Heavy Rain

Heavy Rain: তিস্তার জলে ডুবে গেল জাতীয় সড়ক, এখনই পর্যটকদের এলাকা ছাড়তে নিষেধ প্রশাসনের

মঙ্গলবার দুপুরে কালিম্পং থেকে গরুবাথান আসার পথে লাভা রোডের ৩ মাইলে একটি ছোট গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মেরে খাদে পড়ে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দার্জিলিং শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২১ ০৮:০২
Share:

জলমগ্ন জাতীয় সড়ক।

ভরা পর্যটনের মরসুমে এ বার ব্যাপক ভিড় হয়েছিল পাহাড়ে। এর মধ্যেই সোমবার রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত পাহাড়। বুধবারও সকাল থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছে সেখানে। বৃষ্টির জেরে বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমেছে। কালিম্পং এবং গ্যাংটকগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের কোনও কোনও জায়গা তিস্তার জলে ভেসে গিয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, টানা বৃষ্টি সত্ত্বেও মঙ্গলবার বিকেল তিনটে পর্যন্ত এই রাস্তা খোলা রাখা হয়েছিল। কিন্তু তার পরে ২৯ মাইলের কাছে ধস নেমে পথ বন্ধ হয়ে যায়। কালিম্পঙের পুলিশ সুপার মঙ্গলবার রাতে এক জরুরি বার্তায় জানিয়েছেন, বাসিন্দা বা পর্যটকদের কেউ যেন এলাকা না ছাড়েন। জেলা প্রশাসন আশঙ্কা করছে, বৃষ্টি চলতে থাকলে আরও নতুন এলাকায় ধস নামতে পারে।

Advertisement

এখন পর্যন্ত বিপর্যয়ে এক জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। মঙ্গলবার দুপুরে কালিম্পং থেকে গরুবাথান আসার পথে লাভা রোডের ৩ মাইলে একটি ছোট গাড়ির চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছে ধাক্কা মেরে খাদে পড়ে যান। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত গাড়ি চালকের নাম কৈলাস বর্মণ। দার্জিলিং জেলার ধোতরে, মানেভঞ্জন, রিমবিক, গোক, বিজনবাড়ি এলাকা থেকে ধসের খবর এসেছে। ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, পাঙ্খাবাড়ি এবং রোহিণী রোড খোলা থাকলেও একাধিক জায়গায় ছোট ছোট ধস রয়েছে। মিরিকের থরবু এবং ওকাই চা বাগান এলাকায় ধসে বেশ কিছু বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। কালিম্পঙের লাভা এবং রিশপের মাঝে পর্যটকদের গাড়ি ধসে আটকে পড়ে। পরে তা উদ্ধার করা হয়।

টানা বৃষ্টির প্রভাব পড়েছে বাগডোগরা থেকে বিমান চলাচলেও। মঙ্গলবার বাগডোগরা বিমানবন্দরে ৩৩টি বিমান আসা-যাওয়ার কথা ছিল। ১৯টি বিমানই খারাপ আবহাওয়ার জন্য বাতিল করা হয়েছে।

Advertisement

জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনে জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু ও এসপি দেবর্ষি দত্ত নিজস্ব চিত্র।

ধসের জেরে আটকে যায় আপ এবং ডাউন টয় ট্রেন। দার্জিলিংগামী ট্রেন থামানো হয় রংটং স্টেশনে। শিলিগুড়িমুখী ট্রেন কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিঙে ফিরিয়ে নেওয়া হয়।

দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলা প্রশাসনের কাছে সব চেয়ে উদ্বেগের বিষয়, আগামী দু’দিন উত্তরবঙ্গে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস। তাতে পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে এখনও আশঙ্কা রয়েই গিয়েছে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক এস পুন্নমবলম বলেন, ‘‘ছোট ছোট অনেক জায়গায় ধস রয়েছে। কিছু বাড়িঘরের ক্ষতি হয়েছে। দার্জিলিঙের দিকে রাস্তা খোলা রয়েছে।’’

মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে তিস্তা নদীর জল ভয়ানকভাবে বেড়েছে। তিস্তাবাজার থেকে ২৯ মাইলের দিকে জাতীয় সড়কের প্রায় সমান জলস্তর ওঠে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেখানে ত্রিবেণী এলাকায় জল রাস্তা দিয়ে বইতে শুরু করে। বাসিন্দাদের সতর্ক করতে পুলিশ মাইকিং শুরু করে রাতেই। ওই সব এলাকা থেকে মানুষজনকে ত্রাণ শিবিরেও নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন জানিয়েছে।

তিস্তার জলস্তর বৃদ্ধি পাওয়ায় এর জেরে জলমগ্ন হওয়ার সম্ভবনা বেড়েছে জলপাইগুড়ি জেলার বেশ কয়েকটি ব্লকে। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাটকাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের মানুষজনকে ইতিমধ্যেই ত্রাণ শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। ময়নাগুড়ি এবং ক্রান্তি ব্লকেরও নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু। ময়নাগুড়িতে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শনেও গিয়েছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন