সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালগুলির কাজের মূল্যায়ন শুরু হল স্বাস্থ্য দফতরে।
২০১৬ সালে কোন মেডিক্যাল কলেজ কেমন কাজ করেছে, কোথায় কোন বিভাগে কত অস্ত্রোপচার হয়েছে, আউটডোরে কত রোগী দেখাতে এসেছেন, কত জন ডাক্তার সেখানে নিয়মিত হাজির থেকেছেন — এই সব তথ্যই অবিলম্বে বিশদে জানাতে হবে স্বাস্থ্য ভবনে। এর পাশাপাশি কোথায় কতগুলি প্রসব হয়েছে, সংক্রামক এবং অসংক্রামক রোগে কত জন মারা গিয়েছেন — পেশ করতে হবে সেই তথ্যও।
স্বাস্থ্য ভবনের খবর, গত বছরের রিপোর্টের পাশাপাশি চলতি বছরের প্রথম তিন মাসের (জানুয়ারি-মার্চ) কাজের হিসেবও চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্তারা এ-ও জানিয়ে দিয়েছেন, এপ্রিল থেকে প্রতি মাসে এই মূল্যায়ন রিপোর্ট দিতে হবে। রাজ্যের সমস্ত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ এবং কলকাতার স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্স, বিসি রায় শিশু হাসপাতাল এবং চিত্তরঞ্জন সেবা সদনকেও এই রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অ্যাপোলো কাণ্ডের পরে নতুন ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইন পাশ হওয়ার সময়েই প্রশ্ন উঠেছিল, কেন শুধু বেসরকারি হাসপাতালের ভুলত্রুটি ধরানোর কাজেই সক্রিয় হবে স্বাস্থ্য দফতর? কেন তারা আয়নায় নিজেদের মুখটা দেখার কাজ শুরু করবে না? গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে মেডিক্যাল কলেজ পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিক সময়ে কাজে গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। এবং এর বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনও নিষ্পত্তি হয় না। এমনকী, কোন হাসপাতালের পরিষেবার মান কেমন, তা নির্ধারনেরও কোনও পরিকাঠামো বা ব্যবস্থা নেই।
স্বাস্থ্য দফতরের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘ভবিষ্যতে এই সব প্রশ্ন যাতে না ওঠে, তা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত। যে যে কলেজের পারফরম্যান্স খারাপ, তাদের সময় বেঁধে দেওয়া হবে — যাতে তারা নিজেদের কাজের মান উন্নত করতে পারে। তার পরেও মান খারাপ থেকে গেলে প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের প্রশাসনিক রদবদল করা হবে।’’
স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী নির্দেশিকায় জানিয়েছেন, সরকারের ভবিষ্যত পরিকল্পনার জন্যই কাজের রিপোর্ট জানাটা জরুরি। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পরিকল্পনা এবং প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।