তদন্তের নামে হেনস্থা, নালিশ সূর্যকান্ত-জায়ার

তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্তের নামে তাঁকে হয়রান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন ঊষা মিশ্র। তৃণমূল সরকার ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ থেকে এই তদন্ত করছে বলে গোড়া থেকেই সরব সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের স্ত্রী ঊষাদেবী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৬ ০৩:০২
Share:

ঊষা মিশ্র

তাঁর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের তদন্তের নামে তাঁকে হয়রান করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুললেন ঊষা মিশ্র। তৃণমূল সরকার ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ থেকে এই তদন্ত করছে বলে গোড়া থেকেই সরব সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের স্ত্রী ঊষাদেবী। এ বার তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার অধিকর্তাকে উকিলের চিঠি পাঠিয়ে তদন্তের নামে হেনস্থার অভিযোগ এনেছেন তিনি।

Advertisement

গত ১২ জুলাই পাঠানো ওই চিঠিতে ঊষাদেবীর অভিযোগ, ২০১৫ সাল থেকে তদন্তের নামে দফায় দফায় তাঁকে হেনস্থা করা হচ্ছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের নারায়ণগড়ের খাকুরদায় সংস্থার কার্যালয়ে একাধিকবার তল্লাশির পাশাপাশি যখন-তখন ডেকে পাঠানো হচ্ছে দুর্নীতি দমন শাখার অফিসে। অথচ, তদন্তের স্বার্থে তেমন কোনও প্রশ্ন করা হচ্ছে না। উল্টে, ‘সূর্যকান্ত মিশ্র ভবিষ্যতে আর কোনও দিন বিধায়ক হতে পারবেন না’-র মতো কথাবার্তা বলা হচ্ছে।

সূর্য-পত্নীর কথায়, ‘‘সব রকম সাহায্য করতে আমরা তৈরি। যদি চোর বা খুনি হই, প্রমাণ করে শাস্তি দিক। কিন্তু এই হেনস্থা কেন!’’

Advertisement

বিরোধীরা এর পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছেন। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তীর মতে, ‘‘হিংসা ও প্রতিহিংসার রাজনীতি এই সরকারের ডিএনএ। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, সূর্যকান্ত মিশ্র বা গৌতম দেবের মতো আমাদের বিভিন্ন নেতা ও তাঁদের পরিজনদের হেনস্থা করাই এদের উদ্দেশ্য। তবে বিভিন্ন তদন্ত করে, কমিশন বসিয়েও কিছু বেরোয়নি। কারণ, বেরনোর মতো কিছু নেই।’’ কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্যও বলেন, ‘‘তদন্তের নামে বিরোধীদের হেনস্থা করাই এই সরকারের কাজ।’’ কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি।

অভিযোগ নিয়ে মুখে কুলুপ দুর্নীতি দমন শাখার কর্তাদের। ঊষাদেবীও চিঠির জবাব পাননি। আর তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘তদন্তকারীরা তাঁদের নিয়মে তদন্ত করছেন। এ নিয়ে আমরা কী বলব!’’

ঊষাদেবীর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ভগবতী দেবী নারীকল্যাণ সমিতি’ দিঘা-শঙ্করপুর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ যৌনকর্মীদের মধ্যে এড্স সচেতনতায় কাজের বরাত পেয়েছিল ২০০৮ সালে। তখন সূর্যবাবু স্বাস্থ্যমন্ত্রী। ক্ষমতায় এসে ওই সংস্থার কাজকর্ম নিয়ে তদন্তে কমিটি গড়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ঊষা মিশ্র-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে প্রতারণা, তছরুপ-সহ নানা ধারায় মামলা হয়।

ঊষাদেবীর আইনজীবী শামিম আহমেদের ক্ষোভ, তদন্তকারীদের কাছে ঊষাদেবীর বাড়ির ঠিকানা, ফোন নম্বর থাকলেও তদন্তের জন্য হাজিরার দিনক্ষণ জানানো হচ্ছে খাকুরদায় ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অফিসে। তাতেও ‘ভোগান্তি’ হচ্ছে। দুর্নীতি দমন শাখার অধিকর্তার কাছে তাই ঊষাদেবীর আবেদন, তাঁর বয়স ও অসুস্থতার কথা মাথায় রেখে তদন্তকারীরা বাড়িতে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন