ভূভারতে এমন ঘটনার নজির নেই। থাকার কথাও নয়। কেননা মাটিতে বসে উড়ান নিয়ন্ত্রণের গুরুদায়িত্ব যারা পালন করে, সেই এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এ পুলিশের কর্মী-অফিসারদের ঢোকার কথাই নয়।
অথচ শুক্রবার বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরের এটিসি-তে বসে দাপটে নজরদারি চালালেন রাজ্যের তিন পুলিশ অফিসার! হয়নি। কারণ? বাগডোগরা থেকে আসা বিমানে অন্য যাত্রীদের সঙ্গে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাই এটিসি-র ঘরে ঢুকে পুলিশের এই তৎপরতা। পুলিশের এ-হেন ‘নজরদারি’ নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন বিমানবন্দরের অনেক অফিসার।
দু’সপ্তাহ আগে বাগডোগরা থেকে আসার সময়ে কলকাতার মাথায় এসে চক্কর কাটতে হয় ইন্ডিগোর বিমানকে। সেই বিমানেও ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিমান নামতে দেরি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করেন। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, সে-দিন প্রধান রানওয়ে বন্ধ ছিল। যান্ত্রিক সমস্যার জন্য দ্বিতীয় রানওয়েতে প্রতি ঘণ্টায় অনেক কম বিমান নামতে পারে। সেটাই ছিল দেরির কারণ। ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর পটনা থেকে আসার সময়েও আকাশে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে চক্কর কাটে ইন্ডিগোর অন্য একটি বিমান। ক্ষোভ ছড়িয়েছিল সে-বারেও।
অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীকে বারবার রেগে যেতে দেখে এ দিন এটিসি-তে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। এটিসি অফিসারদের প্রশ্ন, তাঁরা ঠিক ভাবে বিমান নামাতে পারছেন কি না, পুলিশ কি সেটাই দেখতে এসেছিল? সরাসরি জবাব এড়িয়ে এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ধরে নিন না, এটা এটিসি অফিসারদের সঙ্গে পুলিশের সমন্বয়।’’ শুক্রবার বেলা ৩টের পরে তিন পুলিশ অফিসার গিয়ে, বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে মুখ্যমন্ত্রীর বিমান নামা পর্যন্ত সেই ‘সমন্বয়’ সাধন করেন। বিমান ওঠানামার খুঁটিনাটি সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান থাকে বলেই এটিসি অফিসারেরা বিমান নামিয়ে আনতে সাহায্য করেন পাইলটদের। এ দিন প্রধান রানওয়েতেই ইন্ডিগোর ওই বিমান নেমেছে। নামার আগে তাকে এক মিনিটও চক্কর কাটতে হয়নি।