কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি ভিক্টোরিয়া চটকলেও

কাঁকিনাড়া, নফরচাঁদের পরে ভিক্টোরিয়া। মে দিবসের সকালে কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি পড়েছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কাঁকিনাড়া এবং নফরচাঁদ চটকলে। ওই রাতেই গঙ্গার অপর পাড়ে হুগলি শিল্পাঞ্চলের ভিক্টোরিয়া চটকলেও একই বিজ্ঞপ্তি পড়ল। ফলে, বিপাকে পড়লেন ওই চটকলের প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৫ ০৩:০৫
Share:

কাঁকিনাড়া, নফরচাঁদের পরে ভিক্টোরিয়া।

Advertisement

মে দিবসের সকালে কাজ বন্ধের বিজ্ঞপ্তি পড়েছিল ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কাঁকিনাড়া এবং নফরচাঁদ চটকলে। ওই রাতেই গঙ্গার অপর পাড়ে হুগলি শিল্পাঞ্চলের ভিক্টোরিয়া চটকলেও একই বিজ্ঞপ্তি পড়ল। ফলে, বিপাকে পড়লেন ওই চটকলের প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক। শনিবার সকালে আবার মজুরি নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দিল রিষড়ার ওয়েলিংটন এবং শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া চটকলে।

বরাত সে ভাবে না মেলা এবং উৎপাদন বাজারজাত করা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন চটকলে সমস্যা এখনও কাটেনি। কাঁচামালের দামবৃদ্ধি, উৎপাদন কম হওয়া এবং আর্থিক সঙ্কটকে কারণ হিসেবে দেখিয়ে শুক্রবার ব্যারাকপুরের ওই দুই চটকলের গেটে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া চটকলে কাজ বন্ধের ক্ষেত্রেও একই কারণ দেখিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

যদিও শ্রমিকদের অভিযোগ, উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছিল চটকলের কিছু অসাধু কর্তার জন্য। তাঁরা নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত। এ নিয়ে চটকলের প্রেসিডেন্ট (ওয়ার্কস) আর কে সিংহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে
রাজি হননি।

চন্দননগরের উপ-শ্রম কমিশনার তীর্থঙ্কর সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘চটকলে কাজ বন্ধ করা নিয়ে কর্তৃপক্ষ আমাদের কিছু জানাননি। আমরাই তা জানতে পেরে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। শ্রমিক সংগঠন, জেলা প্রশাসন এবং চটকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’’

গত বছরের ৮ নভেম্বর ভিক্টোরিয়ার কিছু শ্রমিককে কর্তৃপক্ষ কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আন্দোলনে নামেন অন্য শ্রমিকেরা। চটকলের কিছু কর্তার আবাসনে ভাঙচুর এবং এক ম্যানেজারকে মারধরের অভিযোগ ওঠে কিছু শ্রমিকের বিরুদ্ধে। তার পর প্রায় দু’মাস ওই চটকল বন্ধ ছিল। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি ফের উৎপাদন শুরু হয় চটকলে। তিন মাস পরে শুক্রবার রাতে ফের কাজ বন্ধ হল। শনিবার সকালে কাজে যোগ দিতে এসে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শ্রমিকেরা। তবে, কোনও গোলমাল হয়নি।

চটকলের ‘তাঁতঘর’ বিভাগের শ্রমিক সান্টু লাল বলেন, ‘‘খোলার পর থেকে চটকল তো ভালই চলছিল। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালিপনা এবং স্বৈরাচারী নীতির ফলেই চটকলে সমস্যা হচ্ছে।’’

‘মেশিন’ বিভাগের শ্রমিক প্রকাশ পাসোয়ানও বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ অনেক দিন ধরেই চটকল বন্ধের চক্রান্ত করছিলেন। পুরভোট মিটতেই করে দেখালেন।’’

মে দিবসে ছুটি থাকলেও মজুরির দাবিতে শনিবার সকালে ওয়েলিংটন এবং ইন্ডিয়া চটকলের শ্রমিকেরা বিক্ষোভ দেখান। ওয়েলিংটনের কর্তৃপক্ষ পরে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেন বলে জানিয়েছে সেখানকার শ্রমিক সংগঠনগুলি। কিন্তু ইন্ডিয়া চটকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে শ্রমিকদের দ্বন্দ্ব মেটেনি। এর জেরে এ দিন ওই চটকলে উৎপাদন বন্ধ থাকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন