দেখতে পেটো বা কৌটো বোমার মতো। কিন্তু এক দিকে গোঁজা রয়েছে একটি ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ। সাধারণ বোমার মধ্যে ওই সিরিঞ্জ। এই নতুন প্রযুক্তির বোমা দেখেই চিন্তায় পড়েছেন রাজ্য পুলিশের কর্তারা।
পুলিশি সূত্রের খবর, হাওড়ার সাঁকরাইল থানার বাজেয়াপ্ত করা বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে ওই ‘সিরিঞ্জ বোমা’ পেয়েছে পুলিশ। গত বছর ধুলাগড়ে একটি গোলমালের পরে প্রচুর বোমা উদ্ধার করা হয়েছিল। তার মধ্যেই ছিল ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জ গোঁজা একটি কৌটো বোমা। সোমবার সাঁকরাইলের মানিকপাড়ায় ওই সিরিঞ্জ বোমা নিষ্ক্রিয় করেছেন সিআইডির বোমা বিশেষজ্ঞেরা। তবে ওই বোমা তৈরির প্রযুক্তিটা কী, জেলা পুলিশ, সিআইডির বম্ব ডিটেকশনের বিশেষজ্ঞ গোয়েন্দারা সেই বিষয়ে বুধবার পর্যন্ত অন্ধকারে।
রাজ্য পুলিশের দাবি, ২০০৯ সালে বিমানে সিরিঞ্জ বোমা দিয়ে আত্মঘাতী হামলা চালানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছিল আল কায়দার বিরুদ্ধে। বিদেশে সিরিঞ্জ বোমার ব্যবহারের কথা জানা গেলেও রাজ্যের কোথাও এই ধরনের বোমা উদ্ধারের কথা তাদের জানা নেই বলে পুলিশের একংটি অংশের দাবি। ওই বোমা উদ্ধারের পরে তার প্রযুক্তি বিশ্লেষণ চলছে। এক পুলিশকর্তা জানান, সিআইডির অধীনে থাকা রাজ্য বম্ব ডেটা সেন্টারের বিশেষজ্ঞেরা ওই বোমার বিষয়টি দেখছেন। তাঁদের অনুমান, এর পিছনে কোনও সংগঠিত অপরাধ চক্র থাকতে পারে। ভিন্ রাজ্যে বা দেশের বাইরে কারা এমন বোমা ব্যবহার করেছে বা করছে, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের অনুমান, তিন ভাবে ওই ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ ব্যবহার করে থাকতে পারে দুষ্কৃতীরা। গ্লিসারিন বোমার মতো কোন ধরনের তরল ওই সিরিঞ্জের মাধ্যমে কৌটোয় ঢোকানো হয়ে থাকতে পারে। যা কৌটোর ভিতরে বোমার মশলা হিসেবে থাকা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেটের সঙ্গে মিশলেই আগুন জ্বলে ওঠে। পরিমাণে বেশি হলে বিস্ফোরণ ঘটে। আবার গোয়েন্দাদের অনুমান, হ্যান্ড গ্রেনেডের মতো পিন হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে ওই ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জকে। যাতে সিরিঞ্জটি চেনে খুলে দিয়ে ছুড়ে দিলেই ফেটে যায়। একই সঙ্গে সাধারণ কৌটো বোমার সঙ্গে ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জ গুঁজে দিয়ে তা ‘প্রেসার বোমা’ হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। ফলে ইঞ্জেকশন সিরিঞ্জে চাপ দিলেই তা ফেটে যাবে।