সুনীতা ভাল আছেন, চিন্তা তবু তুষারক্ষত

উদ্বেগের অবসান ঘটিয়ে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন সুনীতা। হাতের তুষার ক্ষতই এখন প্রধান চিন্তার বিষয়। কাঠমান্ডুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সেকেন্ড ডিগ্রির ফ্রস্ট বাইট হয়েছে তাঁর। কোনও আঙুল বাদ দিতে হবে কি না, তা এখনই কিছু বলা যায়নি।

Advertisement

তিয়াষ মুখোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৬ ০৩:৪৭
Share:

কাঠমান্ডুর হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে সুনীতা হাজরার। মঙ্গলবার। —নিজস্ব চিত্র

উদ্বেগের অবসান ঘটিয়ে চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন সুনীতা। হাতের তুষার ক্ষতই এখন প্রধান চিন্তার বিষয়। কাঠমান্ডুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সেকেন্ড ডিগ্রির ফ্রস্ট বাইট হয়েছে তাঁর। কোনও আঙুল বাদ দিতে হবে কি না, তা এখনই কিছু বলা যায়নি।

Advertisement

কাঠমান্ডুর ওই হাসপাতালে এই ধরনের চিকিৎসার বিশেষ পরিষেবা রয়েছে। যে-হেতু অভিযান-মরসুমে অনেক অভিযাত্রীই এই ধরনের সমস্যা নিয়ে আসেন।

রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যুবকল্যাণ দফতরের প্রধানসচিব সৈয়দ আহমেদ বাবা, যুগ্মসচিব মুকেশ সিংহ ও পর্বতারোহণ শাখার উপদেষ্টা উজ্জ্বল রায় মঙ্গলবার সকালেই পৌঁছে গিয়েছেন কাঠমান্ডু। দীপঙ্কর ঘোষ এবং সুনীতার পরিবারের সদস্যরা রবিবার থেকেই আছেন সেখানে। এভারেস্টে নিখোঁজ বাঙালি অভিযাত্রীদের উদ্ধারকাজের পাশাপাশি চেষ্টা চলছে ধৌলাগিরি অভিযানে গিয়ে মৃত রাজীব ভট্টাচার্যের দেহ নামিয়ে আনারও।

Advertisement

দীপঙ্কর ঘোষ জানালেন, পর্বতারোহী দেবদাস নন্দী ছ’জন অভিজ্ঞ শেরপাকে নিয়ে ধৌলাগিরির বেসক্যাম্পে পৌঁছে গিয়েছেন সোমবারই। পায়ে হেঁটে হবে উদ্ধারকাজ। শেরপারা ক্যাম্প থ্রি পর্যন্ত উঠেও গিয়েছেন। বেসক্যাম্প থেকে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন দেবদাস। তবে উদ্ধারে বাদ সাধছে আবহাওয়া। সেই কারণেই প্রায় সাড়ে সাত হাজার মিটার উচ্চতায় বেঁধে রাখা রাজীবের দেহ পর্যন্ত পৌঁছতে পারেননি তাঁরা।

আবহাওয়া প্রতিকূল এভারেস্ট বেসক্যাম্পেও। সেখানকার অভিযাত্রীরা জানালেন, কয়েক জন বিদেশি অভিযাত্রীর দেহ নামছে ওপর থেকে। তবে এখনও কোনও খোঁজ মেলেনি গৌতম ঘোষ বা পরেশ নাথের। নামিয়ে আনা যায়নি সুভাষ পালের দেহও।

বিস্তারিত দেখতে ক্লিক করুন।

এই খারাপ আবহাওয়ার কারণেই একটু উদ্বেগ বেড়েছে পর্বতারোহী দেবাশিস বিশ্বাসের জন্য। লোৎসে শৃঙ্গ অভিযানে গিয়েছেন তিনি। এভারেস্টের অভিযাত্রী দলের সঙ্গেই এগিয়েছিলেন ক্যাম্প থ্রি পর্যন্ত। সেখান থেকেই আলাদা হয় লোৎসের পথ। তবে ১৯ তারিখ লোৎসে আরোহণের পথ খোলার সময় প্রায় শৃঙ্গের কাছে এক জন শেরপার ম়ত্যু হওয়ার পর সরকারি ভাবে স্থগিত করা হয় লোৎসে অভিযান। তবে বেসক্যাম্প সূত্রের খবর, ফের আরোহণের উদ্দেশে সোমবারই ক্যাম্প টু থেকে থ্রি-এর দিকে এগিয়েছেন দেবাশিস।

সুনীতার স্বামী সুদেব হাজরা জানালেন, কলকাতার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। বৃহস্পতিবারই হয়তো ফিরবেন তাঁরা। তেমন কোনও শারীরিক অসুবিধা না থাকলেও মানসিক বিপর্যয় এখনও সম্পূর্ণ ভাবে কাটিয়ে উঠতে পারেননি সুনীতা। বললেন, ‘‘সহ-অভিযাত্রীদের সঙ্গে কতগুলো দিন কাটিয়েছেন সুনীতা। একসঙ্গে হেঁটেছেন। তাঁদের না-ফেরার ধাক্কাটা সামলানো কঠিন।’’

ওই একই হাসপাতালে রয়েছেন হরিয়ানার সীমা গোস্বামীও। অভিযানের সময় সামিটের পথে দেখেছিলেন দু’জন দু’জনকে। পরস্পরকে ‘বুস্ট আপ’ করেছিলেন। তখন জানতেন না, আবার দেখা হবে, এই ভাবে। হাসপাতালে। শৃঙ্গ ছুঁতে গিয়ে ফ্রস্ট বাইট হয়েছে সীমারও। মঙ্গলবার একটু সুস্থ হলে সুনীতা দেখা করেন তাঁর সঙ্গে।

আবেগে আর সান্ত্বনায় ধুয়ে যায় দুই অভিযাত্রীর দেখা হওয়ার মুহূর্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন