ছবি: সংগৃহীত।
সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াইয়ে সুরাহা পেয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। সোমবার সর্বোচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, আগামী দু’সপ্তাহ গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে রাজ্য পুলিশ বা অন্য কোনও সরকারি সংস্থা কোনও রকম দমনমূলক পদক্ষেপ করতে পারবে না। অর্থাৎ শারীরিক বা মানসিক ভােব নিগ্রহ করা যাবে না। তবে তাঁর গ্রেফতারিতে কোনও বাধা নেই বলেই মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।
ঘটনাচক্রে, এ দিনই দল থেকে ৬ বছরের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে গুরুঙ্গ, তাঁর স্ত্রী আশা, ঘনিষ্ঠ সঙ্গী রোশন গিরি-সহ ১৩ জন কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যকে। নতুন মোর্চা সভাপতি হয়েছেন বিনয় তামাঙ্গ এবং সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপা।
সুপ্রিম কোর্টে গুরুঙ্গকে সুরাহা পাইয়ে দিতে এ দিন প্রধান ভূমিকা নেন প্রথিতযশা আইনজীবী হরিশ সালভে। দেশের প্রথম সারির এই আইনজীবীকে দিয়ে মামলা লড়ানো সহজ নয়। কিছু দিন আগে তিনি ভারত সরকারের হয়ে পাকিস্তানে জেলে বন্দি কুলভূষণ যাদবের পক্ষে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে সওয়াল করেছিলেন। ভারতকে জয়ও এনে দিয়েছিলেন। সেই সালভেই যখন আজ গুরুঙ্গের হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন, তখন প্রশ্ন ওঠে, বিজেপি-ই কি তা হলে এই আইনি লড়াইয়ে গুরুঙ্গকে পিছন থেকে সাহায্য করছে? এই প্রশ্নের পিছনে আরও একটি কারণ— সুষমা স্বরাজের কন্যা, বাঁশরীও গুরুঙ্গের আইনজীবীদের মধ্যে রয়েছেন।
তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-তে মামলা খারিজ করে আগাম জামিন এবং রাজ্য পুলিশের বদলে দার্জিলিঙের যাবতীয় ঘটনায় এনআইএ বা সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন গুরুঙ্গ। সুপ্রিম কোর্ট এ দিন দু’সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্যের বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে। সেই সঙ্গে বিচারপতি এ কে সিক্রি ও বিচারপতি অশোক ভূষণের বেঞ্চ জানিয়েছে, এর মধ্যে গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে কোনও দমনমূলক পদক্ষেপ করা যাবে না।
পাহাড়ে ফিরতে মরিয়া গুরুঙ্গ এত দিন খড়কুটো খুঁজছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে তিনি স্বাগত জানান। যদিও রাজ্যের আইনজীবীদের যুক্তি, আদালত গুরুঙ্গের গ্রেফতারে কোনও স্থগিতাদেশ জারি করেনি। শুধু দমনমূলক পদক্ষেপ করতে বারণ করেছে। গুরুঙ্গের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। সেগুলিতে আইনি পদক্ষেপ করা নিয়ে আদালতের কোনও নির্দেশ কিন্তু নেই।
বেলা বাড়তেই অবশ্য পাহা়ড়ে গুরুঙ্গপন্থীদের উচ্ছ্বাস বদলে যায় হতাশায়। ততক্ষণে তাঁকে ছ’বছরের জন্য সাসপেন্ড করেছে মোর্চার কেন্দ্রীয় কমিটি। যা জানার পরে রোশন দাবি করেন, ‘‘আমরাই তো দেড় মাস আগে বৈঠক করে বিনয়-অনীতকে বহিষ্কার করেছি।’’ বিনয় শিবির পাল্টা প্রশ্ন তুলছে, সেই বৈঠকে কত জন ছিলেন?