স্বাগত: আলিপুরদুয়ারের কোদালবস্তিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
হাসিমারা ও কলকাতা: বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের আক্রমণের মোকাবিলায় দ্বিমুখী কৌশল নিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক দিকে আলিপুরদুয়ারে তিনি ধুঁকতে থাকা চা বাগানের প্রসঙ্গ তুলে সমালোচনা করলেন নরেন্দ্র মোদী সরকারের। অন্য দিকে, এক প্রেস বিবৃতিতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র তথ্য দিয়ে দেখালেন, কোথায় কোথায় বাস্তবের সঙ্গে শাহের দাবির ফারাক রয়েছে।
বিধানসভা ভোটের আগে বীরপাড়ায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেন, ডানকান গোষ্ঠীর সাতটি বন্ধ চা বাগান অধিগ্রহণ করবে তাঁর সরকার। পরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নির্মলা সীতারামনও এসে এই নিয়ে আশ্বাস দেন। বিজেপি নেতারা তখন অনেকেই দাবি করেন, এ বারে চা বাগানের হাল ফেরাবেন প্রধানমন্ত্রী।
তৃণমূলের অভিযোগ, তার পরে এক বছর কেটে গেলেও কোনও বাগানই হস্তান্তর হয়নি। আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনিক বৈঠকে তো বটেই, পরে বাইরেও এই ক্ষোভ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেছেন, ‘‘এক বছরে একটাও ‘টেক ওভার’ করেছে? মুখেই শুধু ভাষণ। কাজের কাজ কাজ কিছুই করবে না। সব আমাদের করতে হবে।” টি বোর্ডের অফিস সরিয়ে যাওয়া নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘‘বাংলায় চায়ের বাগান বেশি বলে আমাদের কলকাতায় টি-বোর্ডের অফিস রয়েছে। সেটা অসমে নিয়ে যাচ্ছে! বাংলা কি ছাগলের তৃতীয় ছানা?”
মাদারিহাটের বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা অবশ্য বলেন, “কেন্দ্রীয় সরকার অধিগ্রহণের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছিল। মামলার জন্যে তা আটকে আছে। মুখ্যমন্ত্রী সব জেনেও মিথ্যে বলছেন।” বিজেপি সূত্রে দাবি, চা বাগানে আধিপত্য হারাচ্ছে তৃণমূল। তার উপরে অমিত শাহের এ বারের সফরের সাফল্য। এত ধাক্কা একসঙ্গে সামলাতেই এ সব বলছেন মমতা।
এ দিনই অমিত দাবি করেন, বিজেপি যেখানে ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে কৃষিতে ১০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছি, বাংলার কৃষিতে তার চেয়ে বেশি বৃদ্ধি করে দেখাও।’’ জবাবে মমতা জানান, ২০১২ সাল থেকে বাংলা পরপর কৃষি কর্মণ পুরস্কার পেয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, অপুষ্টিতে আক্রান্তের সংখ্যা বাংলার থেকে গুজরাতে অনেক বেশি। পরে রাজ্যের অর্থমন্ত্রীও তথ্য দিয়ে দেখান, জিডিপি থেকে বাংলার ঋণের বোঝা, সর্বত্র বাস্তব পরিস্থিতি কেমন।