P K

পিকে জানেন গোপন তথ্যটি

আচমকাই এক আগন্তুক ছুড়ে দিলেন প্রশ্নটা, ‘এলাকায় কাকে কাউন্সিলর হিসেবে দেখতে চান?’ আড্ডা থেকেই উঠে এল বেশ কয়েকটি নাম।

Advertisement

অনির্বাণ রায়

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৩:১১
Share:

প্রশান্ত কিশোর। ফাইল চিত্র

দুয়ারে পুরভোট। আর তা নিয়ে চায়ের কাপে তুফান উঠবে না তা আবার হয় নাকি! অতএব, চায়ের দোকানে চলছে জমাটি আড্ডা। ঠিক সেই সময়ে দূরে এসে থামল একটা গাড়ি। তার পরে মোক্ষম সময়ে চায়ের দোকানে ঢুকলেন দু’জন অপরিচিত ব্যক্তি। কথায় কথায় জমে উঠল আড্ডা।

Advertisement

আচমকাই এক আগন্তুক ছুড়ে দিলেন প্রশ্নটা, ‘এলাকায় কাকে কাউন্সিলর হিসেবে দেখতে চান?’ আড্ডা থেকেই উঠে এল বেশ কয়েকটি নাম। সকলের অজান্তেই সেই নামগুলো লিখে নিলেন আর এক আগন্তুক।

পুরভোটের আগে চার দিন ধরে জলপাইগুড়ি এবং মালবাজার শহরে এ ভাবেই ‘ফাইনাল’ সমীক্ষা চালিয়ে গেল পিকে-র টিম। জলপাইগুড়ি এবং মালবাজার দুই শহরেই মাসখানেক বাদে ভোট হওয়ার কথা। সূত্রের খবর, আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে দুই শহরের পুরভোটের একটি সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্বের হাতে তুলে দেবে টিম পিকে।

Advertisement

‘দিদিকে বলো’-র প্রচার শুরু হওয়ার পর থেকেই পিকে-র টিম জেলায় জেলায় যেতে শুরু করেছে। জলপাইগুড়িতেও বেশ কয়েক বার সেই টিম এসে সমীক্ষা চালিয়েছে। টিমের সদস্যেরা জেলা নেতা, বিধায়ক ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেছেন। কাউন্সিলরদের সম্পর্কে স্থানীয় বাসিন্দাদেরও মতামত সংগ্রহ করেছেন। এমনকি তাঁরা বাসিন্দাদের কাছে জানতে চেয়েছেন—‘দেখা হলে কাউন্সিলর হাসেন তো?’ প্রত্যেক ওয়ার্ডের অরাজনৈতিক বিশিষ্ট জনেদের ফোন নম্বর এবং তাঁদের সম্পর্কে তথ্যও সংগ্রহ করেছিল ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল।

পুরভোটের ঠিক আগে এ বার পিকে টিমের সম্পূর্ণ নতুন দল এসেছিল জলপাইগুড়িতে। লাটাগুড়ির একটি রিসর্টে তাঁরা পাঁচ দিন ছিলেন।

এ বার তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর বা নেতার সঙ্গে কথা বলেনি পিকের টিম। সূত্রের খবর, এটা ছিল তথ্য সংগ্রহের ‘ফাইনাল রাউন্ড।’ চায়ের দোকান, ক্লাবের ক্যারাম খেলার আসর, কোনও এলাকার চাতালে পৌঁছে গিয়েছিল পিকে-র টিম। গোপনীয়তা বজায় রাখতে গাড়ি দাঁড় করানো হত দূরে।

সূত্রের খবর, কোন কোনও ক্ষেত্রে আড্ডার মাঝে পিকে-র টিমের লোকেরাই সরাসরি কথা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করছিলেন। কোনও ক্ষেত্রে এলাকার কাউকে দিয়েও প্রশ্ন করিয়েছিলেন। উত্তর যা মিলেছে তা নোট করেছেন টিমের প্রতিনিধিরা। সূত্রের খবর, এই প্রক্রিয়ায় এলাকায় দলের কাউন্সিলরের গ্রহণযোগ্যতার কিছুটা ইঙ্গিত মিলবে। একই সঙ্গে এলাকায় এমন কেউ আছেন কিনা যিনি যথেষ্ট জনপ্রিয়, সে আভাসও মিলবে।

রাজনীতি করা দীর্ঘদিনের পরিচিত মুখের থেকে অরাজনৈতিক বিশিষ্ট জনেরাই পিকে-র টিমের অন্যতম পছন্দ বলে জেলা তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি। এ বারের পিকে-র টিমের ঘুরে যাওয়া প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূলের পদাধিকারীরা অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কিন্তু গোপনে তথ্য সংগ্রহ করার তথ্যটাও গোপন থাকেনি!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন