Suvendu Adhikari

সরকারকে লজ্জা দিতেই আলুবীজ বিলি: শুভেন্দু

সম্প্রতি বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে আলু চাষ মার খেয়েছে। সদ্য আলুবীজ বোনা শুরু হয়েছিল। কৃষি বিশেষজ্ঞদের কথায়, তার অনেকটাই নষ্ট হয়েছে এই বৃষ্টিতে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চন্দ্রকোনা রোড ও গোঘাট শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:২১
Share:

ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আলুবীজ বিলি শুভেন্দু অধিকারীর। বৃহস্পতিবার চন্দ্রকোনা রোডে। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল সরকারকে দুষে কৃষকের পাশে থাকার বার্তা তিনি আগেই দিয়েছিলেন। এ বার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে শুরু হল সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত আলুচাষিদের আলুর বীজ বিলি। সেই মঞ্চ থেকেও রাজ্য সরকারকে ‘কৃষক বিরোধী, চোর, পাচারকারী’ হিসাবে দুষে উৎখাতের হুঁশিয়ারি দেন শুভেন্দু। যার পাল্টা হিসেবে তৃণমূল মনে করাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘কালা কৃষি আইনে’র কথা।

Advertisement

সম্প্রতি বৃষ্টিতে রাজ্য জুড়ে আলু চাষ মার খেয়েছে। সদ্য আলুবীজ বোনা শুরু হয়েছিল। কৃষি বিশেষজ্ঞদের কথায়, তার অনেকটাই নষ্ট হয়েছে এই বৃষ্টিতে। তখনই চাষিরা অভিযোগ করেন, পর্যাপ্ত আলুবীজ মিলছে না। কৃষি দফতরের তথ্য বলছে, পশ্চিম মেদিনীপুরেও যে ৫০-৫৫ শতাংশ জমিতে আলু লাগানো হয়েছিল, তা অকাল বর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের আরও দাবি, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের শস্যবিমা যোজনায় অন্তর্ভুক্ত করতে পঞ্চায়েতস্তরে আবেদনপত্র নেওয়া শুরু হয়েছে।

বৃষ্টির সময়েই বিজেপি দাবি করেছিল, আলু চাষিদের ক্ষতিপূরণ ও নিখরচায় আলুবীজ দিতে হবে। এ বারে শুভেন্দু নিজে জোড়া কর্মসূচি করলেন বৃহস্পতিবার, একটি পশ্চিম মেদিনীপুরের আলুবীজ বাজার চন্দ্রকোনা রোড ও অন্যটি আলু চাষের জন্য প্রসিদ্ধ হুগলির কামারপুকুরে। বিকেলে চন্দ্রকোনা রোডে বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা কিসান মোর্চার উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত আলু চাষিদের বীজ বণ্টন কর্মসূচিতে আসেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘যে কাজটা রাজ্য সরকারের করা উচিত ছিল, সেটা সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও প্রতীকী ভাবে বিরোধী দল করছে। চন্দ্রকোনা রোড ও কামারপুকুরের সভা থেকে বিনামূল্যে তিন হাজার কেজি আলুবীজ চাষিদের দেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement

রাজ্যের কৃষি বিপণনমন্ত্রী বেচারাম মান্না পাল্টা দাবি করেন, রাজ্যের শস্যবিমা এবং কৃষকবন্ধু প্রকল্পের সুফল চাষিরা পাচ্ছেন। সদ্য কৃষকবন্ধু প্রকল্পে টাকাও বরাদ্দ করা হয়েছে বলে প্রশাসনের দাবি। মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গ থেকে নিজে সেই ঘোষণা করেছেন।

শুভেন্দু অবশ্য রাজ্যের বিরুদ্ধে আরও একাধিক অভিযোগ এনেছেন। তিনি দাবি করেন, কাটমানি খেয়ে রাজ্য শস্যবিমার ক্ষেত্রে আগের সংস্থাকে বদলে দিয়েছে। তিনি সার থেকে শুরু করে আলুবীজের কালোবাজারির অভিযোগও এনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘১২০০-১৩০০ টাকার আলুবীজ ২৬০০-২৭০০ থেকে ৩৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হচ্ছে।’’ পরে গোঘাটে তিনি বলেন, ‘‘এখানে আমরা যে বীজ বিলি করলাম, তা সমুদ্রে এক ফোঁটা জলের মতো। তবু রাজ্য সরকারকে লজ্জা দিতেই এই কর্মসূচি।’’ রাজ্যে অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা চালু, কৃষিঋণ মকুব, প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মাননিধি প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের সব কৃষককে অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি তোলেন বিরোধী দলনেতা।

বেচারাম পাল্টা বলেন, “তাঁদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কী করেছে, তা বাংলার কৃষকরা জানেন। সে জন্যই বিধানসভা এবং পঞ্চায়েত ভোটে গ্রামাঞ্চলের কৃষক তাঁর পাশে আছেন। আর এই ভণ্ড কৃষকপ্রেমী নেতাকেও বাংলার মানুষ বোঝে।’’ তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরাও দাবি করেন, ‘‘শুভেন্দুর জানা উচিত, কৃষক আত্মহত্যা বেশি বিজেপিশাসিত রাজ্যেই হয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন