচ্ছে।

সুগতবাবু নিজে উপাচার্য-পদ ছাড়ার এই কারণ দেখালেও সেই সময় শিক্ষা ও প্রশাসনিক মহলের একাংশের বক্তব্য ছিল, সরকারি মহলে কারও কারও সঙ্গে মন কষাকষির জেরেই তিনি ওই পদ ছেড়ে দিচ্ছেন। আর সরকারের তরফে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘‘উনি চলে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। আমরা কি ওঁকে রাখব বলেছি?’’

এই পরিস্থিতিতে ১৪ জুলাই অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে ১৫ জুলাই সুগতবাবু তাঁর পুরনো কাজের জায়গায় ফিরে যান। মাস চারেকের মধ্যে সেই সুগতবাবুকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন বাছাইয়ের কমিটিতে আনা হচ্ছে। কেন হঠাৎ চলে যাওয়া এবং কেনই বা অন্য এক ভাবে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার এই উদ্যোগ, তা নিয়ে যথারীতি নতুন জল্পনা শুরু হয়েছে। কৌতূহল নিরসন করার মতো সরকারি ব্যাখ্যা মেলেনি। শিক্ষামন্ত্রী পার্থবাবু শুধু বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ, ডিন বাছাইয়ের কমিটিতে আমাদের দফতর থেকে সুগতবাবুর নামই দেওয়া হয়েছে।’’ সুগতবাবু বিদেশে। এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন