Suvendu Adhikari

জঙ্গলমহলের ক্ষোভে সিলমোহর শুভেন্দুর

কয়েক দিন আগেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন শুভেন্দু। তাঁর আরোগ্য কামনায় নেতাইবাসী প্রার্থনা করেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নেতাই শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২০ ০৪:০২
Share:

নেতাইয়ে শুভেন্দু অধিকারী। ছবি: দেবরাজ ঘোষ

সপ্তাহ খানেক আগেই ঝাড়গ্রামে প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার বলেছেন, জঙ্গলমহলের সব কাজ হয়ে গিয়েছে। বাকি কিছুই নেই।রবিবার বিকেলে সেই ঝাড়গ্রামেরই নেতাই গ্রামে এসে রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী জানালেন, এলাকার অনেকে বাড়ি পাননি, রয়েছে কাজের দাবি। এ সব নিয়ে মানুষের ক্ষোভও রয়েছে। সেই ক্ষোভ নিরসনে ব্যক্তিগত উদ্যোগে তিনি যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন বলেও স্পষ্ট করে দেন শুভেন্দু।

Advertisement

বস্তুত, গত কয়েক মাস ধরে তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচি, সরকারি অনুষ্ঠান, এমনকি ক্যাবিনেট বৈঠকও এড়িয়ে যাচ্ছেন শুভেন্দু। তবে তাঁর দলহীন জনসংযোগ চলছে। এ দিনও লালগড়ের নেতাই গ্রামে ব্যক্তিগত উদ্যোগে পরিষেবা প্রদানের অনুষ্ঠানে এসেছিলেন শুভেন্দু। কর্মসূচির ব্যবস্থাপনায় ছিল ‘নেতাই শহিদ স্মৃতিরক্ষা কমিটি’। মঞ্চেই শুভেন্দু জানান, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি নেতাইয়ে নিহত ৯ জনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রতি বছর ওই দিনে আসেন তিনি। তবে এ বারের অভিজ্ঞতা ভিন্ন। শুভেন্দুর কথায়, ‘‘গত ৭ জানুয়ারি যখন এসেছিলাম, গ্রামবাসীর ব্যাপক ক্ষোভ দেখি। আমার প্রতি তাঁদের ভালবাসা চিরদিনই আছে, থাকবে। কিন্তু কমিউনিটি হলের আলোচনায় তাঁরা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের একাংশের অসহযোগিতার কথা বলেছিলেন। সত্যি কি মিথ্যা এ সবের মধ্যে যাব না। তবে গ্রামবাসীরা অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন।’’ শুভেন্দু জানান, নেতাই মামলার সাক্ষীরাও ঠিকমতো সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছিলেন।

শুভেন্দু বলেন, ‘‘সে দিন ৮ জন কর্মসংস্থানের কথা বলেছিলেন। তিন জন চল্লিশোর্ধ্ব হওয়ায় কাজের ব্যবস্থা করতে পারিনি। তবে ৫ জনের ছোটখাটো কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। ৫২ জন মা-দিদিকে সেলাই মেশিন দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। বাড়ি পায়নি বলে অনেকে অভিযোগ করেছিলেন। সতীশ সামন্ত ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট থেকে ১৭টি বাড়ি বানিয়ে দিয়েছি।’’ শুভেন্দুর বার্তা, ‘‘আকাশের চাঁদ আমি ধরিয়ে দিতে পারব না। ঘরে ঘরে চাকরি, লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে বড়লোক করে দিতে পারব না। কিন্তু ন্যূনতম যে সহযোগিতা করা সম্ভব সেটা করব।’’

Advertisement

তবে কি সত্যি জঙ্গলমহলে কাজ বাকি রয়েছে?ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র সুব্রত সাহা বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলে কী পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে তা চোখেই দেখা যায়।’’ কয়েক দিন আগেই করোনায় সংক্রমিত হয়েছিলেন শুভেন্দু। তাঁর আরোগ্য কামনায় নেতাইবাসী প্রার্থনা করেছিলেন। মোবাইলে তা দেখেছেন জানিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যত দিন হাঁটতে-চলতে পারব, নেতাইয়ের সঙ্গে আছি। আমার লক্ষ্য থেকে, আমার কর্মপদ্ধতি থেকে, আমার দায়বদ্ধতা থেকে কেউ সরিয়ে দিতে পারেনি, ভবিষ্যতেও পারবে না।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই এর পরে তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা চলি সমুখ পানে, কে আমাদের বাঁধবে/ রইবে যারা পিছুর টানে, কাঁদবে তারা কাঁদবে।’’

অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন সম্প্রতি লালগড় ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে অপসারিত তন্ময় রায়। অনুষ্ঠানে ঝাড়গ্রাম ছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, পশ্চিম বর্ধমান থেকে শুভেন্দু অনুগামীরা এসেছিলেন। ভিড়ে শিকেয় ওঠে করোনা বিধি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন