রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এ বার তদন্তকারী সংস্থা ইডির নজরে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসুর জামাই! সোমবার তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করা হয়েছিল। সেই মতো তিনি ইডি দফতরে যান। ব্যাঙ্কের নথি সঙ্গে করে নিয়ে যেতে বলা হয়েছিল। নির্দেশমতো সেই সব নথি নিয়েই ইডি দফতরে হাজিরা দেন সুজিতের জামাই।
পুর নিয়োগ মামলায় সম্প্রতি কলকাতার বেশ কয়েক জায়গায় হানা দেয় ইডি। সল্টলেক সেক্টর ওয়ানের একটি ভবনে যান তাঁরা। সেই ভবনেই ছিল সুজিতের দফতর। এ ছাড়াও, দমকলমন্ত্রীর একটি রেস্তরাঁতেও গিয়েছে ইডি। গোলাহাটায় তাঁদের একটি ধাবায় চলছে তল্লাশি। জানা যায়, ধাবাটি মন্ত্রীপুত্রের। সূত্রের খবর, তল্লাশি অভিযানে বেশ কিছু নথি উদ্ধার করেন তদন্তকারীরা। সেই সূ্ত্র ধরেই সুজিতের জামাইকে তলব করেছিল ইডি।
ইডি সূত্রে খবর, পুর নিয়োগ দুর্নীতির টাকা বিভিন্ন হোটেল বা ব্যবসায় ব্যবহার করা হয়েছে। কোথায় কোথায় দুর্নীতির টাকা ব্যবহার হয়েছে, তা খুঁজে বার করার চেষ্টায় তদন্তকারীরা। সুজিতের জামাইও ব্যবসায়ী। তাঁর পরিবারও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। সেই সব ব্যবসায় দুর্নীতির টাকা ব্যবহার হয়েছে কি না, তা জানতেই সুজিতের জামাইয়ের ব্যাঙ্কের নথি নিয়ে যেতে বলা হয়। তল্লাশির সময় উদ্ধার হওয়া নথিকে সামনে রেখে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে ইডি সূত্রে খবর। যদিও ইডির এক সূত্রের দাবি, মাসকয়েক আগে সুজিতের কন্যার সঙ্গে তাঁর স্বামীর বিচ্ছেদ হয়ে গিয়েছে।
শুধু সুজিতের জামাই নন, তাঁর কন্যা, স্ত্রী এবং পুত্রকেও তলব করেছে ইডি। মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবারের মধ্যে তাঁদেরকে হাজিরা দেওয়ার জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে। তাঁদের ব্যাঙ্কের নথি, ঋণ সংক্রান্ত নথি নিয়ে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে নোটিসে।
স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে ব্যবসায়ী অয়ন শীলকে প্রথম গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। পরে তাঁর সল্টলেকের অফিসে তল্লাশি চালাতে গিয়ে উদ্ধার করা হয় বেশ কিছু উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট। সেখান থেকেই পুরসভার নিয়োগেও দুর্নীতির হদিস পান তদন্তকারীরা। অয়নের সংস্থা পুর নিয়োগের ক্ষেত্রে ওএমআরের দায়িত্বে ছিল। তদন্তে নেমে একে একে আরও অনেককে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা। পরে এই মামলায় অবৈধ ভাবে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি খতিয়ে দেখে তদন্তে নামে ইডিও।
সেই সূত্র ধরে ২০২৪ সালের ১২ জানুয়ারিতে লেকটাউনে সুজিতের দু’টি বাড়ি এবং দফতরে তল্লাশি চালিয়েছিলেন ইডি আধিকারিকেরা। ১৪ ঘণ্টা তল্লাশির পর বেশ কিছু নথি এবং সুজিতের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করেন তদন্তকারীরা।