দার্জিলিঙে সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ। নিজস্ব চিত্র
গত এক মাসে দুই দফায় পুলিশের হাতের নাগালে এসেও ফসকে গিয়েছেন বিমল গুরুঙ্গ। উপরন্তু, গত শুক্রবার ভোরে সিংলার জঙ্গলের গুরুঙ্গের ডেরায় হানা দেওয়ার পর গোলাগুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন এক সাব ইন্সপেক্টর। প্রকাশ্যে না আসলেও পুলিশকর্মীদের মনোবলও কিছুটা কমেছে। অভিযানগুলির নানা খুঁটিনাটি নিয়ে পুলিশ মহলেই নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। এই অবস্থায় কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করা তো বটেই তৃতীয় দফার গুরুঙ্গ অভিযানে কোনও ফাঁকফোকর না থাকে তা নিশ্চিত করতে আসরে নামলেন খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ।
সোমবার সকালে কলকাতা থেকে বিমানে শিলিগুড়ি পৌঁছান ডিজি। বাগডোগরা বিমানবন্দরের লাউঞ্জেই এডিজি উত্তরবঙ্গ, পুলিশ কমিশনার-সহ উচ্চ পদস্থ পুলিশ অফিসারদের সঙ্গে প্রায় আধঘন্টা কথা বলেন ডিজি। পরে সোজা দার্জিলিঙে পৌঁছন। সেখানে সদর থানাতেও অফিসারদের নিয়ে বসেন। চকবাজারের বিস্ফোরণের এলাকা ঘুরে দেখার পরে সিংমারি। এলাকার মোর্চার সদর দফতরটি রয়েছে। লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তিনি রায়ভিলায় গিয়ে সেখানকার ক্ষতির সম্পর্কে খোঁজ নেন। আজ, মঙ্গলবার সকালে তিনি কালিম্পঙে যাবেন।
ডিজি বলেন, ‘‘পাহাড়ের সার্বিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। পাহাড়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। দেওয়ালি, পর্যটন মরসুম আসছে। আরও পর্যটক আসবেন। অফিসারেরা ভাল কাজ করছেন।’’ আধা সামরিক বাহিনী প্রত্যাহার ও পুলিশ অভিযান নিয়ে ডিজির সংক্ষিপ্ত মন্তব্য, ‘‘আমরা দেখছি। সময় মতো যা বলার বলব।’’
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন দার্জিলিঙে অফিসারদের কাছ থেকে সিংলা-সহ বিভিন্ন অভিযানের সম্পর্কে খোঁজখবর নেন ডিজি। জঙ্গল ক্যাম্পের সম্পর্কে জেনে নেন। তেমনই, খবরের ভিত্তিতে ঠিক কী ভাবে অভিযান হয় তাও শোনেন। এর পরেই গুরুঙ্গের হদিশ সম্পর্কে কী কী খবর রয়েছে তাও অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছেন। আগামী কোনও অভিযানের আগে সমস্ত ধরনের আটঘাঁট বেধে নামার কথাও বলেন। রাজ্য পুলিশের উপদ্রুত অঞ্চল বা পরিস্থিতির জন্য বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত বাহিনী কত সংখ্যক কোথায় রয়েছে, তা বিস্তারিত ভাবে জেনে নেন।
আজ, কালিম্পঙে গিয়ে সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর তিনি অফিসারদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন। দুই জেলা পুলিশের অফিসারেরা জানান, বিমল গুরুঙ্গ এখনও সিকিম সীমানা ধরে বিভিন্ন জঙ্গল লাগোয়া এলাকায় সশস্ত্র বাহিনী নিয়ে ঘুরছেন বলে খবর আসছে। তিনি নেপালে যাওয়ার চেষ্টাও করতে পারেন। কিন্তু নদী, পাহাড়, জঙ্গল ঘেরা এলাকাগুলি অত্যন্ত দুর্গম। সেই জায়গায় ঠিক কীভাবে অভিযান চালানো হবে, তা নিয়ে অফিসারদের সঙ্গে কথা বলছেন ডিজি।